Nokhaliমুজাহিদুল ইসলাম সোহেল, নোয়াখালী প্রতিনিধি:: নোয়াখালীর সুবর্ণচর উপজেলায় ২ নং চরবাটা ইউনিয়নের চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে বিচারপ্রার্থী এক নারীকে রাতভর ইউনিয়ন পরিষদে আটক রেখে ধর্ষণ ও মারধর করার অভিযোগে চর জব্বর থানায় চেয়ারম্যানসহ ২ জনকে আসামি করে নারী নির্যাতন আইনে মামলা দায়ের করা হয়েছে।

বুধবার রাত ১১টার পর থেকে এ তান্ডব শুরু করে ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোজাম্মেল হোসেন ও তার সহযোগি বদিউল প্রকাশ আফছার ও নবী উল্যাহ।

ধর্ষিতা নারী (২৫) একই ইউনিয়নের মধ্য চরবাটা গ্রামের মৃত আলী আহমদের মেয়ে। ওই নারী অভিযোগ করে বলেন, প্রতারণার বিচার চাইতে এসে উল্টো চেয়ারম্যান দ্বারা ধর্ষিত হলাম।

এ ঘটনা ফাঁস করার কথা বলায় তাকে রাতভর ইউপি পরিষদের একটি কক্ষে আটক রেখে লাঠি দিয়ে বেদম মারধর করেছে অভিযুক্তরা। যার ফলে তার পুরো শরীরে রক্তাক্ত জখম হয়েছে। নির্যাতনের পর শারীরিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়লে আজ সকাল ৯টার দিকে তাকে ছেড়ে দেয়া হয়।

পরে, তিনি ও তার পরিবারের সদস্যরা বিষয়টি স্থানীয় সংবাদকর্মী ও গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গকে অবহিত করলে তারা আইনের আশ্রয় নিতে বলেন। এক পর্যায়ে আজ দুপুরের দিকে চরজব্বার থানায় অভিযোগ করতে গেলে প্রথমে পুলিশ মামলা নিতে রাজি হয়নি। পরে বিভিন্ন গণমাধ্যম কর্মী ও গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গের চাপের মুখে পুলিশ অভিযোগ গ্রহণ করেন।

তিনি আরো জানান, তার একটি পুত্র সন্তান রয়েছে। স্বামী নিয়মিত ভরণ-পোষণ দেয় না এবং কোনো প্রকার যোগাযোগও করে না। এরই মধ্যে হাতিয়া উপজেলার নঙ্গলিয়া গ্রামের ভূমিহীন বাজার সংলগ্ন রবিউল হোসেন নামে এক ছেলের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে তার। শুরুতে ছেলেটি নিজেকে অবিবাহিত বললেও সম্প্রতি ছেলেটি বিবাহিত বলে জানতে পারেন তিনি। রবিউল হোসেন বিবাহিত জানার পর, তার সঙ্গে কোনো সম্পর্ক রাখতেও রাজি হয়নি। বেশ কিছুদিন যোগাযোগ না করায় ছেলেটি বুধবার রাতে তাদের বাড়িতে আসলে বিষয়টি স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানকে অবহিত করা হয়।

পরে রাত ১০টা থেকে সাড়ে ১০টার মধ্যে চেয়ারম্যান গ্রাম পুলিশ পাঠিয়ে ওই ছেলে, অভিযোগকারী নারী, তার তিন ভাই ও বোনকে পরিষদে ডেকে আনে। একপর্যায়ে তার অভিযোগ শোনার পর চেয়ারম্যান উল্টো তাকে অকথ্য ভাষায় গালমন্দ করেন এবং ছেলেকেও মারধর করেন।

পরে অন্য সকলকে বের করে দিয়ে তাকে একটি কক্ষে আটক রেখে জোর করে বিবস্ত্র করে ধর্ষণ করে। বিষয়টি বাহিরে গিয়ে আত্মীয়-স্বজনসহ সকলকে জানাবে বলায় আমাকে বিবস্ত্র অবস্থায় লাঠি দিয়ে বেদম মারধর করে।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে চেয়ারম্যান মোজ্জাম্মেল অস্বীকার করে বলেন, আমাকে এলাকায় কোণঠাসা করার জন্য অপপ্রচার চালানো হচ্ছে এবং থানায় মিথ্যা অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।

চরজব্বর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (তদন্ত) ইকবাল হোসেন বলেন, আজ দুপুরের পরে চেয়ারম্যানসহ ২ জনের বিরুদ্ধে থানায় ধর্ষণের অভিযোগে লিপি বেগম নামে এক নারী লিখিত অভিযোগ দিয়েছে।

অভিযোগটি নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা হিসেবে রেকর্ড করা হয়েছে। তিনি আরো বলেন, ডাক্তারি পরীক্ষার পর ধর্ষণের বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া যাবে। তবে, ওই নারীর শরীরের বিভিন্ন অংশে আঘাতের বেশকিছু চিহ্ন পাওয়া গেছে।

Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here