সরোজ দত্ত, পটুয়াখালী: সাম্প্রতিক ঘূর্ণিঝর কোমেনের এর আঘাতে জেলার বিভিন্ন এলাকায় বেড়িবাধ নতুন করে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। পূর্নিমার জো’র প্রভাবে বঙ্গপসাগর সংলগ্ন রামনাবাদ নদীর ঢেউয়ের আঘাতে লালুয়া ইউনিয়ানের চারিপারা,পশরবুনিয়া ও মুন্সিপাড়া বেড়ীবাঁধ ভেঙ্গে ১৪টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে । পানি বন্দি হয়ে পরেছে কয়েক হাজার পরিবার। মানুষ আশ্রয় নিয়েছে বেরিবাধের উপর ও সাইক্লোনসেল্টারে। এদিকে ভাঙ্গন রোধে পানি উন্নয়ন বোর্ড একটি প্রসস্তাব পাঠিয়েছে উর্ধতন কতৃপক্ষের কাছে ।
পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলায় লালুয়া ইউনিয়ানের চারিপাড়া,বানাতিপাড়া ,নয়াকাটা,পশর বুনিয়া,নয়াকাটা চৌধুরিপারা,১১নং হাওলা,ধঞ্জুপাড়া,নাওয়াপাড়া,ছোট ৫নং,বড় ৫নং,মঞ্জুপাড়া,হাসনাপাড়াও সোনখোলা গ্রামে নদীর অব্যাহত ভাঙ্গনে ইতিমধ্যে এই সব গ্রাম নদীর পানিতে পস্নাবিত হয়েছে। ঘরবাড়ি, ফসলের ক্ষেত, গাছপালা সব হারিয়ে নিস্ব হয়ে যাচ্ছে এই ইউনিয়নের ১৪টি গ্রামের ৪ হাজার পরিবারের কয়েক হাজার পরিবার । অন্যদিকে এ বছর বর্ষা মৌওসুমের শুরুতে ঘুর্ণিঝর কোমেন ও পুর্নিমার জো’র প্রভাবে এ সব এলাকার মানুষ পানি বন্দি অবস্থায় আছে কিন্তু ভাঙ্গন রোধে কোন উদ্যোগ না থাকায় এসব এলাকার মানুষের ভোগান্তির আর শেষ হচ্ছে না। জোয়ারের পস্নাবনে ভেষে গেছে কৃষকের ফসলের ক্ষেত,মাছের ঘের,রবিশস্য ফসল, ডুবে গেছে বাড়ি ঘর। বন্ধ রয়েছে রান্নাবান্নার কাজ। রাতের জো’তে বেড়ী বাঁধ সম্পূর্ন ভেঙ্গে গেলে পানি বন্ধী হয়ে প্রান হাড়ানোর আতংকে রয়েছে এলাকাবাসীরা। এদিকে ভাঙ্গন কবোলিত এলকা পরিদর্শন করেছে উপজেলা নির্বাহি কর্মকর্তা ও উপজেলা চেয়ারম্যন সহ অনেকে কর্মকর্তারা।
লালূয়া ইউনিয়ান পরিষদের চেয়াম্যান মীর তারিকুজ্জামান তারা জানান, গত বছর আমাদের লালুয়ার বেরিবাধ পূর্নিমার জোয়ারে ভেঙ্গে যায়। বর্ষা মৌসুমে মানুষ ছিল পানি বন্দি অবস্থায়। বর্তমানে ১৪টি গ্রামের ১২ হাজার মানুষ রয়েছে পানি বন্দি অবস্থায়। মানুষ আশ্রয় নিয়েছে বিভিন্ন সাইক্লোনসেল্টারে। বার বার পানি উন্নয়নবোর্ডের কাছে জানালেও তারা এই বেরিবাধ মেরামত করার জন্য কোন পদক্ষেপ নিচ্ছেনা। এখন যদি পানি বন্দি মানুষের জন্য সরকারি বা বে-সরকারি কোন সহ যোগিতা না করা হয় তায়হলে তাদের না খেয়ে জীবন দিতে হবে বলে জানালেন স্থানীয় জন প্রতিনিধি।
কলাপাড়া উপজেলা নির্বাহি কর্মকর্তা জাহাঙ্গির আলম জানান, পূর্ণিমার জোয়ারের কারনে নদীর পানি মানুষের ঘরের ভিতরে ঢুকে গেছে। আমি স্থানিয় চেয়ারম্যান এর সাথে কথা বলেছি তাকে একটি তালিকা তৈরিকরতে বলেছি। আমার জেলা প্রসাশকের সাথে কথা হয়েছে তিনি পানি বন্দি মানুষের মাঝে চাল বরাদ্ধ দিবেন আমরা আশা করি চাল বরাদ্ধ পেলে পানি বন্দি ক্ষতিগ্রস্থ মানুষের হাতে তুলে দিতে পারব।
কলাপাড়া উপজেলার পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আবুল খায়ের জানান, জোয়ারের পানিতে ঢেউয়ের কারনে বেরিবাধ ভেঙ্গে যাচ্ছে। এই মুহুর্তে বর্ষার মৌসুমে কোন কিছু করা সম্ভব নয় যদি এখন বেরিবাধ করা হয় তাহলে টিকবেনা । তার পরও আমরা এটিকে স্থায়ী বাধের চিন্তা ভাবনা করছি আশা করি সামনে শুকন মৌসুমে এই বেরিবাধের কাজ করতে পারবো ।
কলাপাড়া উপজেলায় ৪০০ কিঃ মিঃ বেরিবাধ রয়েছে ৩৫ থেকে ৪০ কিঃ মিঃ বেরিবাধ বিধ্বস্থ অবস্থায় আছে এর মধ্যে লালুয়া ইউনিয়ানের চারিপাড়ারর ৩ কিঃমিঃ বেরিবাধটি মেরামত হলে এই ইউনিয়ানের ১৪টি গ্রামের ৪ হাজার পরিবারের ১৪ হাজার মানুষ প্রতিবছর এই পানি থেকে রেহাই পাবে। বাচবে ফসলের ক্ষেত,মাছের ঘের সহ সকল গ্রীহ পালিত পশু।