মুহাম্মদ রফিকুল ইসলাম মাসুম, মোরেলগঞ্জ প্রতিনিধি :: দুঃসহ গরমে ঘন ঘন লোডশেডিংয়ে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে মোরেলগঞ্জ-শরণখোলাসহ সুন্দরবন উপকূলীয় এলাকার জনজীবন। সকাল থেকে শুরু হয়ে গভীর রাত পর্যন্ত কমপক্ষে ১০/১৫ বার চলে এ লোডশেডিং। শহরে মাঝে মধ্যে বিদ্যুৎ আসলেও গ্রামের অবস্থা আরো ভয়াবহ। সারাদিনে দুই থেকে তিন ঘণ্টার বেশি বিদ্যুৎ পাচ্ছেনা এলাকাবাসী। কোন কোন এলাকায় এক ঘণ্টাও বিদ্যুৎ থাকছেনা এমন অভিযোগ গ্রাহকদের।
তাদের আরো আভিযোগ, যখন বিদ্যুৎ থাকেনা তখন মোরেলগঞ্জ-শরণখোলা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির হট লইনের সেল ফোন ব্যস্ত করে রাখা হয়। আবার রিসিভ করলেও দুর্ব্যবহার করা হচ্ছে। তাপদাহ যত তীব্র হয়, বিদ্যুতের লোডশেডিং যেন ততই পাল্লা দিয়ে বাড়তে থাকে। দিনে কয়েক ঘণ্টাব্যাপী লোডশেডিং দিয়ে শুরু হয় প্রথম ধাপ। সন্ধ্যার পরে দ্বিতীয় ধাপ থেকে চলে গভীর রাত পর্যন্ত চলতে থাকে বিদ্যুত দেয়া নেয়ার খেলা।
ঘন ঘন লোডশেডিংয়ে বিদ্যুৎ সংকটের ফলে বিপর্যয়ের মুখে পড়েছে ছোট-বড় কলকারখানাসহ বিদ্যুৎ নির্ভরশীল ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলো। শিক্ষার্থীদের লেখাপড়া, অফিসিয়াল কার্যক্রমসহ হাসপাতালের চিকিৎসা সেবা হচ্ছে চরমভাবে ব্যহত। বিদ্যুতের এমন ভেলকিবাজিতে অনেকেই তাদের প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখতে বাধ্য হচ্ছেন। বিশেষ করে শরণখোলার বরফকল মালিকরা বিদ্যুৎ বিপর্যয়ে ব্যাপক লোকসানের হচ্ছেন।
শরণখোলা উপজেলা সদরের গ্রাহক বিশিষ্ট ব্যবসায়ী বাবুল দাস বলেন, আকাশে বিদ্যুৎ চমকালে কিংবা একটু বাতাসের চাপ থাকলেই বিদ্যুৎ চলে যায়। বিদ্যুৎ বিপর্যয়ের ফলে পানির সংকট দেখা দেয়। তিনি আরো বলেন, ঘন ঘন লোডশেডিংয়ে মোরেলগঞ্জ-শরণখোলা পল্লী বিদ্যুৎ জোনের প্রায় ৩০ হাজার গ্রাহকের জনজীবনসহ ব্যবসা-বানিজ্য পড়েছে বিপর্যয়ের মুখে।
বাগেরহাট ম্যাটস এ সাবেক অধ্যক্ষ ডা. শিব্বির আহম্মেদ বলেন, তীব্র গরমে জরসহ নিউমোনিয়া, টাইফয়েডে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা প্রতিদিন বাড়ছে। ঘন ঘন লোডশেডিংয়ে শিশুদের চিকিৎসাসেবা ব্যহত হচ্ছে সর্বোচ্চ মাত্রায়। শিশুদের দিনে তিনবার নেবুলাইজ করার প্রয়োজন হলেও তা দেয়া যাচ্ছেনা।
পিরোজপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির ডিজিএম মো. জিয়াউর রহমান জানান, ১১ মেগাওয়াট বিদ্যুতের বিপরীতে ৪ থেকে সাড়ে ৪ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ পাওয়া যাচ্ছে। তবে তিনি বলেন, জেনারেশন বৃদ্ধি ও জাতীয় গ্রীডের টাওয়ারের কাজ শেষ হলে বিদ্যুৎ বিভ্রাট থেকে পরিত্রাণ পাওয়া যাবে। পবিত্র রমজান শুরুর আগেই এ সমস্যার সমাধান হবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।