জহিরুল ইসলাম শিবলু, লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি :: করোনাভাইরাস প্রতিরোধে জরুরী প্রয়োজন ছাড়া বাড়ি থেকে বের না হতে প্রশাসনের কঠোর নির্দেশনা রয়েছে। এ নির্দেশনা মেনে নিজ নিজ ঘরে রয়েছেন প্রায় সকল পেশার মানুষ। মাঠে কাজ করছেন জেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন, ডাক্তার, সাংবাদিক ও জনপ্রতিনিধিরা। কিন্তু করোনাভাইরাস একটি ছোঁয়াচে রোগ হওয়ায় এই রোগ থেকে রক্ষা পেতে অনেকেই স্বেচ্ছায় হোম কোয়ারেন্টাইনে রয়েছেন। বিশেষ করে অনেক ডাক্তার স্বেচ্ছায় হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকায় জেলা শহরে চিকিৎসা সেবা প্রায় ভেঙে পড়েছে। তবে এর মধ্যে সাধারণ রোগের চিকিৎসা দিতে লক্ষ্মীপুর জেলার সরকারি হাসপাতাল সমূহে হটলাইন নাম্বার চালু করা হযেছে। ঘর থেকে বাহির না হওয়ার জন্য সরকারি ১০ দিনের ছুটির দ্বিতীয় দিনে লক্ষ্মীপুরে একটি বেসরকারি হাসপাতালে এক গর্ভবতী মায়ে সিজার করার জন্য যখন কোন ডাক্তার পাওয়া যাচ্ছিলনা তখন জেলার সিভিল সার্জন ডা. আবদুল গফফার নিজে সেই হাসপাতালে গিয়ে গর্ভবতী সে মায়ে সফল সিজারিয়ান অপারেশনর মাধ্যমে একটি ছেলে সন্তান জন্মগ্রহণ করান। এতে সুস্থ রয়েছেন নবজাতক শিশু সন্তান ও তার প্রসূতী মা। এ ঘটনায় জেলা জুড়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় সাধারণ মানুষ নানা উক্তি করে সিভিল সার্জনের প্রশংসা করছেন।

সিভিল সার্জন কার্যাল সূত্রে যানা যায়, স্থবিরতার দ্বিতীয় দিনে শুক্রবার সিভিল সার্জন কার্যালয়ের কন্ট্রোল রুমে টেলিফোনে একটি কল আসে। কলটি রিসিভ করতেই ও প্রান্ত থেকে একটি বেসরকারি হাসপাতাল থেকে একজন জানান, তার হাসপাতালে তৃতীয় সিজারের একজন গর্ভবতী মা প্রসব বেদনায় কাতরাচ্ছেন। অনেক চেষ্টা করেও কোন ডাক্তার ম্যানেজ করতে পারছেন না এবং রোগীর অবস্থা এত খারাপ যে তাকে কোথাও রেফারও করা যাচ্ছে না। এখন কি করবেন জানতে চাইলেন। তাকে কলে রেখে অফিসে অবস্থানরত সিভিল সার্জন ডা. আবদুল গফফারকে বিষয়টি জানানো হয়। বিষয়টি জানান পর সিভিল সার্জন নিজেই যাবেন বলে জানান। টেলিফোনের ব্যাক্তিকে আশ্বস্ত করে অপেক্ষা করতে বলা হয়।

পরে সিভিল সার্জন কার্যালয়ের মেডিকেল অফিসার ডা. ইকবাল মাহমুদকে (এনেসথেসিষ্ট) সাথে নিয়ে সিভিল সার্জন ঐ হাসপাতালে যান। এ সময় সিভিল সার্জন নিজেই ঐ মায়ের সফল সিজারিয়ন অপারেশন করান। এতে ঐ মায়ের একটি ছেলে সন্তান জন্ম হয়। আল্লাহর অসীম রহমতে প্রসূতী মা ও নকজাতক শিশু সন্তান সুস্থ আছেন।

সিভিল সার্জন ডা. আবদুল গফফার বলেন, এই সংকটময় সময়ে আমাদের সকলকে এক যোগে কাজ করতে হবে। সংকট সবসময় থাকবে না, কিন্তু সকলের সায়িত্ব আমরা সকলেই সঠিক ভাবে পালন করতে পারছি কিনা সে বিষয়ে লক্ষ রাখতে হবে।

Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here