কুয়াকাটা ভ্রমন::  অনেক দিন ধরেই অর্পণকে নিয়ে বেড়াতে যাওয়ার সুযোগ খুঁজছিলাম ছুটি স্বল্পতায় মাঝে মধ্য ঢাকার আশে-পাশে গিয়েছি। কিন্তু দূরে কোথাও যেতে পারিনি হয় আমার সুযোগ হলেও শিল্পীর ছুটি হয় না অথবা অর্পণের স্কুল খোলা থাকে ; যাই হোক পূজার ছুটিতে এমনই একটি সুযোগ হলো, অফিস থেকে দু’দিনের ছুটি সাথে একদিন ডে অফ। আগের দিন ভোরে ডিউটি করে অর্ধ বেলা হাতে পাওয়া মন্দ কি সাড়ে তিনদিন ছুটির ব্যবস্থা তো হলো! আমার পৃথিবী বলতে তিনজনের একটি সুষমা পৃথিবী, এখানে মতামত সম্পূূর্ণ গনতান্ত্রিক। মতামত আসলো কুয়াকাটায়ই যাব। যোগাযোগের দায়িত্ব শিল্পী নিজেই নিলো ওর অফিস কলিক ছোট ভাই বাবুকে দিয়ে হোটেল ভাড়া, পটুয়াখালীতে যাওয়ার লঞ্চের কেবিন সবই অল্প সময়েই ব্যবস্থা করা হলো।
বলে রাখা ভাল, ঢাকা থেকে কুয়াকাটা সরাসরি বাসে অথবা পটুয়াখালী পর্যন্ত নৌপথে দু’ভাবেই যাওয়া যায়, তবে বেশ আরাম করে অত্যাধুনিক লঞ্চে ফ্যামলি কেবিনে করে যাওয়াটাই বেশী আনন্দদায়ক।

যাত্রা শুরু করলাম সদরঘাট থেকে সুন্দরবন-১১ লঞ্চে। চমৎকার একটি নৌভ্রমন হয়ে গেল, অর্পণ যে কি খুশি ! বলতে গেলে সারা রাত সে কেবিনের বাইরেই কাটিয়ে দিল, বিশাল লঞ্চে সে সারাক্ষনই দৌড়াদৌড়ি বাবা-মাকে লঞ্চের সামনের খোলা ডেকে বসে চাঁদনি রাতে একটু সময় বসে গল্প শোনা, আবার উঠে দোতলায় ক্যন্টিানে যাওয়া কখনোবা কেবিনে দাপাদাপি এভাবেই তার আনন্দ প্রকাশ। বলতে গেলে এটাই আমার কাছে সবচেয়ে বড় পাওয়া। রাতের খাবার লঞ্চেই খেলাম,আগেই অর্ডার নেয় কেবিনবয়, ম্যানু অনুযায়ী খাবার কেবিনেই সরবরাহ করলো, কিন্তু সমস্যা হল রাতে বিজলী বাতির আলোতে প্রচুর পোকা আসে তাই আমরা বাতি নিভিয়ে টেলিভিশনের আলোতেই খাবার খেলাম। রাত দু’টোর দিকে একটু ঘুমালাম, উঠে দেখি সরু খাল দু’পাশে বনের ভিতর দিয়ে লঞ্চ চলছে, হালকা আলো আধারিতে এক অন্যরকম ভাল লাগায় পেয়ে বসলো, এমন রাতে নাইবা ঘুমালাম। লঞ্চের রেলিং এ তিনটি রাতজাগা তন্দ্রাহারা প্রানী অচেনা এক মোহাবিষ্টে আচ্ছন্ন।

ধবল জোৎসনার পুলকিত রাত্রি শেষে প্রভাতের ম্লান আলোয় নদীর দু’ধারের গাছগুলোকে ছায়ামূর্তিই মনে হচ্ছিল, গাছের ঘনত্ব যেখানে শেষ দৃশ্যপটে চলে আসে ধান ক্ষেত,জেলেদের ঘর নদী পাড়ের কুড়ে ঘরের আবছা উঠোন, সেই গ্রাম ; যেন আপন ঘর,যেখানে হাসি কান্না স্বপ্নদের বসবাস। নদীবিধৌত সমতল ভূমির চিত্র যেন একই রঙে, একই তুলিতে এঁকেছেন কোন নিপূন চিত্রকর। সেই ছবিতে আলোর প্রক্ষেপণে হয়ে উঠে মায়াবী এক অপার্থিব প্রতিচ্ছবি, হারিয়ে যাই কল্পনার