ঢাকা : চার বছর আগের বিডিআর বিদ্রোহের সময় পিলখানায় হত্যাকাণ্ডের মামলার রায় হচ্ছে মঙ্গলবার।
ঢাকার অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আখতারুজ্জামান সকালে বকশীবাজার আলিয়া মাদ্রাসার মাঠে অস্থায়ী এজলাসে এই রায় ঘোষণা করবেন।
আসামি পক্ষের যুক্তিতর্ক শেষে গত ২০ অক্টোবর বিচারক এ মামলার রায়ের জন্য ৩০ অক্টোবর দিন ঠিক করে দেন। কিন্তু ওইদিন রায়ের জন্য নতুন তারিখ রাখেন বিচারক।
২০০৯ সালের ২৫-২৬ ফেব্রুয়ারি পিলখানায় বিডিআর সদরদপ্তরে বিদ্রোহের ঘটনায় ৫৭ সেনা কর্মকর্তাসহ অন্তত ৭৩ জন নিহত হন।
রক্তাক্ত ওই বিদ্রোহের প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশ সীমান্তরক্ষী বাহিনীর পুনর্গঠন করা হয়। নাম বদলের পর এ বাহিনী এখন বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) হিসেবে পরিচিত।
বিদ্রোহের ঘটনার বিচার সীমান্তরক্ষা বাহিনীর নিজস্ব আইনে সম্পন্ন হয়েছে। আর পিলখানায় বাহিনীর সদর দপ্তরে ৭৩ জনকে হত্যা, লুণ্ঠনসহ অন্য অভিযোগের বিচার হচ্ছে প্রচলিত আইনে।
দেশের ইতিহাসে বহুল আলোচিত এই হত্যা মামলায় ২৩ বেসামরিক ব্যক্তিসহ ৮৫০ জন আসামি। এর মধ্যে বিএনপির সাবেক সংসদ সদস্য নাসিরউদ্দিন আহমেদ পিন্টুও রয়েছেন।
আসামির সংখ্যা অনেক হওয়ায় কেন্দ্রীয় কারাগার সংলগ্ন আলিয়া মাদ্রাসা মাঠে ঢাকার জজ আদালতের বিশেষ এজলাস বসিয়ে এই হত্যাকাণ্ডের বিচার চলে।
২০১১ সালের ৫ জানুয়ারি এই বিচার কার্যক্রম শুরু করেন ঢাকার বিশেষ জজ জহুরুল হক। ওই বছরের ২৪ অগাস্ট এ মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়। বর্তমানে এই আদালতের বিচারকের দায়িত্বে রয়েছেন মো. আখতারুজ্জামান।
মন্ত্রী, সংসদ সদস্য, সাবেক ও বর্তমান সেনা, নৌ, বিমান বাহিনীর কর্মকর্তা, পুলিশের সাবেক ও বর্তমান আইজি, বেসামরিক ব্যক্তিসহ এ মামলার ১ হাজার ৩৪৫ জন সাক্ষী ছিলেন। তবে শেষ পর্যন্ত ৬৫৪ জন সাক্ষীর জবানবন্দি নেয়া হয়।
সাক্ষ্য ও সাফাইসাক্ষ্য শেষে গত ২৯ সেপ্টেম্বর রাষ্ট্রপক্ষ যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করে। পরে নয় কার্যদিবসে আসামিপক্ষের যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষ হয়।
বিডিআর হত্যাযজ্ঞ ঘটনায় প্রথমে লালবাগ থানায় হত্যা এবং বিস্ফোরক আইনে দুটি মামলা হয়। পরে এসব মামলা স্থানান্তরিত হয় নিউমার্কেট থানায়।
সিআইডি দীর্ঘ তদন্ত শেষে হত্যা মামলায় ২৩ বেসামরিক ব্যক্তিসহ প্রথমে ৮২৪ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করে। পরে সম্পূরক অভিযোগপত্রে আরও ২৬ জনের নাম অন্তর্ভুক্ত হয়।
এছাড়া বিস্ফোরক আইনে করা মামলায় ৮০৮ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দেয় সিআইডি। পরে আরও ২৬ জনকে অভিযুক্ত করে মোট ৮৩৪ জনের বিরুদ্ধে সম্পূরক অভিযোগপত্র দেয়া হয়। দুই মামলার বিচার একইসঙ্গে চলে।
মামলায় ২০ জন আসামি পলাতক রয়েছেন। বিচার চলার সময়ে ডিএডি রহিমসহ চার আসামির মৃত্যু হয়েছে।