এলজিআরডি মন্ত্রীস্টাফ রিপোর্টার :: স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় (এলজিআরডি) মন্ত্রী খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেছেন, স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানসমূহকে বাজেটে ১৫ ভাগ স্যানিটেশনে ব্যয় করতে হবে। উন্নত জাতি হিসেবে আত্মপ্রকাশের জন্য স্বাস্থ্যসম্মত স্যানিটেশনের কোন বিকল্প নেই।

মন্ত্রী রবিবার জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর মিলনায়তনে “জাতীয় স্যানিটেশন মাস অক্টোবর – ২০১৭” এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন।

স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব আবদুল মালেক-এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন এলজিআরডি প্রতিমন্ত্রী মো. মসিউর রহমান রাঙ্গাঁ, এমপি এবং ইউনিসেফ-এর বাংলাদেশ প্রতিনিধি মি. এডওয়ার্ড বিগবেডার।

খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, বাংলাদেশে একসময় শতকরা ৯০ ভাগ লোক উন্মুক্ত স্থানে মলত্যাগ করতো। তখন কলেরা, ডায়রিয়া সহ নানা ধরণের রোগ মহামারী আকারে দেখা দিত। সরকারের আন্তরিক প্রচেষ্টায় উন্মুক্ত স্থানে মলত্যাগ এখন শতকরা ১ ভাগেরও কম। ২০৩০ সালের মধ্যে আমরা শতভাগ স্বাস্থ্যকর স্যানিটেশন নিশ্চিত করবো।

তিনি বলেন, “পয়ঃবর্জ্যরে সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা, উন্নত স্যানিটেশনের সম্ভাবনা” এ প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে যথাযথভাবে এ কর্মসূচি বাস্তবায়নের মাধ্যমে স্যানিটেশনের লক্ষ্য অর্জনের গতি আরো বেগবান হবে।

এলজিআরডি মন্ত্রীতিনি বলেন, অনুন্নত দেশ হিসেবে একসময় আমাদের গড় আয়ু ৪৫ বছরের নিচে ছিল কিন্তু স্বাস্থ্যসম্মত স্যানিটেশন ব্যবস্থার ফলে এখন তা আমাদের গড় আয়ুতেও ইতিবাচক ভূমিকা রেখেছে। ২০২১ সালের মধ্যে শতভাগ পাকা স্যানিটারি নিশ্চিতকরণে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর কাজ করে যাচ্ছে।

মন্ত্রী বলেন, মানবসৃষ্ট বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় স্থানীয় সরকার বিভাগ ইতোমধ্যে কয়েকটি উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। আমরা উন্নত বিশে^র আদলে বর্জ্য ব্যবস্থাপনার জন্য কাজ করছি। অচিরেই সিটি কর্পোরেশন ও পৌরসভাসমূহে আধুনিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনা চালু হবে। শতভাগ স্বাস্থ্যসম্মত স্যানিটেশন নিশ্চিত করতে পয়ঃবর্জ্য ব্যবস্থাপনা আমাদের সামনে একটি বড় চ্যালেঞ্জ।

তিনি বলেন, স্বাস্থ্যসম্মত স্যানিটেশনের পাশাপাশি বিশুদ্ধ পানি সরবরাহেও বাংলাদেশ বিশ্বে অনুকরণীয়। আমাদের পানির লেভেল গড়ে প্রায় ১০ মিটার নেমে গেছে। ভূ-গর্ভস্থ পানির উপর চাপ না কমালে দেশ অচিরেই মরুভূমি হয়ে যাবে। তাই ২০৩০ সালের মধ্যে শতকরা ৮০ ভাগ ভূ-পৃষ্ঠের উপরিভাগের পানি ব্যবহার নিশ্চিত করা হবে।

মন্ত্রী বলেন, স্যানিটেশন কার্যক্রমকে বেগবান করার জন্য জেলা, উপজেলা, ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড পর্যায় পর্যন্ত গঠিত ওয়াটসান কমিটি কার্যকর রয়েছে। এসকল কমিটিতে স্থানীয় সরকার প্রতিনিধি ছাড়াও এনজিও, বিভিন্ন সংস্থা, গণ্যমান্য ব্যক্তিত্বসহ সমাজের সকল স্তরের মানুষের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা হয়েছে।

দেশের দুর্গম এলাকায় স্যানিটেশন ব্যবস্থা উন্নীতকরণ ও লাগসই প্রযুক্তির স্যানিটেশন ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। তিনি শতভাগ টেকসই স্যানিটেশন নিশ্চিতে জনসচেতনতা ও জনমত তৈরিতে সকলকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।

পরে মন্ত্রী “জাতীয় স্যানিটেশন মাস অক্টোবর – ২০১৭” এর শুভ উদ্বোধন ঘোষণা করেন।

Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here