মানবসেবায় জীবন উৎসর্গকারী ‘মাদার’ তেরেসাকে ‘সন্ত’ বা ‘ঈশ্বরের দূত’ সম্মানে ভূষিত করা হয়েছে। আজ ভ্যাটিকান সিটিতে আনুষ্ঠানিকভাবে এ ঘোষণা করেন পোপ ফ্রান্সিস । কয়েক সপ্তাহ ধরেই এই অনুষ্ঠানের প্রস্তুতি নিচ্ছিল ভ্যাটিকান। খবর বিবিসির।

bdp_mather1খবরে বলা হয়, আজ ভ্যাটিকান সিটিতে সেন্ট পিটার্স স্কয়ারে হাজার হাজার মানুষ সমবেত হন। ভ্যাটিকানে মাদার তেরেসাকে ‘সন্ত ঘোষণা’র অনুষ্ঠানে সেন্ট পিটার্স স্কয়ারে উপস্থিত ছিলেন ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ, পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি, দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়ালসহ হাজার হাজার মানুষ।

৮৭ বছর বয়সে মাদার তেরেসার মৃত্যু হয় ১৯৯৭ সালের ৫ই সেপ্টেম্বর। ২০০৩ সালে সন্ত হওয়ার প্রক্রিয়ার একটি ধাপ ‘বিয়টিফিকেশন’-এ তার নাম প্রথম প্রবেশ করে।

২০০২ সালে ভ্যাটিকান থেকে প্রথমবার মাদার তেরেসার অলৌকিক ক্ষমতার কথা জানানো হয়। বলা হয়, ভারতীয় এক নারীর দীর্ঘদিনের টিউমার সারাতে যখন সব চিকিৎসকই হাল ছেড়ে দিয়েছিলেন, তখন তিনি মাদার তেরেসার ছবি রেখে প্রার্থনা করতে করতে সুস্থ হয়ে ওঠেন।

আর গত বছর দ্বিতীয় অলৌকিক ঘটনা প্রকাশিত হয়, নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ব্রাজিলের এক বাসিন্দা জানান, ২০০৮ সালে তার টিউমার সেরেছে মাদার তেরেসার জন্য। ব্রাজিলবাসী ওই রোগী অবশ্য কোনো দিন মাদারকে দেখেননি।

আলবেনিয়ায় ১৯১০ সালের ২৫শে আগস্ট জন্ম নেয়া আনিয়েজ গঞ্জে বয়াজিও ‘নান’ হন ১৯২৮ সালে। তখন তার নাম হয় সিস্টার তেরেসা। মাদার তেরেসা ১৯৫০ সালে কলকাতায় মিশনারিজ অফ চ্যারিটি নামে সেবা প্রতিষ্ঠান চালু করেন।
দীর্ঘ ৪৫ বছর ধরে তিনি গরীব, অসুস্থ, অনাথ, অসহায় ও মৃত্যুপথযাত্রী মানুষের সেবা করেছেন। সেই সঙ্গে মিশনারিজ অফ চ্যারিটির বিকাশ ও উন্নয়নেও নিবিড় পরিশ্রম করেছেন।

প্রথমে ভারত ও পরে পুরো বিশ্বে তিনি তার এই মিশনারি কার্যক্রম ছড়িয়ে দেন। কলকাতায় মিশনারিজ অব চ্যারিটির ১৯টি শাখা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। সারাবিশ্বে প্রায় সাড়ে চার হাজার ‘নান’ রয়েছেন। শান্তিতে নোবেল পুরস্কারও পেয়েছেন মাদার তেরেসা।

যদিও মাদার তেরেসার স্থাপিত প্রতিষ্ঠান নিয়েও সমালোচনা রয়েছে। সমালোচকদের মতে, চ্যারিটি হাসপাতালগুলোতে সঠিক স্বাস্থ্যবিধি মানা হয় না। একইসাথে সমালোচকরা বলেন, মানবসেবায় একনায়কদের দেয়া অর্থ গ্রহণ করেছেন মাদার তেরেসা।

Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here