খাদিজা আক্তার :: আজ ২৯ মে বাংলা চলচ্চিত্রের কিংবদন্তি অভিনেতা, জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার প্রাপ্ত হুমায়ুন ফরীদির ৬৫ তম জন্মদিন। শুভ জন্মদিন হে পরম শ্রদ্ধেয় হুমায়ুন ফরীদি।
১৯৫২ সালের এইদিনেই তিনি জন্মেছিলেন বাংলাদেশের মঞ্চ, টেলিভিশন ও চলচ্চিত্রে নতুন মাত্রা যোগ করার জন্য। তিনি ছিলেন একজন মুক্তিযোদ্ধা, একজন দেশপ্রেমিক, একজন নিরহংকারী, একজন বিনয়ী, একজন বড় মনের মানুষ। বাংলাদেশের অভিনয় শিল্পটাকে এগিয়ে নেয়ার জন্য তার ছিল আকুল আকুতি আর প্রত্যয়।
তিনি ধারন ও লালন করেছিলেন বাংলাদেশের সংস্কৃতি এবং তা ফুটিয়ে তুলতে চেয়েছিলেন তার অভিনয়ের মধ্য দিয়ে অসামান্য দক্ষতায়। তিনি যখন যে চরিত্রেই অভিনয় করেছেন সেটিই হয়েছে মুখ্য।
তিনিই প্রমাণ রেখে গেছেন যে শুধু নায়ক কিংবা মুখ্য চরিত্রের অভিনয় দিয়ে নয়, খলনায়ক কিংবা পার্শ্ব চরিত্রের অভিনয় দিয়েও দর্শকের হৃদয়ে দাগ কাটা যায়। তিনিই বিরামহীনভাবে দর্শকদের হাসাতে, কাঁদাতে কিংবা উত্তেজিত রাখতে। অভিনয় জগতে তার মত বহুমুখী প্রতিভা বিরল।
তার হাসি, কণ্ঠস্বর, কথাবলার ধরন, অঙ্গভঙ্গি, সবকিছুই ছিল ব্যতিক্রমধর্মী। তিনি ছিলেন অপ্রতিদ্বন্দ্বী যার সাথে কারোরই তুলনা হয়না। তিনি অভিনয় শিল্পের মানদণ্ড। তার বিকল্প কেউ হতে পারে না। হাজার বছরে যেমন একজন রবীন্দ্রনাথ কিংবা নজরুল জন্মায়, হুমায়ূন ফরীদিও তেমনি হাজার বছরে একজন জন্মায়।
চলচ্চিত্রে অসামান্য খ্যাতি অর্জন করেও তিনি ভালবাসতেন মঞ্চ, কারন এক্ষেত্রে শিল্পীর সঙ্গে দর্শকের সরাসরি মিলন ঘটে। জানিনা তারমত করে কেউ আর কোনদিন সংসপ্তক, কোথাও কেউ নেই, নিখোঁজ সংবাদ, বকুলপুর কতদুর, সাত আসমানের সিঁড়ি… নাটকগুলো কিংবা একাত্তরের যীশু, জয়যাত্রা, শ্যমল ছায়া, মায়ের অধিকার, পালাবি কোথায়, ব্যাচেলর… চলচ্চিত্রগুলো করতে পারবে কিনা তবে তার মৃত্যু বাংলাদেশের অভিনয় শিল্পের জন্য এক অপূরণীয় ক্ষতি।
এই গুণী অভিনেতা আমাদেরকে ছেড়ে চলে গেছেন ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০১২। আজ তার জন্মদিনে তার আত্মার মাগফেরাত কামনা করছি। যতদিন বাংলাদেশ, বাংলাভাষা, বাংলাসংস্কৃতি থাকবে, হুমায়ূন ফরীদি থাকবেন আমাদের হৃদয়ে।