শিবসা নদী নাব্যতা হারিয়ে মৃত প্রায়মহানন্দ অধিকারী মিন্টু; পাইকগাছা (খুলনা) প্রতিনিধি :: খুলনার পাইকগাছায় ঐতিহ্যবাহী শিবসা নদীর বক্ষে পলি জমে মৃত প্রায়। প্রায় ১০ কিলোমিটার এলাকায় পলি জমে নদী ভরাট হয়েছে। আর নাব্যতা হারিয়েছে শিবসা নদী। প্রায় ৭ বছর নদীতে লঞ্চ, স্টীমারসহ বড় নৌযান চলাচল বন্ধ রয়েছে।

জোয়ারে সময় দু’একটি জোটা নৌকা চললেও ভাটায় বন্ধ রাখতে হচ্ছে। গত দু’বছর ধরে মানুষ পায়ে হেটে নদী পার হচ্ছে। পৌরসভার পানি নিস্কাশনের অন্যতম মাধ্যম শিবসা নদী। পানি নিস্কাশন না হলে আগামীতে চরম বিপর্যয়ের মধ্যে পড়তে পারে পৌরসভাসহ কয়েকটি ইউনিয়নের লোকজন।

আগামী বর্ষা মৌসুমের পূর্বে পানি নিস্কাশনের কোনো ব্যবস্থা না করা হলে এলাকা জলাবদ্ধতায় রূপ নিতে পারে। অতি দ্রুত শিবসা নদী খনন না করলে এ অঞ্চল বসবাসের অযোগ্য হয়ে পড়বে বলে বিজ্ঞ মহলের ধারণা।

সরেজমিনে জানা যায়, উপজেলার শিবসা ও কপোতাক্ষ মধ্যে শিবসা নদীটি উপজেলার বেশী অংশ ঘিরে রেখেছে। নদীটি সমুদ্র হতে উৎপত্তি হয়ে গড়ইখালী ইউনিয়নের গা ঘেঁষে লস্কর-সোলাদানা ইউনিয়নের পার্শ্ববর্তী এলাকা দিয়ে রাড়-লী ইউনিয়নের সন্নিকটে কপোতাক্ষ নদের সাথে মিশেছে।

অপর অংশ সোলাদানা, দেলুটি ও লতা ইউনিয়নের গা ঘেঁষে পাইকগাছা পৌরসদরের পার্শ্ব দিয়ে শিববাটী নামক স্থানে শিবসার অপর অংশের সাথে মিলে গেছে। এই দু’নদী দিয়ে এক সময় লঞ্চ, স্টীমারসহ সকল প্রকার নৌযানে করে মানুষ খুলনাসহ বিভিন্ন এলাকায় যাতায়াত করত।

কিন্তু কালের বিবর্তনে উপজেলার সোলাদানা হতে পৌর সদরের গা ঘেঁষে শিববাটী পর্যন্ত প্রায় ১০ কিলোমিটার নদী পথে পলি জমে ভরাট হতে চলেছে। খরস্রোত না থাকায় নদীটি নাব্যতা হারিয়েছে। পলি জমে নদীটি ভরাট হওয়ায় মানুষ পায়ে হেটে নদী পারাপার করছে।

এই দীর্ঘ নদী পথের দু’ধারে ভেঁড়ি বাঁধে ৮/১০টি স্লুইজ গেট থাকলেও নদীর নাব্যতা হারানোর কারণে তা অকেজো হয়ে রয়েছে। নেই নদীতে কোন স্রোত। জোয়ারের সময় পলি জমে আস্তে আস্তে ভরাট হতে হতে পৌর সদরের ভিতরের অংশ থেকে নদীর তলদেশ উঁচু হয়েছে।

বিশেষ করে পৌর সদরের বাতিখালীর পূর্ব হতে শিবসা ব্রিজ হয়ে শিববাটী ব্রিজ পর্যন্ত প্রায় ৪ কিলোমিটার নদীটি সম্পূর্ণরূপে ভরাট হয়ে গেছে। ভাটার সময় মানুষ নৌকার পরিবর্তে পায়ে হেটে নদী পারাপার করে। পৌর সদরসহ কয়েকটি ইউনিয়ন একই ভেঁড়িবাঁধের অভ্যন্তরে অবসি’ত হওয়ায় এখানকার পানি নিস্কাশনের কোনো ব্যবস্থা নাই।

বিশেষ করে, বৃষ্টি হলেই অত্র এলাকায় জলাবদ্ধতা দেখা দেয়। আগামী বর্ষা মৌসুমের পূর্বেই নদীটি খনন না করলে পৌর সদরসহ অত্র এলাকায় জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হবে। ফলে, মানুষের বসবাসের অযোগ্য হয়ে পড়বে এ অঞ্চল।

Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here