হরতাল বানচালে জনমনে আতঙ্ক সৃষ্টির জন্য সরকার সারা দেশে দলীয় নেতা-কর্মীদের গ্রেপ্তার করছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির আহমেদ রিজভী।

শনিবার সন্ধ্যায় বিএনপির নয়াপল্টন কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ অভিযোগ করেন।

রোববার বিএনপির সকাল-সন্ধ্যা হরতাল সামনে রেখে দলীয় নেতা-কর্মীদের গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে এই সংবাদ সম্মেলন ডাকা হয়।

রিজভী বলেন, হরতাল সমর্থকদের দমনে সরকার দলীয় লোকদের পুলিশি পোশাক পরিয়ে মাঠে নামানো হবে বলে শোনা যাচ্ছে। তবে কোনো বাঁধাতেই জনগণের স্বতঃস্ফূর্ত এই হরতাল পণ্ড হবে না।

তিনি বলেন, ঢাকা ভাগ করে সরকার সংবিধান লঙ্ঘন করেছে। অন্যায়ভাবে ঢাকাবাসীর আবেগ-অনুভূতিতে আঘাত করেছে। তাই আগামীকালের হরতাল ঢাকাকে দুই ভাগ করার ষড়যন্ত্র বাস্তবায়ন রুখে দেয়ার জন্য।

তিনি আরো বলেন, হরতালের প্রচারে জনগণের সাড়া প্রমাণ করে, সকল বাধা উপেক্ষা করে হরতাল সফল হবে।

বিএনপির এই যুগ্ম মহাসচিব বলেন, ইতিহাস সাক্ষী দেয়, সরকারের পায়ের নিচের মাটি চলে গেলে তখনই সরকার ফ্যাসিবাদী, খুনির মত আচরণ শুরু করে। সবক্ষেত্রে ব্যর্থ হয়ে বর্তমান সরকারও বিরোধী দলকে দমন করতে ফ্যাসিবাদী কার্যক্রম শুরু করেছে।

তিনি বলেন, অত্যাচার করে জনগণকে ন্যায্য দাবি আদায় থেকে বিরত রাখা যাবে না। এক সময় স্বৈরশাসকের পিঠ দেয়ালে মিশে যাবে আর জনগণের বিজয় হবে।

রিজভী বলেন, শুক্রবার রাত থেকে প্রশাসন দলীয় ক্যাডারের মত বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীদের বাসায় বাসায় তল্লাশি চালিয়েছে এবং তাদের পরিবারের লোকদের সাথে অসৌজন্যমূলক আচরণ করছে।

তিনি দাবি করেন, এখন পর্যন্ত রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা থেকে বিএনপি, যুবদল, ছাত্রদল, স্বেচ্ছাসেবক দল ও শ্রমিক দলের ৮৫ জন নেতা-কর্মীকে আটক করেছে।

তিনি সরকারের এ অন্যায় আচরণের তীব্র নিন্দা ও গ্রেপ্তারকৃতদের মুক্তি দাবি করেন।

রিজভী জানান, শনিবার দুপুরে মিরপুরে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার রফিকুল ইসলাম মিয়ার নেতৃত্বে হরতালের সমর্থনে লিফলেট বিতরণকালে পুলিশ নেতা-কর্মীদের ওপর লাঠিচার্জ করে।

এ সময় পুলিশ তাকে অশালীন ভাষায় গালিগালাজ করে। সেখান থেকে ব্যারিস্টার রফিকুল ইসলাম মিয়াসহ কয়েকজন আটক করে। পরে তাদের ছেড়ে দেয়।

এছাড়া দুপুরে হরতালের সমর্থনে স্বেচ্ছাসেবক দলের লিফলেট বিতরণকালে বিজয় নগর এলাকায় পুলিশ নেতা-কর্মীদের ওপর লাঠিচার্জ করে এবং সেখান থেকেও কয়েকজন নেতা-কর্মীকে আটক করে। এ সময় পুলিশের লাঠিচার্জে দলের ৫৫ জন নেতা-কর্মী আহত হন।

হরতালে বিশৃঙ্খলা করলে কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না- আইন প্রতিমন্ত্রী কামরুল ইসলামের মন্তব্যের জবাবে রিজভী বলেন, ‘আপনাদেরকে জনগণ ছাড় দেবে কিনা তা একটু ভেবে দেখুন। কারণ ক্ষমতা কারো চিরস্থায়ী নয়।’

পরে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সরকারের কোনো অবরোধ-অত্যাচার আগামীকালকের হরতাল রুখতে পারবে না।

সংবাদ সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন, ঢাকা মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব আব্দুস সালাম, প্রশিক্ষণবিষয়ক সম্পাদক কবির মুরাদ, নির্বাহী কমিটির সদস্য মুস্তাফিজুর রহমান বাবুল, আসদুজ্জামান রিপন, ছাত্রদল সভাপতি সুলতান সালাহউদ্দিন টুকু প্রমুখ।

ইউনাইটেড নিউজ ২৪ ডট কম/ঢাকা

Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here