সুলতান মাহমুদ আরিফ :: আমাদের দেশে প্রতিনিয়ত সড়ক দুর্ঘটনা ঘটছে। এই সড়ক দুর্ঘটনার পিছনে সবচেয়ে বড় কারণ চালকের মাদক সেবন। বেশির চালক ড্রাইভ করার পূর্বে মাদক সেবনে অভ্যস্ত। যার শেষ পরিণতি সড়ক দুর্ঘটনা ।
সাম্প্রতিক সড়ক দুর্ঘটনার কারণ খতিয়ে দেখলে বেশির ভাগ নেশায আসক্ত চালক পাওয়া যায়। যাদের হিতাহিত জ্ঞান না থাকায় যত্রতত্র গাড়ী চালাচ্ছে ।চালকের সামান্য নেশার স্বাধ গ্রহণে জীবন চলে যাচ্ছে সাধারণ মানুষের । প্রতিদিনই সড়ক পথে দুর্ঘটনার মাঝে দিনাতিপাত করছে বাংলাদেশের জনগন।
সড়ক দুর্ঘটনায় মৃত্যুতে বেশির ভাগ হচ্ছেন গরিব খেটে খাওয়া মানুষ। জীবিকার তাগিদে এক স্থান থেকে অন্যস্থানে আসা-যাওয়ার মাধ্যম হচ্ছে তাদের বাস কিংবা সিএনজি আর লেগুনার মত স্বস্তা যানবাহন। আর এই স্বস্তা যানবাহন গুলোতে তেমন কোন নামী-দামী ব্যক্তিদের আরোহণ চোখে পড়ে না। আর তাই তো মনে হয় এটা নিয়ে সরকার কিংবা প্রশাসনের তেমন গাত্রদাহ হচ্ছে না।
সাম্প্রতি জাতিসংঘের ৭৩ তম সাধারণ অধিবেশনে যোগ দিতে শুক্রবার বিমান বাংলাদেশে এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটে করে লন্ডন যান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।আর প্রতিটি ফ্লাইট ছাড়ার নির্ধারিত সময়ের আগেই পাইলট ও ক্রুরা মাদক গ্রহণ করেছেন কিনা, বিষয়টি নিশ্চিত করার জন্য ডোপ টেস্ট করা হয়। প্রধানমন্ত্রীর এবারের লন্ডন সফরের কেবিন ক্রু মাসুদা মুফতি মাদক সেবন করেও বিষয়টি গোপন রেখে ফ্লাইটে আসলে তার ডোপ টেস্টে মাদক সেবনের প্রমাণ পাওয়া যায়। এই কারণে ঐ ফ্লাইট থেকে মাসুদা মুফতিকে অব্যাহতি দেন। এমনকি যদি কোন পাইলট কিংবা ক্রু এর মাদক সেবনের প্রমাণ পাওয়া যায় তাকে ৯০ কার্যের জন্য ডিউটি থেকে অব্যাহতির বিধান ও রয়েছে।
এই ব্যবস্থাপনার সাথে আমি সম্পূর্ণ একমত পোষণ করি। জীবনের নিরাপত্তার জন্য এহেন সচেতন দৃষ্টিভঙ্গি স্থাপন করা অতীব জরুরী পদক্ষেপ । তবে এটা শুধু বিমান পাইলট এবং ক্রুদের জন্য সীমাবদ্ধ করা উচিত নয়। আকাশ পথে যেমন উচ্চবিলাসী লোকজন যাতায়াত করে; তেমনি সড়ক পথেও বেশির ভাগ গরিব লোকগুলো যাতায়াত করে। তাদের একমাত্র বাহন চার চাকার বাস কিংবা লেগুনার মত সাধারণ যানবাহন।
জীবনের মুল্য সবার একই। মর্যাদার ক্ষেত্রে পার্থক্য নির্ণয় করা যদিও সম্ভব। তবে জীবনের ক্ষেত্রে পার্থক্য সুচিত করা আদৌ সম্ভবপর মনে হচ্ছে না। উচ্চবিলাসী থেকে নিম্নবিলাসী পর্যন্ত সবাই সবার জীবনের নিরাপত্তা চায়। সরকার এবং প্রসাশনের দৃষ্টিতে এই বিষয়টি গুরুত্বের জায়গায় আনার জন্য একান্ত অনুরোধ।
বিমান ফাইলট কিংবা ক্রু এর জন্য যেমন চেক পোস্ট এর ব্যবস্থাপনা রয়েছে। তেমনি প্রতিটি বাস কাউন্টারে ও চালকের মাদক সেবনের ব্যাপারটাও নিশ্চিত হওয়ার বিষয়ে কার্যকর ব্যবস্থার পর রাস্তায় নামতে দেওয়া উচিত। আমার দৃঢ় বিশ্বাস এরকম যথাযথ আইন প্রয়োগে সড়ক দুর্ঘটনার হাত থেকে যাত্রীরা রক্ষা পেতে পারে। সবার জীবনের নিরাপত্তা হোক সরকার এবং প্রসাশনের একান্ত কাম্য।
লেখকঃ অনার্স ৩য় বর্ষ, রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগ, সরকারি তিতুমীর কলেজ, ঢাকা।