‘লিঙ্গ বৈষম্য সূচকে’ বাংলাদেশের অগ্রগতিস্টাফ রিপোর্টার :: অধিকার আর অংশগ্রহণের প্রশ্নে নারী পুরম্নষের ব্যবধান ঘোচানোর ক্ষেত্রে বিশ্ব অর্থনৈতিক ফোরামের (ডবিস্নউইএফ) সূচকে এক বছরে বড় অগ্রগতি দেখিয়েছে বাংলাদেশ। ডবিস্নউইএফ-এর ২০১৭ সালের ‘গেস্নাবাল জেন্ডার গ্যাপ’ প্রতিবেদনে বাংলাদেশ ২৫ ধাপ এগিয়ে বিশ্বের ১৪৪টি দেশের মধ্যে ৪৭ নম্বরে উঠে এসেছে।

গত বছর এই তালিকায় বাংলাদেশ ৭২ নম্বরে ছিল। আর ২০০৬ সালে ছিল ১১৫টি দেশের মধ্যে ৯১তম অবস্থানে।

বিশ্ব অর্থনৈতিক ফোরাম তাদের এই লিঙ্গ সমতা সূচক প্রকাশ করে আসছে ২০০৬ সাল থেকে। অর্থনীতিতে অংশগ্রহণ, শিক্ষার সুযোগ, স্বাস্থ্য সেবাপ্রাপ্তি এবং রাজনৈতিক ক্ষমতায়ন- এই চার মাপকাঠিতে নারী-পুরম্নষের বৈষম্য বিবেচনা করে এ প্রতিবেদন তৈরি করা হয়।
সূচকে একটি দেশের অবস্থান নির্ধারণ করা হয় ১ ভিত্তিক স্কেলে, যেখানে ১ মানে হল পুরো সমঅধিকার, আর শূন্য মানে পুরোপুরি অধিকার বঞ্চিত।
এই হিসাবে বাংলাদেশের মোট স্কোর এবার ০.৭৯১, যা গত বছর ছিল ০.৬৯৮। ২০০৬ সালে ছিল ০.৬২৭।
এই সূচকে টানা নবমবারের মত শীর্ষে অবস্থান করছে আইসল্যান্ড, দেশটির স্কোর ০.৮৭৮। আর ‘সবচেয়ে বেশি বৈষম্যের’ দেশ ইয়েমেনের স্কোর ০.৫১৬।
শীর্ষ দশের বাকি নয় দেশ হল নরওয়ে, ফিনল্যান্ড, রম্নয়ান্ডা, সুইডেন, নিকারাগুয়া, স্স্নোভেনিয়া, আয়ারল্যান্ড, নিউজিল্যান্ড এবং ফিলিপাইন। এ তালিকায় সবার নিচে অর্থাৎ ১৪৪তম অবস্থানে রয়েছে ইয়েমেন।
দক্ষিণ এশিয়ায় গতবছরের শীর্ষ অবস্থান এবারও ধরে রেখেছে বাংলাদেশ। এই তালিকায় মালদ্বীপ ১০৬, ভারত ১০৮, শ্রীলঙ্কা ১০৯, নেপাল ১১১, ভুটান ১২৪ এবং পাকিস্ত্মান ১৪৩তম স্থানে রয়েছে।

উন্নত দেশগুলোর তুলনায় অনেক দিক দিয়ে পিছিয়ে থাকলেও লিঙ্গ সমতায় যুক্তরাষ্ট্র (৪৯), রাশিয়া (৭১) ও চীনের (১০০) চেয়ে এগিয়ে আছে বাংলাদেশ।

গতবারের মত এবারও রাজনীতিতে নারীর ক্ষমতায়নে বিশ্বে বাংলাদেশের অবস্থান সপ্তম। বাংলাদেশের আইনসভায় ক্ষমতাসীন দলের প্রধান, বিরোধী দলীয় প্রধান ও সংসদের স্পিকার- এই তিন শীর্ষ পদে নারীরাই নেতৃত্ব দিচ্ছেন।
অর্থনীতিতে নারীর অংশগ্রহণের দিক দিয়ে বাংলাদেশ গতবারের ১৩৫তম অবস্থান থেকে ছয় ধাপ এগিয়ে ১২৯তম অবস্থানে উঠে এসেছে।
শিক্ষাক্ষেত্রেও বৈষম্য আরও কমে এসেছে, সূচকের ১১৪তম স্থান থেকে বাংলাদেশ উঠে এসেছে ১১১তম স্থানে।
কিন্তু স্বাস্থ্য সেবাপ্রাপ্তিতে স্কোর বাড়লেও অন্যান্য দেশ বেশি সাফল্য পাওয়ায় এ দিক দিয়ে বাংলাদেশ ৯৩ থেকে চলে গেছে ১২৫তম স্থানে ডবিস্নউইএফ বলছে, গত এক দশকে নারী-পুরম্নষ বৈষম্য কমাতে বিশ্ব ভালো অগ্রগতি দেখালেও সেই গতি এখন ধীর হয়ে এসেছে। বৈশ্বিক স্কোর গতবছরের ০.৬৮৩ থেকে কমে হয়েছে ০.৬৮০।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এই ধারায় এগোলে বিশ্ব থেকে লিঙ্গ বৈষম্য দূর হতে ১০০ বছর সময় লাগবে।
Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here