জহিরুল ইসলাম শিবলু।

লক্ষ্মীপুর: লক্ষ্মীপুর জেলার চাষীরা অতিরিক্ত ফসল হিসেবে সরিষা চাষে দিন দিন আগ্রহী হয়ে উঠছে। কারণ এ ফসলে সামান্য পরিচর্যা করলেই চলে আর অল্প খরচে বেশি লাভ পাওয়া যায়।

লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার মজু চৌধুরীর হাট এলাকার মেঘনা নদী উপকূলের চর রমনী মোহন ও ভবানীগঞ্জ এলাকাসহ জেলার বিভিন্ন স্থানে চাষ হয়েছে সরিষার। এখানকার কৃষকরা এখন অতিরিক্ত ফসল হিসেবে সরিষা চাষে ব্যাস্থ সময় পার করছে।

মঙ্গলবার সকালে চর রমনী মোহন ও ভবানীগঞ্জ এলাকা ঘুরে দেখা যায়, বিস্তৃর্ণ মাঠ জুড়ে হলুদ আর হলুদ। দুই চোখ যেদিকে যায় সেদিকেই সরিষার হলুদ রঙের ফুলে ফুলে ভরে উঠেছে সরিষা ক্ষেত। এক দিকে মেঘনা নদী অন্য দিকে সরিষা ফুলে হলুদের সমারোহ। মৌমাছি আর প্রজাপতির আনা-গোনায় সরিষা মাঠ গুলো হয়ে উঠেছে মনোমুগ্ধকর।

চর রমনী মোহন এলাকার চাষী আরব আলী, হুমায়ন কবির ও লেদা মিয়া বলেন, আমন ধান কাটার পর জমি কয়েক মাসের জন্য পরিত্যাক্ত থাকে। আর সেই জমিতেই অতিরিক্ত ফসল হিসেবে সরিষা চাষ করেছি আমরা। আমাদের মত অনেক কৃষক সরিষা চাষ করে লাভবান হচ্ছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এবং রোগ-বালাই না হওয়ায় এবার ভাল ফলনের আশা করছেন তারা।

ভবানীগঞ্জ এলাকার চাষী হোসেন আলী, আকবর ও মনির হোসেন বলেন, কয়েক বছর আগেও তাদের জমি পরিত্যাক্ত থাকতো, কিন্তু বর্তমানে কৃষি বিভাগের পরামর্শে তারা এখন বোরো ধানের আগে জমিতে সরিষা চাষ করছেন। বোরো ধান চাষের আগে সরিষা চাষ করে বাড়তি আয় হওয়ায় দিন-দিন সরিষা চাষে এ অঞ্চলের কৃষকদের আগ্রহ বাড়ছে। সরিষার ফুল মাটিতে পড়ে জমির উবরর্তায় শক্তি বাড়ায়। তা ছাড়া সরিষার বাজার দরও ভালো হওয়ায় লাভের মুখ দেখছেন তারা।

জেলা কৃষি সমপ্রসারণ অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে জেলার পাঁচটি উপজেলায় প্রায় সাড়ে ৩০০ হেক্টর জমিতে সরিষা চাষে আবাদ হয়েছে। তার মধ্যে লক্ষ্মীপর সদর উপজেলায় ১৫০ হেক্টর, রায়পুর উপজেলায় ১৬৫ হেক্টর, রামগঞ্জ উপজেলায় ৭ হেক্টর, রামগতি উপজেলায় ১ হেক্টর ও কমলনগর উপজেলায় ৬ হেক্টর জমিতে সরিষা আবাদ করা হয়েছে।

জেলা কৃষি সমপ্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ গোলাম মোস্তফা বলেন, সরিষার আবাদ দিন দিন এই জেলায় জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। চলতি মৌসুমে জেলায় প্রায় সাড়ে ৩০০ হেক্টর জমিতে সরিষা আবাদ হয়েছে। অনুকূল আবহাওয়া থাকায় কৃষকদের ফলন হয়েছে বেশ ভাল। মাঠ পর্যায়ে কৃষি কর্মকর্তাদের পরামর্শে চাষীরা সরিষা চাষ করে সফলতার মুখ দেখছেন। কৃষকদের বাড়তি আয়ের জন্য সরিষার এই সব ক্ষেতে মধু আহরণের জন্য মৌ-বাক্স স্থাপন করা হয়েছে।

Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here