সৈকত দত্ত, শরীয়তপুর প্রতিনিধি :: শরীয়তপুরে একটি স্কুলের জমি বিক্রির টাকা আত্মসাতের অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশনের করা মামলায় শরীয়তপুর জেলা আওয়ামীলীগ সভাপতি ও পৌর মেয়র আবদুর রব মুন্সি সহ ১২ জনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে আদালত।
শরীয়তপুর জেলা ও দায়রা জজ মো. আতাউর রহমান গত মঙ্গলবার এ গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির আদেশ দেন।
সদর উপজেলার আঙ্গারিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের তিন একর ৭১ শতক জমি বিক্রির টাকা আত্মসাতের অভিযোগে ওই মামলা করে দুর্নীতি দমন কমিশন-দুদক। মঙ্গলবার মামলায় শুনানির নির্ধারিত দিনে আসামিরা আদালতে হাজির না হলে আইনজীবীর মাধ্যমে সময় আবেদন করেন। আদালত তা নাকচ করে সব আসামির বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে। একইসঙ্গে বিচারক আগামী ১৩ জুলাই মামলা শুনানির পরবর্তী দিন রেখেছেন বলে ওই আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর মীর্জা হজরত আলী জানান।
পরোয়ানা পাওয়া আসামিরা হলেন, জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি, শরীয়তপুর পৌর মেয়র ও বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি আবদুর রব মুন্সি, শরীয়তপুর সদর উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি ও চিতলীয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটির সদস্য আঃ ছালাম হাওলাদার, বিদ্যালয়ের সদস্য সচিব ও প্রধান শিক্ষক আনোয়ার কামাল, উপসহকারী ভূমি কর্মকর্তা মজিবুর রহমান হাওলাদার, বিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষক আইউব আলী মল্লিক, আ. কুদ্দুস মোল্লা, শিক্ষক রনজিৎ কুমার সাহা, সুজন সাহা, সংগীতা সাহা, বেগম আলফাতুন্নেছা, জমির ক্রেতা জাহাঙ্গীর আলম ও আব্দুস সালাম।
এরই ধারাবাহিকতায় রবিবার জেলা আওয়ামীলীগের পক্ষ থেকে দুর্নীতি দমন কমিশনের মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। সকাল ১০টায় জেলার প্রতন্ত অঞ্চল থেকে আসা আওয়ামীলীগের নেতৃত্বে প্রায় ৩/৪ হাজার মানুষ শরীয়তপুর শহরের প্রধান সড়ক চৌরঙ্গি মোড় থেকে শুরু করে শরীয়তপুর পৌর সভা, কোর্ট সংলগ্ন এলাকা হয়ে জেলা প্রশাসকরে কার্যালয়ে মানুষে লোকারন্ন হয়ে যায়। কোথাও পা ফেলার জায়গাটুকু ছিল না। শহরের প্রধান সড়কে প্রায় ৩ ঘন্টা রাস্তায় দাড়িয়ে মানববন্ধন ও দুদকের মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে সেৱাগান দেওয়া হয়।
মানববন্ধন শেষে জেলা প্রশাসনের কার্যালয়ের সামনে এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। আলোচনা সভায় উপস্থিত ছিলেন শরীয়তপুরের কৃতি সন্তান, মাটিও মানুষের নেতা ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় উপ-কমিটির সহ-সম্পাদক ইকবাল হোসেন অপু, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় উপ-কমিটির সহ-সম্পাদক মানিক ব্যার্ণাজি, জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোশারফ হোসেন তোতা মাঝি, জেলা আওয়ামী লীগের ত্রাণ বিষয়ক সম্পাদক উজ্বল আকন, জেলা আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক আজিজুল হক পাহাড়, পৌর সভা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সেলিম মাষ্টার, জাজিরা উপজেলার চেয়ারম্যান মোবারক আলী সিকদার, শরীয়তপুর সদর উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান ফাতেমা আক্তার শিল্পী, শরীয়তপুর পৌরসভার প্যানেল মেয়র ও ১নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর সাইফুর রহমান রাজ্জাক, প্যানেল মেয়র ও ৯ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর সঞ্জিব নাগ, জেলা বাস মিনি বাস মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ফারুক আহম্মেদ তালুকদার, জেলা যুব লীগের সাধারণ সম্পাদক নুহুন মাদবর, জেলা ছাত্র লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও জেলা অটো বাইক ও অটো টেম্পু মালিক সমিতির সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান পাহাড়, জেলা অটো বাইক ও অটো টেম্পু মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মোঃ শাহ্জাহান মাঝি, সদর উপজেলা শ্রমিক লীগের সাধারণ সম্পাদক মোঃ বাচ্চু বেপারী, র্বদ্রকর ইউপি চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমান ঢালি, ডোমসার ইউপি চেয়ারম্যার মোঃ মজিবুর রহমান, সদর উপজেলা যুব লীগের সাধারণ সম্পাদক বিলরুল হোসেন দিপু, জেলা ছাত্র লীগের সাবেক বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক জামাল ফকির, শরীয়তপুর পৌর ৩নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মোঃ ছালাম বেপারী, কাউন্সিলর সামাদ বেপারী, ৭, ৮ ও ৯ নং ওয়ার্ড মহিলা কাউন্সিলর ইমু আক্তার, জেলা মহিলা আওয়ামী লীগ যুগ্ম আহবায়ক সামিনা ইয়াছমিন, সাবেক জেলা ছাত্র লীগের সহ-সভাপতি সাখায়াত হাওলাদার সহ শরীয়তপুর জেলা শিক্ষক সমিতির নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
এছাড়াও মানববন্ধনে শরীয়তপুরের বিভিন্ন স্কুল কলেজের ছাত্র/ছাত্রীরা উপস্থিত ছিলেন। সভা থেকে শরীয়তপুর জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতিসহ ১২ জনের বিরুদ্ধে দুদকের মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানানো হয় ও মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে জেলা প্রশাসকের বরাবর স্মারক লিপি প্রদান করা হয়।