ছাদেকুল ইসলাম রুবেল।

গাইবান্ধা: গাইবান্ধার সাঘাটা উপজেলার বোনারপাড়া কুলিপট্টিতে বসবাসরত মুক্তিযুদ্ধের স্বীকৃতি না পাওয়া তারা বানু চা বিক্রি করে কোন মতে জীবিকা নির্বাহ করছেন।

2জানা গেছে, স্বাধীনতার ৪৬ বছর পরেও মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতি পাননি পায়ে গুলিবিদ্ধ যুদ্ধাহত তারা বানু। বর্তমানে তিনি ২ মেয়ে ও ৪ ছেলে সন্তান নিয়ে দুর্বিষহ মানবেতর জীবন যাপন করছেন।

ওই যুদ্ধাহত বীরাঙ্গনা মুক্তিযোদ্ধার বাড়ি উপজেলার বোনারপাড়া রেলওয়ে কলোনীতে। তার স্বামী শহীদ বীরমুক্তিযোদ্ধা ফজলুল হক দুদু। যুদ্ধের সময় মুক্তিযোদ্ধারা বোনারপাড়া ইউনিয়নের রামনগর গ্রামে তারা বানুদের বাড়িতে আশ্রয় নেয়। সে সময় ফজলুল হক দুদু তারা বানুকে পছন্দ করে বিয়ে করেন। বিয়ের পর থেকেই তারা বানু তার স্বামী দুদুর সঙ্গে যুদ্ধে অংশ নেন।

তারা বানু জানান, ‘বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করে পাকিস্থানীদের আস্তানায় ঢুকে তাদের সাথে মিল দিতাম। সুযোগ বুঝে সেনা সদস্যদের ক্যাম্প থেকে অস্ত্র লুট করে মুক্তিযোদ্ধাদের এনে দিতাম। এভাবেই অস্ত্র লুট করতে করতে একদিন সেনা ক্যাম্পে মুক্তিযোদ্ধারদের সাথে নিয়ে গ্রেনেড হামলা করে ১০ পাকিস্থানীকে হত্যা করেছিলাম’।

১৯৭১ সালে ১১নং সেক্টরের তৎকালীন কোম্পানী কমান্ডার রোস্তম আলীর নেতৃত্বে মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেন তারা বানু। কিন্তু যুদ্ধ পরবর্তী সময়ে কর্তৃপক্ষের উদাসীনতায় এখন পর্যন্ত মুক্তিযোদ্ধার তালিকায় তার নাম অন্তর্ভূক্ত হয়নি।

বীরাঙ্গনা তারা বানু আরো বলেন, আমি ১১ নং সেক্টরে বীরমুক্তিযোদ্ধা ফজলুল হক দুদুর যুদ্ধসঙ্গি হলেও কেন মুক্তিযোদ্ধার তালিকায় আমার নাম নেই এ প্রশ্নের উত্তর ৪৬ বছরেও পাইনি।

আওয়ামীলীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর মুক্তিযোদ্ধার নতুন তালিকায় নাম অন্তর্ভূক্ত হওয়ার জন্য স্থানীয় ও কেন্দ্রীয় মুক্তিযোদ্ধা সংসদ বরাবরে আবেদন করলেও এখন পর্যন্ত মুক্তিযোদ্ধা স্বীকৃতি পাইনি। অদ্যবদি সব সুযোগ সুবিধা বঞ্চিত এ মুক্তিযোদ্ধা নূন্যতম স্বীকৃতি পেতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হস্তক্ষেপ কামনা করছেন।

Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here