শুভ সম্ভাবনার নতুন দিনের প্রত্যয়ে প্রাণের উচ্ছ্বাসে স্টাফ রিপোর্টার :: জীর্ণ পুরাতনকে বিদায় জানিয়ে শুভ সম্ভাবনার নতুন দিন আনবার প্রত্যয়ে প্রাণের উচ্ছ্বাসে পহেলা বৈশাখে নতুন বছরের সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে রমনা বটমূলে শুরু হলো ছায়ানটের প্রভাতি অনুষ্ঠান।

ছায়ানট আর বাঙালির বর্ষবরণ এখন সমার্থক। প্রতিবছরের  মত এবারও রমনার বটমূলে শিল্পীদের গানের মধ্য দিয়েই যেন উদিত হলো নতুন বছরের নতুন সূর্য। শুভ দিনের প্রত্যাশায় মানুষের মনে গুনগুনিয়ে উঠলো ‘নব আনন্দে জাগো আজি নব রবি কিরণে’। স্বাগতম ১৪২২, সুস্বাগত।

প্রকৃতির নিয়মে আসে বৈশাখ। কিন্তু পহেলা বৈশাখ জাতির জীবনে আসে দিনবদলের অঙ্গীকার নিয়ে। অশুভ শক্তির বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়ে বাংলাদেশের সমৃদ্ধিকে এগিয়ে নিয়ে যাবার প্রত্যয়ে এবার পালিত হচ্ছে নববর্ষ। পৃথিবীজুড়ে প্রতিটি বাঙালি আজ গানে গানে আহ্বান জানাচ্ছে সম্ভাবনাময় নতুন দিনকে। গানের পংক্তি উচ্চারণে তারা বর্জন করতে চাইছে জীবনে জড়িয়ে থাকা সকল পঙ্কিলতাকে। বরণ করে নিতে চাইছে নতুন বছরকে।

রাজধানীতে প্রতিবছর ছায়ানটের প্রভাতী অনুষ্ঠান দিয়ে শুরু হয় পহেলা বৈশাখ উদযাপন। এবার তা ভিন্নমাত্রা পেয়েছে এই বটমূলের আয়োজন পঞ্চাশ বছরে পা রেখেছে। অর্ধ শতাব্দি ধরে বৈশাখে নতুন আবাহন নিয়ে হাজির হয়। নিঃসন্দেহে জাতির জীবনে এক প্রেরণাসঞ্চারি ঘটনা।

ঊষালগ্নে রমনা বটমূল থেকে সরোদে ভেসে এলো ভোরের রাগ ভৈরবী। রাজরূপা চৌধুরীর এ সরোদবাদনের মধ্য দিয়ে শুরু হয় অর্ধ শতাব্দি ধরে চলে আসা ছায়ানটের বর্ষবরণের প্রভাতী আয়োজন।‘আনন্দ, বাঙালির আত্মপরিচয়ের সন্ধান ও অসাম্প্রদায়িকতা’ এ প্রতিপাদ্যে এবারের আয়োজনে অংশ নিয়েছে ছায়ানটের ১১১ জন শিল্পী।

সরোদবাদনের পরে ‘আলোকের এই ঝর্ণা ধারায়’ গান দিয়ে শুরু হয় মূল আয়োজন। ১৯৬৭ সালে এ গান দিয়েই শুরু হয়েছিল অনুষ্ঠান। সে গান গেয়ে সেই শুরুর বছরটিকে যেন স্মরণ করতে চাইলেন ছায়ানটের নবীন প্রবীণ শিল্পীরা। এর পর একে আরও ৯টি সম্মেলক গান, ১৩টি একক গানের পরিবেশনা রয়েছে এ আয়োজনে। সম্মেলক কণ্ঠে শিল্পীরা আরো গাইবেন- ‘আনন্দধ্বনি জাগাও গগনে’, ‘ওরে বিষম দরিয়ার ঢেউ’, ‘তোরা সব জয়ধ্বনি কর’, ‘ভোরের হাওযায় এলে ঘুম ভাঙাতে’, ‘একি অপরূপ হৃপে মা তোমায় হেরিনু পল্লী জননী’, ‘উদয়শিখরে জাগে মাভৈ মাভৈ’, ‘তোমার আনন্দ ওই এলো দ্বারে’, ‘আনন্দেরই সাগর হতে’, ‘আপন কাজে অচল হলে’, ‘আজি রক্ত নিশি ভোরে’, ‘আমাদের নানান মতে’, ‘আমি টাকডুম টাকুডুম বাজাই বাংলাদেশের ঢোল’।

এ  আয়োজনে রয়েছে ৪টি আবৃত্তি। এতে অংশ নেন সৈয়দ হাসান ইমাম, আসাদুজ্জামান নূর, ইফফাত আরা দেওয়ান ও শাহীন সামাদ। ছায়ানট সভাপতি ড. সন্জীদা খাতুনের কথন এবং জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশনের মধ্য দিয়ে শেষ হবে দ্বিতীয় পর্ব। এর পর নেত্রকোণার দিলু বয়াতি ও তাঁর দলের লোকপালা ‘দেওয়ানা মদিনা’ পালা পরিবেশনার মধ্য দিয়ে প্রভাতী আয়োজন শেষ হবে।

Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here