চট্টগ্রামের হাটাহাজারীতে নির্মিত ডুয়েল ফুয়েল ১০০ মেগাওয়াট পিকিং প্লান্টটি আগামী ডিসেম্বর মাসের মাঝামঝিতে পুরোদমে উৎপাদনে যাচ্ছে। এতে করে জাতীয় গ্রীডে যোগ হতে হচ্ছে ১০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ। এই লক্ষ্যে ইতিমধ্যে বিদ্যুৎ প্লান্টটির প্রায় ৯০ ভাগ কাজ শেষ হয়ে প্রাথমিকভাবে পরীক্ষামূলক উৎপাদন শুরু হয়েছে। তবে ইঞ্জিল ও ওয়াগন সংকটের কারণে রেলওয়ে কতৃপক্ষ ফার্নেস ওয়েল পরিমাণ মত সরবরাহ দিতে না পারায় প্লান্টটির পুরোপুরি উৎপাদনে যেতে পারছে না বলে উৎপাদন কাজ বিঘ্নিত হচ্ছে। আর এই রকমের সমস্যা তথা জ্বালানী সংকটের কথা চিন্তায় রেখে প্রকল্প পরিকল্পাকারীরা প্লান্টটিতে ডুয়েল ফুয়েল সিষ্টেম রাখা হয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট জানিয়েছেন।

বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি) সূত্রে জানা যায়, বিদ্যুৎ প্লান্টটি নির্মাণের জন্য গত বছরের ২৬ এপ্রিল চীনের গুয়াংডং পাওয়ার ইঞ্জিনিয়ারিং কর্পোরেশন (জিপিইসি) নামে একটি প্রতিষ্টানের সঙ্গে বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি) চুক্তি হয়। বৈদ্যুতিক সমস্যা হতে পরিত্রাণ তথা বিদ্যুতের চাহিদা মেটাতে সরকারের সর্ম্পূণ নিজস্ব অর্থায়নে প্রায় ৯০৮ কোটি টাকা ব্যায়ে গত বছর নবনির্মিত এই প্লান্টটি স্থাপনের কাজ হাতে নেয়। ইতিমধ্যে এই প্লান্টটির সিংহভাগ কাজ শেষ হয়েছে। তবে সিংহভাগ কাজ শেষ হওয়ার পরও বিদ্যুৎ উৎপাদনে যেতে পারছে না প্লানটিতে পরিমান মত ফার্নেস ওয়েল সরবরাহ না থাকার কারণে।

পিডিবি সূত্রে আরো জানা যায়, এই পাওয়ার প্লান্টে ৮.৯ মেগাওয়াট ক্ষমতা সম্পন্ন ১১ ইউনিট রয়েছে। এ ১১ টি ইউনিট প্রায় ৯৮.১৬ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে পারে। আর এই জন্য প্রয়োজন ২৫০ মেট্রিক টন  ফার্নেস ওয়েল বা ৩০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস। কিন্তু পরিমাণ মত ফার্নেস ওয়েল সময় মত সরবরাহ না থাকার কারণে উৎপাদনে যেতে পারছে না এই পাওয়ার প্লান্টটি। তবে পিকিং প্লান্ট পিডিবি কতৃপক্ষ গত একমাস আগে পরিমান মত তেল সরবরাহের জন্য রেলওয়ে কতৃপক্ষ তাগিদ দিলেও তারা ইঞ্জিল ও ওয়াগন সংকটের কারণ দেখিয়ে চাহিদা মত ফার্নেস ওয়েল সরবরাহ দিতে পারছে না।

হাটাহাজারীতে গ্যাসের সরবরাহের জন্য এখনও পর্যন্ত কোন প্রকার সুরাহা হয়নি বলে এই বিদ্যুৎ প্লান্টটি সম্পূর্ণ ফানের্স ওয়েলের উপর নির্ভর করে। চলতি বছরের অক্টোবর মাসের শেষ সাপ্তহে প্লান্টটিতে পরীক্ষামূলক উৎপাদন শুরু হলেও, তেল সংকটের কারণে তা সম্ভব হয়নি। তবে কতৃপক্ষ জানিয়েছে যে, যদি এই প্লান্টটিতে ১০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উপাদন করা হয় তাহলে প্রায় ৩০ মেট্রিক টন ঘনফুট গ্যাস প্রয়োজন হবে। অবশ্য এই নিয়ে পাশ্ববর্তী উপজেলা ফটিকছড়িতে পাওয়া সিমুতাং গ্যাস ফিল্ডের কর্মকর্তাদের সাথে বিভিন্ন সময় আলাপ আলোচনা হলেও তারা ১৫ মেট্রিক টন ঘনফুটের বেশি সরবরাহ দিতে পারবে না বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছে। এই কারণে ডুয়েল সিষ্টেম থাকা শর্তেও এর ব্যবহার করা সম্ভব হচ্ছে না। তবে প্লান্টটিতে গ্যাস ব্যবহার করা গেলে সরকারের প্রচুর অর্থ সাশ্রয় হবে বলে বিঞ্জ মহল মনে করেন।

এদিকে হাটাহাজারীতে নির্মিত ডুয়েল ফুয়েল ১০০ মেগাওয়াট পিকিং প্লান্টটি প্রকল্প পরিচালক ইঞ্জিনিয়ার মো: শফিকুল ইসলাম এর কাছে প্লান্টটির সর্বশেষ অবস্থা সর্ম্পকে জানকে চাইলে তিনি এই প্রতিবেদককে জানান, এই বিদ্যুৎ প্লান্টটির প্রায় ৯০ ভাগ কাজ শেষ হয়ে প্রাথমিকভাবে পরীক্ষামূলক উৎপাদন শুরু হয়েছে। কিন্তু ইঞ্জিল ও ওয়াগন সংকটের কারণে রেলওয়ে কতৃপক্ষ ফার্নেস ওয়েল পরিমাণ মত সরবরাহ দিতে পারছে না। আর তারা যদি অনতিবিলম্বে আমাদের চাহিদা মত ফার্নেস ওয়েল সরবরাহ দিতে পারে পারে তাহলে আগামী মাসের মাঝামাঝিতে আমরা পুরোদমে বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে সক্ষম হব।

ইউনাইটেড নিউজ ২৪ ডট কম/আবু তালেব/হাটহজারী

Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here