শিপুফরাজী, ভোলা দক্ষিণ প্রতিনিধি: ভোলায় ঘন কুয়াশার কারনে বুধবার সারা দিন সূর্য উঠেনি। কনকনে শীতে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে জনজীবন। প্রচন্ড ঘন কুয়াশের কারনে ভোলাসহ দক্ষিনাঞ্চলে নৌ পথে লঞ্চ চলাচল ব্যহত হয়েছে। অন্যদিকে প্রচন্ড শীতে ঠান্ডায় শিশুদের দেখা দিয়েছে নানা ধরনে রোগ ব্যাধী। ভোলা সদর হাসপাতালে প্রতিদিনই বাড়ছে শিশু রোগীর সংখ্যা। বাড়ছে মৃত্যুর সংখ্যা। সরকারি হিসাবে জেলায় গত আড়াই মাসে মারা গেছে ১২ শিশু।

এদিকে হাসপাতালে সল্প কয়েকটি বেড থাকায় রোগীরা সিট পাচ্ছে না। যার ফলে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে গুরুতর অসুস্থ শিশু রোগীদের।

নদী বেষ্টিত দ্বীপ জেলা ভোলায়   সকাল থেকে সূর্য না উঠায় ঘন কুয়াশায় ও কনকনে শীতে  জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে।

সকালে ঘন কুয়াশার কারণে সূর্যের দেখা মেলেনি। তবে বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে তাপমাত্র বেড়ে যাবে বলে আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে।তীব্র শীতে বেড়িবাঁধ ও উপকূলবর্তী বিচ্ছিন্ন চরাঞ্চলের মানুষের অবস্থা খুবই নাজুক। শীতের তীব্রতা বৃদ্ধি পাওয়ায় শিশুদের নিউমোনিয়াসহ শীতজনিত রোগও বৃদ্ধি পেয়েছে।

আবাহাওয়া অফিসের সূত্র মতে, বরিশাল বিভাগে বুধবার তাপমাত্রা ছিলো ১২ দশমিক শূন্য ডিগ্রি সেলসিয়াস। এর আগে মঙ্গলবার ১২ দশমিক ৫ ও সোমবার ১৩ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস। বরিশাল আবহাওয়া অফিসের সিনিয়র অবজারভার মো ইউসুফ  জানান, এ বছর সর্বনিম্ন তাপমাত্র ছিলো ৯ জানুয়ারি ৮ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এরপর তাপমাত্র বাড়তে শুরু করলেও ফের কমতে শুরু করেছে। আগামী কয়েকদিনে তাপমাত্র আরো কমে যেতে পারে বলেও জানান তিনি।

কনকনে শীতে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন এ এলাকার মানুষ । শিশুদের পাশাপাশি বৃদ্বরা একেবারেই জুবুথুবু হয়ে পড়েছে। ঠান্ডা জনিত রোগে আক্রান্ত হচ্ছে বিভিন্ন বয়সি মানুষ। বিশেষ করে ১ থেকে ৫ বছর বয়সী শিশুরা  নিউমোনিয়া সহ নানা ধরনের রোগে আক্রন্ত হয়ে ভোলা সদর হাসাপতালে প্রতিদিন ভিড় করছে। কিন্তু ভোলা সদর হাসপাতালে প্রযোজনের তুলনায় বেড সংখ্যা মাত্র একশত। এর মধ্যে শিশু ওয়ার্ডে বেড রয়েছে মাত্র ১০টি। মুমুর্ষ শিশুদের হাসপাতালে ভর্তি করা হলে পড়তে হয় চরম দুভোর্গে। বেড না থাকায় এক সিটের মধ্যে দুই তিন জন রোগীকে গাদাড়াদি করে থাকতে হচ্ছে। অস্বস্থ্যকর নোংরা কক্ষে চিকিৎসার জন্য কষ্ট করে থাকলেও প্রয়োজনীয় ঔষধ পাচ্ছে না বলে অভিযোগ করেন রোগীর অভিবাবকরা।

হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানান, নিউমোনিয়াসহ শীত জনিত রোগে গত নবেম্বর মাসে মারা যায় ৬ জন, ডিসেম্বর মাসে ৪ জন, জানুয়ারি মাসে ২ জন সহ এপর্যন্ত মারা গেছে ১২ জন শিশু।

ভোলা সদর হাসপাতালালের শিশু বিশেষজ্ঞ ডাঃ আবদুল কাদের সাংবাদিকদের বলেন, প্রতিদিন ভোলা সদর হাসপাতালে একজন মাত্র শিশু বিশেষজ্ঞ অসংখ্যা শিশু রোগীকে চিকিৎসা দিতে হচ্ছে। তিনি বলেন,হাসপাতালে মাত্র শিশু ওয়ার্ডে ১০টি বেড রয়েছে । এ ছাড়াও রোগির সংখ্যা ৪০/৫০জন। এ কারনে এক বেডে দুই জন করে কষ্ট করে থাকতে হচ্ছে।

এদিকে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ঢাকা থেকে ভোলার উদ্দ্যেশে সহস্‌্রাধিক যাত্রী নিয়ে ভোলার উদ্দ্যেশে রওয়ানা দেয় এমভি বালিয়া ও এমভি লালী লঞ্চ। কিন্তু মেঘনার মল্লিকপুর এলাকায় এমভি বালিয়েসহ দক্ষিনাঞ্চল গামী বহু লঞ্চ চরে আটকা পড়ে। মঙ্গলবার বেলা বাড়ার পর লঞ্চ গুলো চলাচল শুরু করে। এদিকে যথা সময়ে গন্তব্যে পৌছতে না পেরে বহু যাত্রী দুর্ভোগে রয়েছে।

Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here