রাজ্য সম্মিত ফিরে পাই দুরে থেকে ভেসে আসা ফজরের আযানের ধ্বনি। পুব আকাশে তারাদের মিট মিট আলোর নিস্তেজতায় বুঝা যায় সকাল হতে বেশী দেরী নাই। তাই লঞ্চ থেকে নামার প্রস্তুতি নেই, আমরা সম্ভবতঃ ভোর চারটা নাগাদ পৌঁছে গেলাম পটুয়াখালী লঞ্চ টার্মিনালে। কেবিনে নিজেরা একটু হালকা নাস্তা করে বের হয়ে মুগ্ধ নয়নে তাকিয়ে দেখি শত শত পাখীদের কুঞ্জন, সবচেয়ে বেশী দেখলাম ধান শালিক, ফেচুয়া, দোয়েল, গাঙচিল, এমন দৃশ্য এই প্রথম দেখা। অর্পণ তো চঞ্চল হয়ে উঠলো পাখি ধরবে বলে। তখনো ভোরের আলো ফুটেনি অপেক্ষা করলাম কিছুক্ষন পর ৬টার দিকে লঞ্চ থেকে নেমে অটোতে করে বাসস্ট্যন্ডে গেলাম, পটুয়াখালীর বাংলাভিশনের প্রতিনিধি বাপ্পা ভাইকে আগেই জানিয়েছিল শিল্পী আমরা আসছি।

এসে দেখি বাপ্পা ভাই আমাদের জন্য অপেক্ষা করছেন, বাসের কন্ডিশন খুব একটা ভাল না তাই বাপ্পা ভাই আমাদের বাসে উঠতে দিলেন না, আমাদের জন্য একটি কার এর ব্যবস্থা করে আমাদের নিয়ে নাস্তা সেরে ভাবীসহ আমাদের কুয়াকাটায় হোটেলে পৌঁছে দিলেন। পটুয়াখালী থেকে কুয়াকাটার দূরত্ব ৭০কিঃমিঃ এর মধ্য বর্তমানে দু’টো ফেরি পার হতে হয় কলাপাড়া ও হাজীপুর ফেরি,কয়েক মাস আগে মহিপুর ব্রিজ উদ্বোধন হওয়াতে এখন দু’টো ফেরী পাড় হতে হয়। বাকী ব্রিজ দুটোর কাজও প্রায় শেষ, এখন শুধু উদ্বোধনের অপেক্ষা। রাস্তার অবস্থা মোটামুটি ভাল। মূলতঃ দক্ষিনবঙ্গে অসংখ্য নদীর প্রবাহ তাই যাত্রাপথেই নদীপারের জেলেদের জীবন জীবিকা, নদী- প্রকৃতি দেখে অবিভূত হলাম। আমরা যতই কুয়াকাটার দিকে যেতে থাকলাম ততই পাল্টাতে থাকলো আশেপাশের দৃশ্য। দেখাতে পেলাম সাগরে মাছ ধরার ট্রলার হয়তো সাগর থেকে ফিরে নদীতে নোঙর করে আছে ; নদী থেকে দূরে ম্যানগ্রোভ বনের তটরেখা দেখা যায়। মাছ কেন্দ্রিক এখানকার জীবন জীবিকা, বেশ কিছু ফসলী জমিও চোখে পড়লো।
খেয়ালী মনে স্বপ্নে বসবাস করা মানুষ আমি। চারপাশটা নিজের করে দেখাটা আমার ছেলেবেলা থেকেই স্বভাবে পরিনত হয়েছে। অনন্তের পথে চলতে গিয়ে বিশাল সাগরের তটরেখায় পদচিহ্ন এঁকে দেয়ার অদম্য ইচ্ছাকে উস্কে দিল শিল্পী (আমার বউ)। তাই তো কুয়াকাটায় সাগর দেখার পরিকল্পনাকে লুফে নিলাম। নিজের প্রবৃত্তির সাথে জীবনবোধ যদি একাকার হয়ে যায় তাহলে জীবনকে আরো গভীর ভাবে উপলব্ধি করা যায়।

