স্মরণ সভায় পরাণ রহমানকে রাষ্ট্রিয় স্বীকৃতি প্রদানের দাবী

স্টাফ রিপোর্টার :: মুক্তিযুদ্ধের পরপরই শামসুন্নাহার রহমান পরাণ ঘাসফুল প্রতিষ্ঠা করেন এবং দেশ পুন:গঠনে প্রশংসনীয় ভুমিকা রাখেন। পরবর্তীতে বীরাঙ্গনাদের মুক্তিযোদ্ধা স্বীকৃতি অর্জনে তিনি ব্যাপক প্রচারণার পাশাপাশি নানামুখি আন্দোলন চালিয়ে যান। নারী অধিকার ও তাদের অর্থনৈতিক উন্নয়নে তিনি চট্টগ্রামের অগ্রদুত ছিলেন। পরাণ রহমান চট্টগ্রামে কর্মরত উন্নয়ন সংস্থাসমুহের জন্য একজন দায়িত্ববান মমতাময়ী অভিভাবক ছিলেন। পরাণ রহমানের কর্ম-জীবন আমাদের জন্য পাথেয় হয়ে থাকবে। এ মহিয়ষী নারীকে রাষ্ট্রিয়ভাবে স্বীকৃতি দেয়া প্রয়োজন।

সোমবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) ঘাসফুল-প্রতিষ্ঠাতা শামসুন্নাহার রহমান পরাণ এর ৪র্থ মৃত্যুবার্ষিকীতে তাঁর ষ্মরণে আয়োজিত ষ্মরণ সভায় বক্তারা একথা বলেন।

ষ্মরণসভায় উপস্থিত চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. ইফতেখার উদ্দিন চৌধুরী বলেন, পরাণ রহমান একটি প্রতিষ্ঠান, তিনি জীবদ্দশায় মানবসেবায় নিজেকে নিয়োজিত রেখেছিলেন ও সমাজসেবায় নিজেকে উৎসর্গ করেছিলেন।

স্মরণ সভার আলোচক একুশে পদক প্রাপ্ত কবি ও সংবাদিক আবুল মোমেন বলেন, পরাণ রহমান একজন মানবদরদী হিসেবে সমাজের দলিত ও পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠির উন্নয়ন ও অধিকার প্রতিষ্ঠায় কাজ করে গেছেন। তিনি নিজেকে মানুষের মধ্যে ছড়িয়ে দিয়েছিলেন। উন্নয়নকর্মী পরাণ রহমান সারাজীবন মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়নে কাজ করেছেন, ঘাসফুল-প্রতিষ্ঠাতা পরাণ রহমানকে রাষ্ট্রিয়ভাবে স্বীকৃতি পাওয়ার অধিকার রাখে।

ঘাসফুল নির্বাহী পরিষদের সদস্য ও গ্রামীণ টেলিকম ট্রাষ্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মরহুমার জৈষ্ঠকন্যা পারভীন মাহমুদ এফসিএ

অনুষ্ঠানে ঘাসফুল নির্বাহী পরিষদের সদস্য ও গ্রামীণ টেলিকম ট্রাষ্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মরহুমার জৈষ্ঠকন্যা পারভীন মাহমুদ এফসিএ পরিবারের পক্ষ থেকে বক্তব্য রাখতে গিয়ে বলেন, পরাণ রহমান সমাজ ও উন্নয়নে নিজের তাগিদে কাজ করেছেন। তিনি একজন মানবদরদী মহীয়সী নারী।

ঘাসফুল নির্বাহী পরিষদের চেয়ারম্যান ড. মনজুর-উল-আমিনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত ষ্মরণসভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. ইফতেখার উদ্দিন চৌধুরী।

আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশিষ্ট কবি ও সাংবাদিক আবুল মোমেন, জেলা সমাজসেবা অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মোহাম্মদ শহীদুল ইসলাম, ইলমা এর প্রধান নির্বাহী জেসমিন সুলতানা পারু।

ঘাসফুল নির্বাহী পরিষদের সদস্য ও গ্রামীণ টেলিকম ট্রাষ্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মরহুমার জৈষ্ঠকন্যা পারভীন মাহমুদ এফসিএস্বাগত বক্তব্য রাখেন সংস্থার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আফতাবুর রহমান জাফরী। পরাণ রহমানের সংক্ষিপ্ত জীবন বৃত্তান্ত পাঠ করেন মরহুমার নাতনী ও ঘাসফুল নির্বাহী পরিষদ কোষাধ্যক্ষ জেরিন মাহমুদ হোসেন।

ঘাসফুলের প্রাক্তন সহকর্মীদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের যোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সহযোগি অধ্যাপক শাহাব উদ্দিন নিপু চিটাগং ইন্ডিপেন্ডেন্ট ইউনিভার্সিটি (সিআইইউ) এর ভারপ্রাপ্ত রেজিষ্টার আনজুমান বানু লিমা।

এ সময় আরো উপস্থিত ছিলেন ঘাসফুল নির্বাহী পরিষদ সাধারণ সম্পাদক শহানা মুহিত, ঘাসফুল নির্বাহী পরিষদ যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক, কবিতা বড়ুয়া, ঘাসফুল নির্বাহী পরিষদ সদস্য প্রফেসর ড. জয়নাব বেগম, ঘাসফুল সাধারণ পরিষদ সদস্য জাহানারা বেগম ও পরাণ রহমানের সহপাঠী ও ঘাসফুল উপদেষ্ঠা মন্ডলীর সদস্য রওশন আরা মোজাফফর বুলবুলসহ সরকারী বেসরকারী উন্নয়ন সংস্থর প্রধান প্রতিনিধি বৃন্দ প্রমুখ।

ষ্মরণসভায় গত ১৫ ফেব্রুয়ারী পরাণ রহমান ষ্মরণে অনুষ্ঠিত চিত্রাংকন প্রতিযোগিতায় ক ও খ’ দুইটি গ্রুপে ১ম. ২য় ও ৩য় স্থান অধিকারীদের পুরস্কার প্রদান করা হয়। ‘ক বিভাগে’ পুরস্কারপ্রাপ্তরা হলেন, ১ম পুরস্কার সানি টিউটারিয়ালের ছাত্র আয়ান ইয়ারা, ২য় পুরস্কার সেন্ট প্লাসিডস স্কুলের ছাত্র পবন রায় এবং তৃতীয় পুরস্কার সেন্ট জেভিয়ার স্কুল এর ছাত্রী সিদরাতুল মুনতাহা।

“খ বিভাগে’ প্রথম পুরস্কার সিলভার বেলস কিন্ডারগার্ডেন ও গার্লস হাই স্কুলের ছাত্রী লুৎফুন নাহার রাণী, ২য় পুরস্কার খাজা আজমেরী স্কুলের ছাত্রী সুমাইয়া শিমু এবং ৩য় পুরস্কার পেয়েছে সেন্ট স্কলাসটিকা স্কুলের ছাত্রী আরাত্রিকা দেবনাথ।

Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here