খোরশেদ আলম বাবুল।

shariatpur-setu-pic-2শরীয়তপুর: শরীয়তপুরের প্রধান তিনটি সড়কে সেতু ভেঙ্গে যোগাযোগ বন্ধ হয়ে গেছে। আন্ত:জেলাসহ অভ্যন্তরীন যোগাযোগ ব্যবস্থা প্রায় অচল হতে চলেছে। চরম ভোগান্তিতে পরেছে সাধারন মানুষ। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ যোগাযোগ সচল রাখতে নানা পদ্ধতি অবলম্বন করছে। স্থায়ী সমাধানের জন্য প্রকল্প গ্রহন করছেন কর্তৃপক্ষ।

শরীয়তপুর আঞ্চলিক মহা-সড়কের শরীয়তপুর-চাঁদপুর সড়কের বালার বাজার বেইলী ব্রীজের মাঝখানের স্প্যান ভেঙ্গে ২৮ অক্টোবর রাত সাড়ে আটটায় মালবাহী ট্রাক পড়ে যায়। সেই থেকেই দেশের দক্ষিনাঞ্চলের চট্টগ্রাম-খুলনা-মংলা-বরিশালের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পরেছে। জানা গেছে এ বেইলী ব্রীজটি সড়ক ও জনপথ বিভাগের।

ইতোপূর্বে নড়িয়া ও ভেদরগঞ্জ উপজেলাবাসীর সড়ক পথে ঢাকার সাথে যোগাযোগের মাধ্যম একমাত্র সড়কের নড়িয়া উপজেলার কৃর্ত্তিনাশা নদীর সেতু ভেঙ্গে প্রায় ৬ মাস যাবৎ সড়ক যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে। এ কারণে জাজিরা, নড়িয়া, সখিপুর ও ভেদরগঞ্জের প্রায় ৫ লক্ষ মানুষ ভোগান্তির শিকাড় হচ্ছে।

শরীয়তপুর সদর উপজেলার তুলাসার, বিনোদপুর, মাহমুদপুর, চিকন্দী, চনদুপুর, ডোমসার ইউনিয়ন সহ মাদারীপুরের শিবচর উপজেরার সাথে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়েছে রাজগঞ্জ ও আড়িগাঁও বাজারের মধ্যবর্তী কৃর্ত্তিনাশা নদীর সেতু ভেঙ্গে। বর্তমানে প্রায় ২ লক্ষ মানুষের যোগাযোগের মাধ্যম হলো একটি বাঁশের সেতু। জানা যায় এ দু’টি সেতু স্থানীয় সরকার প্রকৌশলী বিভাগ (এলডিইডি)’র।

সড়ক ও জনপথ কার্যালয় থেকে জানা যায়, বেইলী ব্রীজ ভেঙ্গে পড়ার পরপরই গোপালগঞ্জ সড়ক সার্কেল থেকে সরঞ্জাম আনা হয়েছে। ভেঙ্গেপড়া অংশ সরিয়ে নেয়ার কাজ চলছে। খুব শীঘ্রই সড়কটি সচল হবে।

এলজিইডি থেকে পাওয়া তথ্যে জানা যায়, দু’টি সেতু ভেঙ্গে যোগাযোগ ব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন হওয়ার বিষয় চীফ ইঞ্জিনিয়ার পর্যন্ত জানে। এ সকল বিষয়ে ডিজাইন হচ্ছে। খুব শীঘ্রই কার্যক্রম শুরু হবে।

গাড়ি চালকেদের সাথে আলাপ কালে জানাযায়, জেলার বেশিরভাগ সড়কই খানাখন্দে ভরা। বিভিন্ন সময় যত্রতত্র গাড়ি বিকল হয়ে পড়ে। এর পরেও আবার প্রধান ৩টি ব্রীজ ভেঙ্গে পড়ায় যোগাযোগ ব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। এখন তাদের আয় রোজগার কমে গেছে। খুব শীঘ্রই ব্রীজ মেরামত করে যোগাযোগ ব্যবস্থা সচল করতে হবে। নয়তো আমাদের পেশা পরিবর্তন করবো।

যাত্রীদের সাথে আলাপ কালে জানায়, গনত্মবে পৌঁছতে একই গাড়ি ব্যবহার করা হতো। এখন বারবার বাড়ি পরিবর্তন করতে হয়। এতে সময় ও অর্থ দুটোই অপচয় হয়। সংশিস্নষ্ট কর্তৃপক্ষের নিকট তারা আবেদন জানাচ্ছে যেন সকল সেতু ও সড়ক গাড়ি চলাচলের উপযোগী করে চলার পথ সুগম করে।

স্থানীয় সরকার প্রকৌশলী বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী সাজ্জাদ হোসেন বলেন, রাজগঞ্জ বাজার এলাকার কৃর্ত্তিনাশা নদীর ব্রীজের পশ্চিম পাড়ের এ্যাপ্রোজ অল্প সময়ে ভেঙ্গে পরে। জনসাধারনের চলাচলের জন্য বাশের পুল করে দিয়েছি। গাড়ি চলাচলের জন্য বেইলী সিস্টেম করে দিব। কোথাও কোন অকেজ বেইলী সেতু পেলে দ্রুত স্থাপন করা হবে। তাহলে গাড়িও চলাচল করতে পারবে। প্রকল্প তৈরী করে স্থায়ী সমাধান করতে প্রায় ২ বছর লাগতে পারে।

নড়িয়ার ব্রীজের পূর্বপাশের পিলারের নিচে শূন্য হয়ে গেছে। তাই ভারি কোন যান চলাচল করতে পারবে না। ওইখানে একটা ২ লেনের নতুন ব্রীজ করতে হবে। আপদকালীন সময়ে হালকা যান ও মানুষের চলাচলের জন্য ভাঙ্গা অংশে বেইলী করা হয়েছে। যেহেতু ব্রীজটি জরুরী তাই জরুরী ভিত্তিতে ডিজাইন দেওয়া হয়েছে।

সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মিন্টুর ঞ্জন দেবনাথ বলেন, ২৮ অক্টোবর শুক্রবার রাতে বেইলী সেতু ভেঙ্গে ট্রাক পরে যায়। ট্রাক উদ্ধার পরবর্তী ভেঙ্গে পরা সেতু খুলি। গোপালগঞ্জ থেকে সরঞ্জাম নিয়ে আসা হয়েছে। দ্রুত ব্রীজের কাজ চলছে। কবে নাগাদ ব্রীজের কাজ শেষ হবে তা বলা যাবে না। তবে আমরা আন্তরিক। যত দ্রুত সম্ভব ব্রীজের কাজ সমাপ্ত করবো।

 

Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here