আমি কোন লেখক নই, স্রেফ পাঠক ; একজন পাঠকের লেন্সে প্রকৃতিকে দেখা এবং তা প্রকাশ করা সত্যিই কঠিন কাজ। পূর্ব আলোচনায় ছিলাম পটুয়াখালী থেকে কুয়াকাটার রাস্তায়, হ্যাঁ আমরা কুয়াকাটায় এসে পৌঁছলাম বেলা ১২টার দিকে। শিল্পীর সহকর্মি ছোট ভাই বাবু, ভাল গাইড কাম মোটর সাইকেল চালক কবিরকে ঠিক করে রেখেছিল আগেই। আর আমি ঢাকা থেকে বেরুনোর আগেই জিটিভির কুয়াকাটা প্রতিনিধি মনির ভাইকে বলেছিলাম আমার আসার কথা, উনি একটু অভিমানই করেছেন, আগে কেন জানালাম না ; আমি বরাবর এমনই সহজে পরিচিতদের সাহায্যে নেই না।

গাইড কবির আমাদের জন্য হোটেল বুকিং রেখেছিল “হোটেল বনানী প্যালেস ” এ। পূজা ও মহরমের ছুটি সহ তিনদিনের ছুটি তাই পর্যটকদের চাপ ছিল বেশ।আগে না বল্লে হয়তো ভাল মানের হোটেল পাওয়া কষ্টই হতো। যাই হোক, আমরা প্রথমেই গাড়ীসহ বীচের কাছে পয়েন্টে গেলাম, নেমেই প্রথমে টাটকা ডাউস ডাব খেলাম তৃপ্তি সহকারে , এত বড় ডাব দাম মাত্র ২০ টাকা, পানি খেতেও বেশ মিস্টি। লাগেজ হোটেলে রেখে একটু গোসলের কাপড় পড়ে নেমে পড়লাম সাগরে ; একটা বিষয় খেয়াল করলাম কক্সবাজারের মতো এখানে এতো ঢেউ নেই, তবুও বীচ খারাপ লাগেনি। পর্যটকদের ভীড়, প্রানচাঞ্চল্যে মুখরিত ছিল সাগরকন্যার তটভূমি।

বিশাল সমুদ্রের নীল জলরাশি দোলনার মতো যখন দুলে দুলে তীরে আসতে থাকে তখন পূর্ব আকাশে সূর্যের হালকা রক্তিম বৃত্তটা ক্রমেই স্পষ্ট হতে থাকে। তখন প্রথম সূর্যোদয়ের আলোতে আলোতিক হয়ে পাল্টে যায় কুয়াকাটার সমুদ্রের নীলাভ জল বর্ন। লাল বর্ণ সূর্যটা অল্পক্ষণের মধ্যেই পূর্ণ বৃত্তে রূপ নেয়। এই নতুন সূর্য পুব আকাশে নিয়ে আসে এক অপরূপ শোভা। আকাশের ক্যানভাসে সদ্য ওঠা সূর্য, নিচে সমুদ্রের নীল জল, সুদীর্ঘ বেলাভূমি আর পাশে ঘন সবুজ ঝাউবনের সমন্বয়ে কুয়াকাটা সৈকত ফিরে পায় অপরূপ সৌন্দর্য। পর্যটন কেন্দ্র কুয়াকাটা সৈকতের ভোরের সর্যোদয়ের বাস্তব রুপচিত্রের এ বর্ননা। যা শুধু কল্পনার ক্যানভাসেই আঁকা যায়। বেলা গড়িয়ে সূর্যাস্তের দৃশ্য কুয়াকাটা সৈকতের আরেক সৌন্দর্য নিয়ে আসে। গোধূলিতে পাখির কিচির-মিচির শব্দ সূর্যাস্তের দৃশ্যটা আরও আকর্ষণীয় করে তোলে। আমি ও শিল্পী নামার আগেই অর্পণ পানিতে নেমে গেল, ওর তর সইছিল না। এমনিতেই আমার ছেলে পানি দেখলে উচ্ছ্বসিত হয়ে উঠে তার মধ্যে বাবা-মা সহ সাগরে নামা। অনেকক্ষন গোসল করলাম তিনজনে ছবি তুললাম তারপর আবার হোটেলে এসে ভাল ভাবে গোসল সেরে ফ্রে্শ হয়ে আমরা অথাৎ সাংবাদিক বাপ্পা ভাই, ভাবী ও ড্রাইভার সহ “খাবার ঘর” রেস্টুরেন্টে
দুপুরের খাবার সেরে নিলাম। তাঁজা ইলিশ, কোরাল মাছ সাথে ঐতিহ্যবাহী কুয়াকাটার লইট্টার শুটকী ভুনা ; ভুরিভোজ জমপেশ হলো।খাবারের দাম মাননুযায়ী খুব একটা বেশী নয়। বাপ্পা ভাইদের বিদায় দিয়ে গাইড কবিরকে জিগ্যাস করলাম কোথায় যাব ?

