স্টাফ রিপোর্টার :: সাইক্লিস্ট রেশমা নাহার রত্নাকে গত ৭ আগস্ট সকাল বেলায় চন্দ্রিমা উদ্যান সংলগ্ন লেকরোডে সাইক্লিং করার সময় একটি প্রাইভেট কার চাপা দিয়ে হত্যা করে। রেশমা নাহার রত্নার মতো হাজারো সাইক্লিস্ট ও পথচারী এমনিভাবে প্রতিনিয়ত দূর্ঘটনার শিকার হচ্ছে। সাইক্লিস্ট ও সাইকেল ব্যবহারকারীর সংখ্যা দ্রুত বাড়ছে। সাইকেলের জন্য পৃথক লেনসহ প্রয়োজনীয় অবকাঠামো এবং সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার অভাবে চরম নিরাপত্তাহীনতার মধ্যে চলতে বাধ্য হচ্ছে সাইকেল ব্যবহারকারীরা।
পরিবেশ বাচাঁও আন্দোলন (পবা) ও সমমনা সংগঠনগুলো জনগণকে সাইকেল চালাতে উৎসাহিত করার পাশাপাশি সাইকেলের জন্য পৃথক লেনের দাবী জানিয়ে আন্দোলন করে আসছে। এতে সরকার বাই সাইকেল লেনের জন্য কিছু উদ্যোগ নিলেও তা প্রয়োজনের তুলনায় খুবই যৎসামান্য। অবিলম্বে ‘সাইক্লিস্ট রেশমা নাহার রত্না হত্যাকারীর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি ও সাইকেলের জন্য পৃথক লেন চাই’ দাবীতে ১১ আগস্ট মঙ্গলবার, সকাল ১১টায় শাহবাগস্থ জাতীয় জাদুঘরের সামনে থেকে শহীদ মিনার পর্যন্ত সাইকেল র‌্যালীতে পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলন (পবা),  গ্রীনফোর্স, বাংলাদেশ সাইকেল লেন বাস্তবায়ন পরিষদ, ঢাকা সাইক্লিং ও স্পোর্টস ক্লাব, বাংলাদেশ মাউন্টেনিং ফেডারেশন, অভিযাত্রী, ঢাকা ইউনিভার্সিটি সাইকেল ক্লাব, সাউথ ঢাকা সাইক্লিস্টস, ডাব্লিউবিবি ট্রাস্ট অংশগ্রহণ করে।

পবার চেয়ারম্যান আবু নাসের খানের সভাপতিত্বে ও পবার সম্পাদক এম এ ওয়াহেদ এর সঞ্চালনায় সাইকেল র‌্যালীতে প্রারম্ভিক বক্তব্য রাখেন গ্রীনফোর্সের প্রধান সমন্বয়ক মেসবাহ সুমন। সাইকেল র‌্যালীর শুরুতে সংক্ষিপ্ত বক্তব্য রাখেন নিহত রেশমা নাহার রত্নার মেঝো ভাই মো: শাহ্ আলম, বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের ট্রাস্টি ইফতেখারুল ইসলাম, মিডিয়া ব্যক্তিত্ব শারমিন নাহার লাকি, পর্বতারোহী ও অভিযাত্রী সংগঠক নিশাত মজুমদার, বাংলাদেশ সাইকেল লেন বাস্তবায়ন পরিষদ এর সভাপতি আমিনুল ইসলাম টুববুস, ঢাকা সাইক্লিং ও স্পোর্টস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক রবিউল হাসান মনা, বাংলাদেশ মাউন্টেনিয়ারিং ফেডারেশন‘র সাধারণ সম্পাদক অপার আহমেদ, ঢাকা ইউনিভার্সিটি সাইক্লিং ক্লাব‘র সাধারণ সম্পাদক নাজমুল হাসান, ডাব্লিউবিবি ট্রাস্ট‘র প্রকল্প কর্মকর্তা সামিউল হাসান, সাইক্লিস্ট নওরিন ওশিন, ট্রাইএথলেট মো: সামসুজ্জামান আরাফাত, জাতীয় ক্রিড়াবিদ সুলতানা মৌসুমী প্রমুখ।

র‌্যালীর শুরুতে সংক্ষিপ্ত আলোচনায় বক্তারা বলেন, সাইকেল একটি পরিবেশবান্ধব বাহন। পৃথিবীর বহু দেশেই নতুন করে সাইকেলের ব্যবহার দিন দিন বাড়ছে। ইউরোপ এবং আমেরিকার কোনো কোনো শহরের নির্দিষ্ট কিছু সড়কে সপ্তাহের নির্দিষ্ট দিনে সাইকেল ছাড়া অন্য সমস্ত বাহন চলাচল বন্ধ থাকে। অর্থাৎ সাইকেলের গুরুত্ব ক্রমেই অনুধাবন করছে বিশ্ববাসী। বাংলাদেশে আজকাল কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় এমনকি অফিসে যাতায়াতের জন্য সাইকেলের ব্যবহার অনেকাংশে বাড়ছে। বর্তমানে অনলাইন সার্ভিস এর কার্যক্রম বৃদ্ধির কারনে সাইকেলের ব্যবহার আরও বৃদ্ধি পেয়েছে। শুধু আন্দোলন নয় এটাকে রীতিমত বিপ্লব করে ফেলা সম্ভব যদি শুধু বড় বড় রাস্তার পাশে ছোট সীমিত জায়গায় সাইকেলের লেন করে দেয়া যায়। ঢাকার যে বিশাল ট্রাফিক জ্যাম সেটা দুর করে সময় বাচাঁনোর এর থেকে সহজ কোনো পরীক্ষিত অন্য কোন বাহন নাই।

সাইকেলের জন্য পৃথক লেনসহ প্রয়োজনীয় অবকাঠামো এবং সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত হলে মানুষের নিরাপদ যাতায়াত সুবিধার পাশাপাশি দূর্ঘটনা ও যানজট হ্রাস পাবে। এতে বায়ুদূষণ হ্রাসসহ জনস্বাস্থ্য রক্ষা ও পরিবেশ বান্ধব নগরী গড়ে তুলতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।


Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here