গাজী সানজিদা:বাংলা সাহিত্যের ক্ষণজন্মা লেখক ও শিশু সাহিত্যিক সুকুমার রায় ১৮৮৭ সালের আজকের দিনে কলকাতায় জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ভারতীয় সাহিত্যে “ননসেন্স রাইম’’-এর প্রবর্তক।
একাধারে ছড়াকার, শিশুসাহিত্যিক, রম্যরচনাকার, প্রাবন্ধিক ও নাট্যকার সুকুমার রায় তাঁর ‘রামগরুড়ের ছানা’, ‘পাগলা দাশু’, ‘আবোল তাবোল’ কিংবা ‘ট্যাশ গরু’-এর মতো হৃদয়গ্রাহী লেখার মাধ্যমে সমৃদ্ধ করেছেন বাংলা সাহিত্যভাণ্ডারকে।
কলকাতার প্রেসিডেন্সি কলেজ থেকে ১৯০৬ সালে রসায়ন ও পদার্থবিদ্যায় বি.এস.সি.(অনার্স) করার পর মুদ্রণবিদ্যায় উচ্চতর শিক্ষার জন্য ১৯১১ সালে তিনি বিলেতে যান। সেখানে আলোকচিত্র ও মুদ্রণ প্রযুক্তির ওপর পড়াশোনা করেন এবং কালক্রমে তিনি ভারতের অগ্রগামী আলোকচিত্রী ও লিথোগ্রাফার হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেন।
১৯১৩ সালে সুকুমার কলকাতাতে ফিরে আসেন। পরে, তিনি ছোটদের মাসিক পত্রিকা ‘সন্দেশ’ প্রকাশনা শুরু করেন। বিলেত থেকে ফেরার অল্প কিছুদিনের মধ্যেই তাঁর বাবা উপেন্দ্রকিশোর রায়ের মৃত্যু হয়। তখন ‘সন্দেশ’ পত্রিকা সম্পাদনার দায়িত্ব সুকুমার নিজের কাঁধে তুলে নেন। শুরু হয় বাংলা শিশুসাহিত্যের এক নতুন অধ্যায়।
তার উল্লেখযোগ্য গ্রন্থাবলী হচ্ছে- ‘আবোল তাবোল’, ‘পাগলা দাশু’, ‘হেশোরাম হুশিয়ারের ডায়েরি’, ‘খাই-খাই’, ‘অবাক জলপান’, ‘লক্ষণের শক্তিশেল’, ‘ঝালাপালা ও অনান্য নাটক’, ‘হ য ব র ল’, ‘শব্দ কল্প দ্রুম’, ‘চলচ্চিত্তচঞ্চরী’, ‘বহুরুপী’, ‘ভাষার অত্যাচার’।
১৯২৩ খ্রিস্টাব্দে কালাজ্বরে আক্রান্ত হয়ে মাত্র ৩৭ বছর বয়সে সুকুমার রায় মৃত্যুবরণ করেন। সে সময় এই রোগের কোনো চিকিৎসা ছিল না। মৃত্যুর সময় তিনি একমাত্র পুত্রকিংবদন্তি চলচ্চিত্র পরিচালক সত্যজিৎ রায় এবং স্ত্রী সুপ্রভা রায়সহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে যান। মৃত্যুর বহু বছর পরও তিনি বাংলা সাহিত্যের জনপ্রিয়তম শিশুসাহিত্যিকদের একজন।