বল্লো চলেন লেবুবন যাবেন, সেখানে লাল কাকড়া আস্ত সাদা ঝিনুক দেখতে দেখতে সূর্যাস্তের সময় হয়ে যাবে, তার পর লেবুতলার মাছ কাকঁড়া খেয়ে রাতে চলে আসবেন।মোটর সাইকেলে সৈকতে ঘুরার যে আনন্দ তা লিখে প্রকাশ করার মতো বিদ্যা আমার নাই। চার পাশে শুধুই মগ্ধতা, যেতে যেতেই চোখে পড়ে সৈকতের শুকনোয় উঠানো জেলে নৌকা সারি সারি, পথে পড়ে শুটকী পল্লী।কুয়াকাটা বীচ পয়েন্ট থেকে প্রায় তিন কিঃমিঃ পশ্চিমে লেবু বন; একচিলতে ম্যানগ্রভ ফরেস্ট,অপূর্ব সব গাছ আর গাছের গুড়ি আর শেকড়ের শৈল্পিক বিন্যাস। দেখলাম লাল কাকঁড়ার দৌড়াদৌড়ি, সাদা আস্ত ঝিনুকের ছড়াছড়ি ঐ দূরে ফাতরার বন, এক সময় সূর্য লাল আলো ছড়িয়ে পশ্চিমাকাশে ডুব দিল। সূর্য অস্ত খুব করে দেখলাম আমরা। বেশ হাটাঁহাটিতে ক্ষুধা পেয়েছে অর্পণের, আমরা এবার মোটর সাইকেলে লেবুতলায় সৈকতের পাশেই খোলা রেস্টুরেন্টে মাছ ও কাকঁড়া খেতে আসলাম। জীবনে এই প্রথম কাকঁড়া খাওয়া। অনেক বছর আগে সিঙ্গাপুরে আমার বড় ভাই অনেক চেষ্টা তদবীর করেও কাঁকড়া খাওয়াতে পারেনি। ওদের দেশের ঐ কাঁকড়াগুলো একটু নীলাভ আর আকারে বেশ বড় ছিল ; দেখেই কেন যেন ভয় ভয় লাগছিল। তখন বয়স কম ছিল ভয় রুচির ভিন্নতা হয়তো ছিল। আমরা ওখান থেকেই তাজা কাঁকড়া ও মাছ কিনে ভাঁজতে দিলাম ; অনেকটা বারবিকিউ করার আনন্দ। চমৎকার করে ভেঁজে আনলো মাছ, কাঁকড়া। খুব করে খেলাম। ইতিহাস ঐতিহ্যে কুয়াকাটা নামের পেছনে রয়েছে আরকানীদের এদেশে আগমনের সাথে জড়িত ইতিহাস। ‘কুয়া’ শব্দটি এসেছে ‘কুপ’ থেকে। ধারণা করা হয় ১৮ শতকে মুঘল শাসকদের দ্বারা বার্মা থেকে বিতারিত হয়ে আরকানীরা এই অঞ্চলে এসে বসবাস শুরু করে। তখন এখানে সুপেয় জলের অভাব পূরণ করতে তারা প্রচুর কুয়ো বা কুপ খনন করেছিলনে, সেই থেকেই এই অঞ্চলের নাম হয়ে যায় কুয়াকাটা।
প্রায়১৮ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের সমুদ্রসৈকত কুয়াকাটা বাংলাদেশের অন্যতম নৈসর্গিক স্থান। বাংলাদেশের এটাই একমাত্র সৈকত যেখান থেকে সূর্যোদয় এবং সূর্যাস্ত দুটোই ভাল দেখা যায়, সব চাইতে ভালোভাবে সূর্যোদয় দেখা যায় সৈকতের গঙ্গামতির বাঁক থেকে আর সূর্যাস্ত দেখা যায় পশ্চিম সৈকত থেকে। কুয়াকাটাতে দেখার মত অনেক দর্শনীয় স্থান রয়েছে কুয়াকাটায় সেগুলো হলো- ফাতরার বন: সমুদ্রসৈকতের পশ্চিম দিকে ম্যানগ্রোভ বন শুরু হয়েছে, যার নাম ফাতার বন। সংরক্ষিত বনভুমি ফাতরার বন ইতিমধ্যে