ইয়ানূর রহমান ::
যশোর সদর উপজেলার চুড়ামনকাটির ছাতিয়ানতলা মল্লিকপাড়ায় ভুয়া চিকিৎসক খন্দকার কবীর হোসেনের অপচিকিৎসার শিকার এক নারী মারা গেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। কবীরের দেন দরবারে বিষয়টি এতোদিন গোপন থাকলেও এখন ফাঁস হয়ে পড়েছে। ওই রোগীর কেমোথেরাপি ছাড়াই ক্যান্সার নিরাময়ে শতভাগ গ্যারান্টি দিয়ে ৭০ হাজার টাকা হাতিয়ে চিকিৎসা দিয়েছিলেন কবীর। এ ঘটনায় মৃতের জামাই ছাতিয়ানতলা দক্ষিণপাড়ার মিঠু চাকলাদার চুড়ামনকাটি ইউনিয়ন পরিষদে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন।
মিঠু চাকলাদার জানান, আমার শ্বাশুড়ি ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার হেলা গ্রামের নওয়াব আলীর স্ত্রী সুখজান বেগম (৬৫) ক্যান্সারে আক্রান্ত হন। হতাশ হয়ে চিকিৎসার ব্যাপারে পরামর্শের জন্য ৩ মাস আগে ছুটে যান ছাতিয়ানতলা মল্লিক পাড়ার ননী ফল নার্সারির মালিক ডাক্তার পরিচয়দানকারী খন্দকার কবীর হোসেনের কাছে। সব কিছু শুনে তিনি (কবীর) কেমোথেরাপি ছাড়াই ক্যান্সার সেরে যাবে বলে শতভাগ গ্যারান্টি দেন। চিকিৎসা বাবদ ১ লাখ টাকা চুক্তি করেন কবীর।
মিঠু চাকলাদার আরও জানান, চিকিৎসা নেয়ার সময় তাকে ৭০ হাজার টাকা দেয়া হয়। ক্যান্সার সেরে গেলে বাকি ৩০ হাজার টাকা দিতে চেয়েছিলেন তারা। কবীরের কথা মতো রোগীকে হাসপাতালে ভর্তি না করে বাড়িতে রেখে কবীরের দেয়া ওষুধ খাওয়ানো হচ্ছিলো। এরই মাঝে সুখজানের শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটে। সর্বশেষ গত ৮ রমজান মারা যান তিনি।
মিঠু চাকলাদারের অভিযোগ, খন্দকার কবীর হোসেন একজন প্রতারক। চিকিৎসাসেবার নামে তিনি মানুষের সাথে প্রতারণা করে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন। তার অপচিকিৎসায় আমার শাশুড়ি সুখজান মারা গেছেন।
মিঠু চাকলাদার জানান, খন্দকার কবীর হোসেনের চিকিৎসা প্রতারণার বিষয়ে ১৭ এপ্রিল আমি চুড়ামনকাটি ইউনিয়ন পরিষদে লিখিত অভিযোগ করেছি। প্রয়োজনে প্রতারক কবীরের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করবো।
এই বিষয়ে খন্দকার কবীর হোসেন মুঠোফোনে জানিয়েছেন, তিনি কেনো চিকিৎসক না। ক্যান্সার আক্রান্ত কোন রোগীর চিকিৎসা দেননি।
চুড়ামনকাটি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান দাউদ হোসেন দফাদার জানান, খন্দকার কবীরের অপচিকিৎসায় ক্যান্সার রোগীর মৃত্যুর ঘটনায় লিখিত অভিযোগ এখনো তিনি হাতে পাননি। অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয় হবে।
যশোরের সিভিল সার্জন ডা. বিপ্লব কান্তি বিশ্বাস জানান, খন্দকার কবীরের অপচিকিৎসায় ক্যান্সার রোগীর মৃত্যু ঘটনা জানা ছিলো না। শুনলাম, অবশ্যই খোঁজ নেয়া হবে। তিনি আরও জানান, শতভাগ গ্যারান্টি দিয়ে ক্যান্সার রোগ নিরাময়ের নামে রোগীর স্বজনদের কাছ ৭০ হাজার টাকা হাতিয়ে নেয়ার ঘটনাটি খুবই দুঃখজনক।