শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলার পলাশিকুড়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষক সংকটে প্রাথমিক শিক্ষার বেহাল দশা দেখা দিয়েছে। উপজেলার কোন কোন প্রাথমিক বিদ্যালয়ে মাত্র ২/৩ জন শিক্ষক দিয়ে কোন রকমে জোড়াতালি দিয়ে চলছে ক্লাস। ফলে শিক্ষা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কোমলমতি শিক্ষার্থীরা। এলাকাবাসী জরুরী ভিত্তিতে সকল প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শন্যপদ পুরনে কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

জানা গেছে,উপজেলার ১টি পৌরসভা ও ১২টি ইউনিয়নের ১৯৯টি গ্রামের মধ্যে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে ৬২টি, বেসরকারি রেজিঃ প্রাথমিক বিদ্যালয় ৩৪টি ও কমিউনিটি প্রাথমিক বিদ্যালয় ৩ টি। সরকারি-বেসরকারি সবমিলে প্রাথমিক বিদ্যলয়ের সংখ্যা মাত্র ৯৯টি। সরকারিভাবে প্রতিটি গ্রামে ১টি করে প্রাথমিক বিদ্যালয় স্থাপনের ঘোষনা দিলেও এ উপজেলায় তা নেই। উপজেলা সদর থেকে ১৪ কিঃমিঃ দুরে পোড়াগাঁও ইউনিয়নের প্রত্যান্ত এলাকার পলাশিকুড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি ১৯৬২ ইং সনে স্থাপন করা হয়। বর্তমানে এ বিদ্যালয়টিতে প্রথম থেকে পঞ্চম শ্রেনী পর্যন্ত শিক্ষার্থী রয়েছে ৩৯০ জন। আর ৬ জন শিক্ষককের স্থলে আছেন মাত্র ২ জন শিক্ষক। প্রধান শিক্ষকসহ ৪ জন শিক্ষকের পদ দীর্ঘদিন যাবৎ শূন্য রয়েছে। যিনি ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক ছিলেন তিনিও গত মাসে অবসরে চলে গেছেন। এখন বিদ্যালয়টিতে চরম শিক্ষক সংকট চলছে। মাত্র ২ জন সহকারী শিক্ষক ৩৯০ জন শিক্ষার্থীদের কোনভাবেই নিয়ন্ত্রণ করতে পারছেন না। তাছাড়া এবারের পঞ্চম শ্রেনীর সমাপনী পরিক্ষার্থী আছে ৬২ জন। শিক্ষক আজমত আলী জানান, প্রধান শিক্ষকের পদ শূন্য থাকায় একজন শিক্ষককে অফিসিয়াল কাজে দৌড়াদৌড়ি করতে হয়। যে কারনে বর্তমানে শিক্ষার্থীদের পাঠদান কার্যক্রম মারাত্মক ভাবে ব্যাহত হচ্ছে।

শিক্ষার্থীরা জানিয়েছে, তাদের ক্লাস ঠিকমতো নেয়া হয় না। অপরদিকে পলাশিকুড়া ওর্য়াডের সাবেক ইউপি সদস্য নুরুল হক জানান, দুর-দুরান্ত থেকে এ বিদ্যালয়ে শিক্ষক নিয়োগ দেয়া হয়। শিক্ষকরা চাকরীতে যোগদান করেই বদলীর অপেক্ষায় থাকেন, কবে বদলী হবেন। কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করেই যথারীতি ১/২ মাসের মধ্যেই বদলী হয়ে যান। স্থায়ীভাবে এলাকার শিক্ষকদের নিয়োগ না দেয়ায় এমন সমস্যা হচ্ছে বলে তিনি মন্তব্য করে বলেন, শুধু শহরাঞ্চলের শিক্ষকরা নিয়োগ পেয়ে গ্রামে শিক্ষকতা করতে চাননা। যে কারনে গ্রামের শিক্ষার্থীরা সু-শিক্ষা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। তিনি আরো বলেন, এমনকি আসন্ন সমাপনী পরিক্ষায়ও ভাল ফলাফল পাওয়া যাবে না। এলাকাবাসী জানান, উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার নিয়মিত বিদ্যালয় পরিদর্শনেও আসেন না। এ ব্যাপারে বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি মনিরুজ্জামান মানিক জানান, উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসারের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি শিক্ষক দেয়ার আশ্বাস দিয়েছেন। এলাকাবাসীর দাবি জরুরী ভিত্তিতে এ বিদ্যালয়ে শিক্ষকের শূন্যপদ পুরণ করা হউক। এদিকে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার শফিকুল ইসলাম জানান, সামনের মিটিংয়ে আমরা শিক্ষক নিয়োগের ব্যাপারে আলোচনায় বসবো তখন বিষয়টি বিস্তারিত জানানো যাবে।

ইউনাইটেড নিউজ ২৪ ডট কম/শাহরিয়ার মিল্টন/শেরপুর

Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here