পাগলা-জগন্নাথপুর সড়ক সুনামগঞ্জ জেলা শহরে যোগাযোগের  জন্য জগন্নাথপুরবাসীর একমাত্র সড়ক। এই সড়কে ২১ কিলোমিটারের মধ্যে রয়েছে ৯ টি ঝুঁকিপূর্ণ সেতু। এসব সেতুর আবার অধিকাংশই চলছে জোড়াতালি দিয়ে। ফলে সড়কটি দিলে চলাচলকারী উপজেলার প্রায় চার লাখ মানুষ জীবনের ঝুঁকি নিয়ে জেলা শহরে যাতায়ত করে থাকেন। কিন’ এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করছেন।

উপজেলাবাসী জানান, তাদের জেলা শহরে যোগাযোগের একমাত্র অবলম্বন এ সড়কটি।  সড়কটি  ১৯৯৯ সালে তৎকালীন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মরহুম আব্দুস সামাদ আজাদের প্রচেষ্টায় পাগলা-জগন্নাথপুর, রানীগঞ্জ-আউশাকান্দি আঞ্চলিক মহাসড়কে রপান-রিত করা হয়। ১৯৯৯ থেকে ২০০১ সাল পর্যন- মহাসড়কটি বাস-বায়ন করতে শতকোটি টাকা ব্যয়ে সড়কের ৮০ শতাংশ কাজ সম্পন্ন হয়। পরবর্তী সময়ে চারদলীয় জোট সরকার ক্ষমতায় এলে মহাসড়কের কাজ বন্ধ হয়ে যায়। বর্তমান সরকার ক্ষমতায় এসে আবার সড়কটির কাজ শুরু করলেও কোন সফলতা দেখাতে পারেনি।

এলাকাবাসী ও সংশ্লিষ্ট সুত্র জানায়, সড়কটির জগন্নাথপুর থেকে পাগলা পর্যন- ২১ কিলোমিটার অংশে ৯ টি ঝঁকিপূর্ণ সেতু রয়েছে। সেতুগুলো হলো মজিদপুর বেইলি ব্রিজ,খাশিলা বেইলি ব্রিজ,কলকলিয়া বেইলি ব্রিজ,ভমভমি বাজার ব্রিজ,দাঁড়াখাইয়ের দুটি বেইলি ব্রিজ,দরগাপাশা সেতু, আক্তাপাড়ার দুটি সেতু।

সরজমিনে দেখা গেছে , জগন্নাথপুর থেকে পাগলা পর্যন- যে ৯টি সেতু রয়েছে তার মধ্যে দাঁড়াখাই বেইলি ব্রিজটির দুই পাশে জোড়াতালি দিয়ে আরও দুটি ব্রিজ স’াপন করা হয়েছে। অনুরূপভাবে ভমভমি ব্রিজের অ্যাপ্র্যোচ ভেঙে পড়ায় সেতুর দুই পাশে জোড়াতালি দিয়ে কোন রকমে কাজ চালানো হচ্ছে। এ ছাড়া কলকলিয়া,আক্তাপাড়া,দাঁড়াখাই সেতুর দু’দিকে লোহার পাটাতনগুলো ক্ষয়ে ক্ষয়ে নড়বড়ে হয়ে গেছে। লোহার পাটাতনগুলোর ওপর জোড়া দেওয়া হয়েছে।

সেতুর সামনে সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর “ঝুকিপূর্ণ সেতু” সর্তকতামূলক সাইনবোর্ড টানিয়ে দায় সেরেছে। সাইনবোর্ডে আট টনের অতিরিক্ত মাল পরিবহন না করতে  যানবাহন চলকদের সতর্ক করা হয়েছে। কিন’ বিকল্প ও বাধ্যবাধকতা না থাকায় এসব সর্তকতা না মেনেই চালকেরা ঝুঁকি নিয়ে মালামাল পরিবহন করছেন।

সুনামগঞ্জের ট্রাক ড্রাইভার সিরাজ মিয়া জানান,জগন্নাথপুর-পাগলা সড়কের অবস’া অত্যান- খারাপ থাকার পরও  সুনামগঞ্জ থেকে জগন্নাথপুরের ব্যবসায়ীদের সব মালামাল এ সড়ক দিয়ে  আনতে হয়। তাই পরিবহন খরচ কমাতে বাধ্য হয়ে অতিরিক্ত মালামাল আনা হয়।

বাস চালক জয়কলসের শাহীন জানান,এসব ভাঙ্গাচোড়া জোড়াতালি দেওয়া সেতুগুলোতে গাড়ি উঠলে আমাদেরই বুকটা কেঁপে ওঠে। সৃষ্টিকর্তার নাম জপ করে সেতু পার হই।
এই রাস-া দিয়ে প্রতিদিন যাতায়তকারী যাত্রী জগন্নাথপুর হবিবপুর গ্রামের হাজী জয়নাল মিয়া জানান,প্রত্যোক দিন জেলা শহরে যাতায়তের একমাত্র রাস-া এটি। তাই জীবনের ঝুঁটি নিয়ে চলাচল করি। বর্তমান সরকার একটি সু-নজর দিলে জগন্নাথপুরবাসীর কষ্ট একটুও হলেও লাগব হবে।

সুনামগঞ্জের সড়ক ও জনপথ বিভাগের নিবার্হী প্রকৌশলী আব্দুস সলাম জানান, সেতুগুলো মেরামতের জন্য দু’বছর পুর্বে প্রজেক্ট তৈরী করা হয়েছিল তা পরবর্তীতে বাতিল হয়ে যায়। বর্তমানে এই ৯টি সেতুর মধ্যে ১টি সেতু অকেজো হলে জগন্নাথপুর-পাগলা সড়কে প্রায় চার লাখ মানুষের যাতায়ত বন্ধ হয়ে যাবে। এদের চলাচলের বিকল্প কোন পথ আর নেই। এ ব্যাপারে সংসদ সদস্য এম এ মান্নানের সাথে আলোচনা হলে  ডিও লেটার তৈরী এবং নতুন ভাবে প্রজেক্টের চিন-াভাবনা করছেন।

এম এ কাসেম, সুনামগঞ্জ

Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here