মিলন কর্মকার রাজু, কলাপাড়া (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি :: স্কুল-বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী,পর্যটকসহ হাজারো মানুষ কুয়াকাটায় ভেসে আসা মৃত তিমির কংকাল সংরক্ষণের দাবি করলেও শুধু মাত্র জায়গার অভাবে ৪০ ফুট দৈর্ঘ্যরে তিমি মাছটির কংকাল পটুয়াখালী বিশ্ববিদ্যালয়ে সংরক্ষণ করা গেলো না। এ কারণে রোববার দুপুরে কলাপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. তানভীর রহমান এর উপস্থিতিতে তিমির মৃতদেহটি গঙ্গামতি বনবিভাগের মধ্যে মাটি চাপা দেয়া হয়েছে।
তিমি মাছের মৃতদেহ আটকা পড়ার খবর শোনার পর এর কংকাল সংরক্ষন করে রাখা যায় কীনা তা যাচাই করতে পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিশারিজ ম্যানেজমেন্ট বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মো. মোয়াজ্জেম হোসেন এবং অ্যাকোয়া কালচার বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক আনোয়ার হোসেন মন্ডলের নেতৃত্বে ১৪ সদস্যের একটি দল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
শনিবার দুপুরে তিমি মাছটি পরিদর্শণ শেষে অ্যাকোয়া কালচার বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মো. রোসনে আলম বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে এতোবড় তিমি সংরক্ষণ করার পর্যাডÍ জায়গা নেই। বাংলাদেশ মৎস্য উন্নয়ন কর্পোরেশন অথবা বনবিভাগ কংকাল সংরক্ষণ করে রাখতে পারে। এখনও কংকাল সংরক্ষন করে রাখার সুযোগ রয়েছে। সেক্ষেত্রে আমরা কারিগরী সহায়তা দিতে পারি।
গত শুক্রবার ভোর রাতের জোয়ারে মৃত তিমি মাছটি ভেসে এসে কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকতের গঙ্গামতি সংলগ্ন সংরক্ষিত বনাঞ্চল লাগোয়া বালুচরে আটকা পড়ে। শনিবার সূর্যোদয়ের সাথে সাথে পর্যটকসহ স্থানীয় বাসিন্দারা তিমির মৃত দেহটি পড়ে থাকতে দেখেন। এরপর হাজার হাজার মানুষ এটি দেখার জন্য ভিড় করেন। এর দৈর্ঘ্য ৪০ ফুট এবং প্রস্থ্য ২০ ফুট। ওজন আনুমানিক পাঁচ টনের মতো হবে বলে জানা যায়।
কলাপাড়া উপজেলার জেষ্ঠ্য মৎস্য কর্মকর্তা মো. কামরুল ইসলাম বলেন, ‘তিমির মৃতদেহ পর্যবেক্ষন করে দেখা যায় এর মাথার ওপরে বড় ধরণের আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। যা থেকে অনুমান করা যায়, পানির গভীর থেকে শ্বাসপ্রশ্বাস গ্রহনের স্বার্থে উল্লম্বভাবে ওপরে উঠতে গিয়ে সাগরবক্ষে থাকা কোনো জাহাজের সাথে ধাক্কা লেগে এটি মারা যেতে পারে।’
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশের জেলেরা ইনলিগ্যাল আনরেগুলেটেড অ্যান্ড আনরিপোর্টেড তথা সামুদ্রিক প্রাণী সংরক্ষনের বিষয়ে সচেতন। সমুদ্রবক্ষে তিমি, ডলফিন ও হাঙ্গর শিকার বা ক্ষতি করার কোনো ইচ্ছা আমাদের জেলেদের মাঝে লক্ষ্য করা যায়না। এ বিষয়ে মৎস্য অধিদপ্তর জেলেদের তিমি, হাঙ্গর ও ডলফিন শিকার না করার বিষয়ে তাগিদ দিয়ে থাকে।
কলাপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. তানভীর রহমান বলেন, কুয়াকাটা পর্যটন এলাকার পরিবেশ সুরক্ষার কারণে সৈকতের বালু চরেই দ্রুত মৃত তিমিটিকে মাটি চাপা দেয়া হয়েছে। তবে কেউ এর কংকাল সংরক্ষণ করতে চাইলে সহায়তা দেয়া হবে।