মাহমুদা হক মনিরা :: পথশিশুদের নিয়ে বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা অ্যাকশন ফর সোশ্যাল ডেভেলপমেন্ট (এএসডি) পরিচালিত ‘আনন্দ নিবাস’ এর শিশুদের বিনোদনের লক্ষ্যে রবিবার (২৭ ডিসেম্বর) দুপুর ১২.৩০টায় শ্যামলী সিনেমা হলে স্বাস্থ্যবিধি মেনে বিশেষ আয়োজনে তাদের সিনেমা দেখানোর ব্যবস্থা করে।

এই আয়োজনে এসে সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের আনন্দ আরও বাড়িয়ে দেন ‘বিশ্বসুন্দরী’ সিনেমার নায়ক সিয়াম আহমেদ ও পরিচালক চয়নিকা চৌধুরী। ‘আনন্দ নিবাস’ এর শিশুরা নায়ক সিয়াম আহমেদকে পেয়ে উল্লাস করে এবং সিয়াম আহমেদও হলভর্তি দর্শক হিসেবে শিশুদের উচ্ছাস দেখে উৎফুল্ল হন।

এ সময় চিত্রনায়ক সিয়াম আহমেদ বলেন, “আমি জানি না কতদিন আমি অভিনয় করতে পারবো, তবে এই অনুভূতি গুলো সারাজীবন থেকে যাবে। সবাই গল্পটা পছন্দ করেছে, তালি দিয়েছে, এই পাওয়াটুকুর জন্যই কাজ করা।”

তিনি আরও বলেন, “এখন পর্যন্ত পাওয়া এটা আমার বেস্ট রিয়াকশন। আমি সবসময়ই শিশুদের যে কোনো ইভেন্টে যেতে পছন্দ করি। শিশুদের সাথে আজকের অনুভূতিটা সবচেয়ে সেরা। তারা তালি দিতে, হাসতে, কাঁদতে দ্বিতীয়বার চিন্তা করে না। তাদের প্রতিক্রিয়া খুবই নির্মল।”

পরিচালক চয়নিকা চৌধুরী বলেন, “বাচ্চাদের সাথে বসে আজকে এই প্রথম দেখলাম। এই অনুভূতিটা সবচেয়ে ভালো। বাচ্চারা খুব সহজ-সরল, ওদের এতো খুশি! আমার অনেক ভালো লেগেছে।”

তিনি আরও বলেন, “এটি আমার প্রথম ছবি। শিশুদের সাথে এই মুহূর্তটির অনুভূতি আলাদা।”

ডিসিএইচআর এর প্রকল্প ব্যবস্থাপক ইউ কে এম ফারহানা সুলতানা বলেন, “আমারা সবসময়ই শিশুদের কথা ভাবি। ওরা সুবিধা বঞ্চিত তাই আমরা চেষ্টা করি তাদের চাহিদা পূরণ করতে। তাদের ইচ্ছে ছিল সিনেমা হলে এসে প্রিয় নায়কের সাথে সিনেমা দেখবে। এটা তাদের কাছে সারাজীবন মনে রাখার মতো একটি উপহার। আমরা যারা শিশুদের নিয়ে কাজ করি, আমরা চেষ্টা করি যে কোনো একটি কাজের মাধ্যমে যেন শিশুদের মুখে একটু হাসি আনতে পারি। এটাই আমাদের চাওয়া।”

এমন আয়োজনে শিশুরাও খুব খুশি। শিশুরা জানায়, তাদের পছন্দের অভিনেতার সাথে দেখা করে এবং সিনেমা দেখে তারা অনেক খুশি। একজন শিশু বলেন, “ছবিটি দেখে আমার সবার আগে মায়ের কথা মনে পড়েছে। আমিও আমার মাকে অনেক ভালোবাসি। সিয়াম ভাইয়াকে দেখেও আমি অনেক খুশি।” একইসাথে শিশুরা এএসডি’কেও ধন্যবাদ জানায়।

উল্লেখ্য, অনিশ্চিত ভবিষ্যতের দিকে এগিয়ে চলা ঢাকা শহরের পথে ঘুরে বেড়ানো এমন শিশুর নিরাপদ আশ্রয় এখন এএসডি পরিচালিত ‘আনন্দ নিবাস’। এখানে বসবাসরত শিশুদের স্কুলে ভর্তি করানোর পাশাপাশি নাচ-গানের শিক্ষক, বিনোদনা, থাকা-খাওয়া, পড়ালেখার সরঞ্জাম, পোশাক, জুতা বা স্যান্ডেলসহ প্রয়োজনীয় সব জিনিস সরবরাহ করা হয়। এখানে স্নেহ-ভালোবাসার সঙ্গে আছে বেঁচে থাকার প্রয়োজনীয় উপকরণ। আছে নিয়মানুবর্তিতা। ব্রেড ফর দ্য ওয়ার্ল্ড-জার্মানির আর্থিক সহযোগিতায় এএসডির ডেভেলপমেন্ট অব চিলড্রেন অ্যাট হাই রিস্ক প্রকল্পের আওতায় ২০১২ সাল থেকে রাজধানীর তিনটি এলাকায় তিনটি ‘আনন্দ নিবাস’ পরিচালিত হয়। এর মধ্যে দুটি মেয়েদের ও একটি ছেলেদের। এখানে রয়েছে ৯০ জন শিশু, যাদের বয়স সর্বনিম্ন সাত বছর থেকে সর্বোচ্চ ১৮ বছর পর্যন্ত।

Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here