স্টাফ রিপোর্টার :: বাংলাদেশের প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি আবদুর রহমান বিশ্বাস আর নেই।
শুক্রবার রাত ৮টা ৪০ মিনিটে তিনি রাজধানীর ইউনাইটেড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ইন্তেকাল করেছেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্নাইলাহি রাজিউন)।
শুক্রবার সন্ধ্যার পর সাবেক এই রাষ্ট্রপতি অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে রাজধানীর ইউনাইটেড হাসপাতালে নেয়া হয়। সেখানে চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
ইউনাইটেড হাসপাতালের এক কর্মকর্তা বলেন, রাত সাড়ে ৮টার দিকে উনাকে আনা হয়েছিল। তার আগেই তার মৃত্যু হয়। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৯১ বছর।
গত ১৭ জুন স্ত্রী হোসনে আরা রহমান ইন্তেকাল করার পর অনেকটা নিঃসঙ্গই ছিলেন সাবেক এ রাষ্ট্রপতি। মৃত্যুকালে হোসনে আরার বয়স হয়েছিল ৮০ বছর।
এদিকে আবদুর রহমান বিশ্বাসের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ও মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
শোক বার্তায় খালেদা জিয়া মরহুমের আত্মার মাগফেরাত কামনা ও শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি সমবেদনা জানান।
আবদুর রহমান বিশ্বাস বাংলাদেশের সাবেক রাষ্ট্রপতি। তিনি ১৯২৬ সালের ১ সেপ্টেম্বর বরিশালের শায়েস্তাবাদ গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন।
আবদুর রহমান বিশ্বাস স্কুল ও কলেজ জীবন বরিশালে কাটে। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিএ (সম্মান) ও ইতিহাস এবং আইনে স্নাতক ডিগ্রি লাভ করেন। প্রথমে তিনি স্থানিয় সমবায় ব্যাঙ্কের সভাপতি হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেন। শিক্ষাবিস্তারেরে উদ্দেশ্যে তিনি কিছু শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠা করেন। এই কাজের জন্য সরকার ১৯৫৮ সালে তাকে সেচ্ছাসেবি সমাজ কর্মী হিসেবে স্বীকৃতি দান করে। সাটের দশকে কিছু দিন বাবুগঞ্জ পাইলট উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পালন করেন। পরে বরিশালে আইন পেশায় জড়িয়ে পড়েন।
১৯৬২ ও ১৯৬৫ সালে তিনি পূর্ব পাকিস্তান আইন সভার সদস্য নির্বাচিত হন। ১৯৬৫ থেকে ১৯৬৯ পর্যন্ত তিনি সংসদ সচিব হিসেবে দ্বায়িত্ব পালন করেন। ১৯৬৭ সালে তিনি জাতিসংঘের ২২তম সাধারণ সভায় অংশ করেন। ১৯৭৪ ও ১৯৭৬ সালে তিনি বরিশাল বার আসোসিয়েশনের সভাপতি নির্বাচিত হন।
১৯৭৭ সালে তিনি বরিশাল পৌরসভার চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। ১৯৭৯ সালের সাধারণ নির্বাচনে আবদুর রহমান বিশ্বাস সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ১৯৭৯-৮০ সময়ে তিনি রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের মন্ত্রীসভায় পাট মন্ত্রী ছিলেন এবং ১৯৮১-৮২ সালে রাষ্ট্রপতি বিচারপতি আবদুস্ সাত্তারের মন্ত্রী সভায় স্বাস্থ্যমন্ত্রী ছিলেন।
১৯৯১ সালে বিএনপি সরকার গঠন করলে তিনি বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হন এবং ১৯৯৬ সালের ৮ অক্টোবর তার মেয়াদ শেষ হয়।