ডাঃ রাজীব কুমার সাহা :: করোনা ভাইরাস আমাদের জীবন যাপনের উপর একটা গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলছে। আমাদের নিজেকে এবং আমাদের পরিবারকে সুরক্ষিত রাখার জন্য আমাদের কাজ কর্মের অনেক পরিবর্তন আনতে হবে। করোনার প্রকোপ যে সহসাই যাচ্ছে না তা আন্তর্জাতিক গবেষণা থেকে আমরা জানতে পারছি। তাই আমাদের প্রতিদিনের কাজের গুরুত্ব আমাদের নিজেদেরই বোঝতে হবে।
অপ্রয়োজনীয় কাজগুলোকে কমিয়ে নিতান্ত জরুরি কাজগুলোকে সম্পাদন করতে হবে। মানে হলো সীমিত আকারে আমাদের সব ধরনের কাজ করে যেতে হবে।
সীমিত আকারে সবকিছু ধীরে ধীরে শুরু হতে যাচ্ছে। সীমিত আকারে অফিস খোলা, সীমিত আকারে মার্কেট খোলা, সীমিত আকারে গন যানবাহন খোলা। এখন কথা হলো সীমিত আকারে বলতে আমরা সাধারন জনগণ কি বোঝবো?
ধরে নিলাম সীমিত আকারে অফিস, ব্যাংক এবং মার্কেট খোলা হলো সকাল ১০ থেকে বেলা ২ টা পর্যন্ত। তাহলে কি ঘটনা ঘটবে? যাদের অফিসে, ব্যাংকে, মার্কেটে কাজ আছে সবাই একসাথে ১১টা/১২ টার দিকে যেয়ে হাজির হবে। সেক্ষেত্রে একটি গন জমায়েত হয়ে যাবে। সীমিত আকারের ব্যাপারটা আর থাকলো না।
আবার অন্যদিকে আসি সীমিত আকারে গন পরিবহন চালু করার ব্যাপারে। যদি সীমিত আকারে বলতে আমরা অল্প কিছু বাস চালু করি তাতে করে সেই বাসগুলোতে অতি মাত্রায় চাপ পড়বে। সেক্ষেত্রেও সীমিত আকারের ব্যাপারটা থাকবে না।
তাই অফিস, ব্যাংক এর কর্মকাল কমানোটাকে সীমিত আকার বললে সেটা সমীচীন হবে না। এক্ষেত্রে যদি আমরা কর্মকাল ঠিক রেখে কিভাবে অল্প সময়ে মানুষের কাজ শেষ করতে পারি সে ব্যাপারে চিন্তা করি সেটি বেশি যুক্তিযুক্ত হবে বলে আমি মনে করি। মার্কেট খোলা রাখার ব্যাপারেও যদি আমরা সময় না কমিয়ে বরং সময় বাড়িয়ে দেই অথবা সকাল বিকেলের আলাদা রুটিনে মার্কেট খোলা রাখি,সেক্ষেত্রে সাধারণ মানুষের কোন তাড়াহুড়ো থাকবে না। অবশ্যই ভীড় কম থাকবে।
অপর দিকে গন পরিবহনের সংখ্যা না কমিয়ে যদি সংখ্যা বাড়ানো যায়। মানুষের চলাচলের বিকল্প ব্যাবস্থা যদি করে দেয়া যায় তাহলে ভীড়ের পরিমান কম হবে। তারমানে সব ক্ষেত্রেই মানুষের ভীড়ের পরিমান সীমিত করতে হবে।
আমাদের কাজের পরিমানও সীমিত করতে হবে।তাহলেই আমাদের জীবীকা থেমে থাকবে না। আমরা নিজেকে এবং পরিবারকে সুরক্ষিত রাখতে পারবো।
সবশেষে বলতে চাই আমাদের সবাইকে স্বাস্থ্য সচেতন হতে হবে। সাধারণ স্বাস্থ্য বিধি আমাদের সবাইকেই মেনে চলার অভ্যাস করতে হবে, যা কিনা সব সময়ই টেলিভিশনে প্রচার করে চলেছে। অপরদিকে অফিস এবং গণপরিবহনের জন্য বিশেষ সরকারি স্বাস্থ্য বিধি রয়েছে।
এই স্বাস্থ্য বিধি মেনেই আমাদের সামনের দিনগুলো চলতে হবে। সবাই সচেতন হোন। ভালো থাকুন।।
লেখক :মেডিসিন ও বক্ষব্যাধি বিশেষজ্ঞ,কনসালটেন্ট, করোনা ইউনিট, মহানগর জেনারেল হাসপাতাল, ঢাকা।