হুইল চেয়ারের তোতা মিয়া’র ভাগ্যে আজও জোটেনি বয়স্ক কিংবা প্রতিবন্ধী ভাতা !

মুহাম্মদ রফিকুল ইসলাম মাসুম, মোরেলগঞ্জ প্রতিনিধি:: বাগেরহাট জেলার মোরেলগঞ্জ সদরের ৭৬ বছরের বৃদ্ধ প্রতিবন্ধী তোতা মিয়া মাতুব্বরের ভাগ্যে আজো জোটেনি বয়স্ক কিংবা প্রতিবন্ধী ভাতার কার্ড। পথে-ঘাটে রাস্তায়-রাস্তায় হুইল চেয়ারে ভিক্ষা করে দিন রাত কাটে তার। ‘যেখানে রাত সেখানেই কাত’।

এভাবেই কেটে গেছে তার সাড়ে চার বছর। সমাজ সেবা অফিস থেকে শুরু করে পৌর সভার কাউন্সিলরদের কাছে ধর্ণা দিয়েও তোতা মিয়া আজো নাগাল পাননি বয়স্ক কিংবা প্রতিবন্ধী ভাতার কার্ড।

মোরেলগঞ্জ পৌর সভার ৩নং ওয়ার্ডের উত্তর সরালিয় গ্রামেরা বাসিন্দা তোতা মিয়া মাতুব্বর। পিতা মৃত. ধলু মাতুব্বর। একসময় দিনমজুরীর সাথে মাথা গোঁজার একটু ঠাই থাকলেও এখন সহায় সম্বলহীন। সাড়ে ৪ বছর ধরে মোরেলগঞ্জ বাজারের বিভিন্ন অলি-গলিতে হুইল চেয়ারে বসে ভিক্ষাবৃত্তি করে দিন কাটে তার।

তিনি ২২ বছর ধরে হার্নিয়ার রোগ বয়ে বেড়াচ্ছেন । পেট থেকে এখনো রক্ত যাচ্ছে। হার্নিয়ার জন্য ২ বার অপারেশনও করা হয়েছিল। কোন সুফল হয়নি। এ রোগের চিকিৎসার জন্য পার্শ্ববর্তী দেশে যাবার সময় পথিমধ্যে পড়ে গিয়ে পঙ্গুত্বের শিকার হন তিনি। আর এর চিকিৎসার জন্য সহায় সম্বল সবই হারাতে হয়েছে। চলার জন্য দুটি হুইল চেয়ারও তাকে ঢাকার এক দানশীল ব্যক্তি প্রদান করেছিলো তাও শেষ। এখন অবলম্বন রয়েছে নড়বড়ে একটি হুইল চেয়ার।

তোতা মিয়া জানান, তার স্ত্রী দু’মেয়ে রয়েছে। তারা যে যার মত থাকছে। স্ত্রী তাকে ছেড়ে মেয়েদের গলগ্রহ হয়ে পড়ে আছে। আক্ষেপ নিয়ে তিনি আরো বলেন, এ পর্যন্ত কোনদিন সরকারিভাবে এক ছটাক চাল,গমও পাননি। তোতা মিয়া সারাদিন হুইল চেয়ার ঘুরে বেড়ান। সন্ধ্যা হলে উপজেলা চত্বরের কোন সরকারি দপ্তরের বারান্দায় অথবা পরিত্যক্ত ভবনের বারান্দায় রাত কাটান। সকাল হলে আবারো শুরু হয় হুইল চেয়ারে পথচলা।

রোগ শোকে জর্জরিত তোতা মিয়ার আকুতি কত দিন আর বাঁচবো। তার আগে যদি একটি বয়স্ক ভাতা কিংবা প্রতিবন্ধী ভাতার কার্ড পেতাম’। বর্তমান সরকার প্রকৃত প্রতিবন্ধী কিংবা বয়স্কদের জন্য অত্যন্ত আন্তরিক থাকলেও তোতা মিয়া সেই সহানুভূতি থেকে বঞ্চিত।

Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here