পাইকগাছা (খুলনা) প্রতিনিধি :: ফুলটি যারা যত্ন করে ফুটিয়ে থাকেন তারা প্রত্যেকেই এর প্রকাশিত শুভ্র ভালবাসাকে কিছুতেই এড়াতে পারেন না। শুভ্রতায় বাঁধা পড়ে কোমল হৃদয়। একবার নয়! দু’বার নয়! অসংখ্য বার ওই রাতের অতিথিকে একঝলক উঁকি দিয়ে দেখতেই থাকেন। তাতেই শান্তি। তাতেই স্বস্তি। বর্ণনাতীত ভালোলাগা তাতেই। ইংরেজি নাম ‘নাইটকুইন’। এ নামেই তার খ্যাতি ছড়িয়ে পড়েছে চারদিকে।
ঘরের বারান্দা কিংবা ছাদে অথবা ফ্ল্যাটের এক কোণে রাতের রাণী হয়ে একসময় আবির্ভূত হয় এ ফুলটি। আঁধার ঢেলে উদ্ভাসিত ধ্রুব সত্যের মতো প্রকাশ পায় তার শ্বেতশুভ্র উপস্থিতি। চারপাশকে যেন জানান দেয়-অন্ধকারের উৎস হতে সেই একমাত্র প্রকাশিত সত্য। যা সতত সুন্দর। এভাবেই বছরে পর বছর ধরে তার আগমন প্রতিটি পরিবারের আনন্দের সাথে ভাগ বসাতে। তবে ভোরের আলো ফোটার আগেই সে আপনা থেকেই গুটিয়ে নেয় তার সৌন্দর্য।
খুলনার পাইকগাছায় সাংবাদিক মহানন্দ অধিকারী মিন্টু জানান, মঙ্গলবার (২মার্চ) রাত ১০টায় বাড়ি ফিরে দেখি ১টি নিশিপদ্ম ফুটেছে। ভীষণ ভালো লাগছে। এ গাছটির বয়স প্রায় দশ বছর। এই প্রথম নিশিপদ্ম ফুটলো। মা এর কাছে জানলাম সন্ধ্যার পর একটু একটু করে ফোটা শুরু হয়েছে। পাঁচ-ছয় ঘণ্টা থেকে রাতের শেষে আবার গুটিয়ে যায়। আরো কয়েক কড়ি ফোটার অপেক্ষায়। সাধারণত মে থেকে জুন মাসে ফুল ফোটে।
প্রকৃতি বিষয়ক গবেষকদের মতে, নাইটকুইনের সঠিক বাংলা নামটি হলো নিশিপদ্ম। বৈজ্ঞানিক নাম Epiphyllum oxypetalum। শুধুমাত্র নাইটকুইনই নয়। রাতে আরো অসংখ্য জাতের ফুল ফোটে এবং ভোরেই ঝরে পড়ে। তবুও এ ফুল নিয়ে পুষ্প প্রেমিকদের অনেক উৎসাহ। নিশিপদ্ম সাধারণত সৌখিন পুষ্পপ্রেমিকদের বাসায় দেখা যায়। এটি কোনো বিরল প্রজাতির ফুল নয়।
এ গাছটি ক্যাকটাস গোত্রীয়। মমৃণ ও কণ্টকহীন। যথারীতি পাতা নেই, রূপান্তরিত কান্ডই পাতার কার্য সম্পাদন করে। গাছের গোড়া শক্ত, ডাঁটার মতো। অনেকগুলো শাখা প্রশাখা। সবগুলোই চ্যাপ্টা ফিতার আকৃতি, তাতে সবুজ রঙের শিরা সুস্পস্ট। প্রায় সারা বছরই নিষ্প্রাণ থাকে। গ্রীষ্মের শেষভাগে একপশলা বৃষ্টির ছোঁয়া পেলেই প্রস্ফুটন প্রস্তুতি শুরু হয়। সাদা রঙের সুগন্ধিযুক্ত ফুল নিশিপদ্ম।