দ্বিতীয় সুন্দরবন হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছে। এখানে রয়েছে কেওড়া, গেওয়া, সুন্দরী, ফাতরা, গরান, বাইন, গোলপাতা ইত্যাদি ম্যানগ্রোভ প্রজাতির উদ্ভিদ এবং বানর, শূকরসহ অসংখ্য জীবজন্তু ও পাখি। সমুদ্রসৈকত থেকে ইঞ্জিনচালিত বোটে এক ঘণ্টার যাত্রাপথে ফাতরার বনে যাওয়ার ব্যবস্থা রয়েছে।
কুয়াটারা ‘কুয়া’: কুায়াকাটা সমুদ্রসৈকতের কাছে রাখাইন পল্লী কেরানীপাড়ার শুরুতেই একটা বৌদ্ধ মন্দিয়ের কাছে রয়েছে প্রাচীন কুপ গুলোর মধ্যে একটি কুপ। তবে বারবার সংস্কারের কারণে এর প্রাচীন রূপটা এখন আর খুঁজে পাওয়া যায় না।
সীমা বৌদ্ধ মন্দির: কুয়াকাটার প্রাচীন কুয়াটির সামনেই রয়েছে প্রাচীন একটি বৌদ্ধ মন্দির, নাম সীমা বৌদ্ধ মন্দির। প্রাচীন এই মন্দিরে রয়েছে প্রায় সাঁইত্রিশ মন ওজনের অষ্ট ধাতুর তৈরি ধ্যানমগ্ন বুদ্ধের মূর্তি।
কেরানিপাড়া: সীমা বৌদ্ধ মন্দিরের সামনে থেকেই শুরু হয়েছে রাখাইন আদিবাসীদের পল্লী কেরানিপাড়া। এখানকার রাখাইন নারীদেও প্রধান কাজ কাপড় বুনন।
আলীপুর বন্দর: কুয়াকাটা থেকে প্রায় চার কিলোমিটার উত্তরে রয়েছে দক্ষিণাঞ্চলের অন্যতম বড় একটি মাছ ব্যবসা কেন্দ্র আলীপুর। এ বন্দর থেকে প্রতিদিন শত শত ট্রলার বঙ্গোপসাগরে যায় মাছ ধরতে।
মিশ্রিপাড়া বৌদ্ধ মন্দির: কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকত থেকে প্রায় আট কিলোমিটার পূর্বে রাখাইন আদিবাসীদের আরকেটি বাসস্থল মিশ্রিপাড়ায় রয়েছে আরেকটি বৌদ্ধ মন্দির। এ মন্দিরেই রয়েছে উপমহাদেশের সবচেয়ে বড় বৌদ্ধ মূর্তি। এখান থেকে কিছু দূরে আমখোলা পাড়ায় রয়েছে এ অঞ্চলের সবচেয়ে বড় রাখাইন বসতি।
গঙ্গামতির জঙ্গল: কুয়াকাটা সুমুদ্র সৈকত পূব দিকে শেষ হয়েছে গঙ্গামতির খালে গিয়ে। আর এখানে থেকেই শুরু হয়েছে গঙ্গামতি গজমতির জঙ্গল। বিভিন্ন রককম গাছপালা ছাড়াও এই জঙ্গলে দেখা মিলতে পারে বন মোরগ, বানর ও নানা রকম পাখির।
সৈকতের ঝাউ বন থেকে কিছু দূরেই রয়েছে কুয়াকাটা ইকো পার্ক । খুব ই নয়নাভিরাম পার্ক । এছাড়া কুয়াকাটা থেকে ট্রলারে করে সাগরের মাঝখান থেকে ঘুরে আসতে পারেন কিছু সময়ের জন্য সাথে দুধের সাধ ঘোলে মেটানোর মত দেখে আসতে পারবেন সুন্দরবনের কিছু অংশ। বনের কাছেই রয়েছে জেলে পল্লী স্থানীয়দের কাছ থেকে কিনতে পারেন সাগরের তাজা মাছ অথবা রোদে শুকানো ফ্রেশ শুটকী।

Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here