আব্দুল খালেক রিয়াদ, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়

“অমর একুশের চেতনায়, পড়িলে বই আলোকিত হই; না পড়িলে বই অন্ধকারে রই, পড় তোমার প্রভুর নামে যিনি তোমাকে সৃষ্টি করেছেন”সহ বিভিন্ন স্লোগানকে সামনে রেখে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বিতীয় বিজ্ঞান ভবন চত্বরে অনুষ্ঠিত সাতদিন ব্যাপী অমর একুশে গ্রন’মেলার মঙ্গলবার শেষ হয়েছে। রাবি’র মনোবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থীদের মানবিক সংগঠন ‘স্বপ্ন’র উদ্যোগে এই গ্রন’মেলা অনুষ্ঠিত হয়। বইকে মানুষের কাছে প্রিয় করতে এবং আলোকিত জীবন গড়তে এই গ্রন’মেলায় প্রতিদিন বিকালে শিক্ষার্থীদের ছিল উপচে পড়া ভীড়। গত ১৪ ফেব্রুয়ারি এ গ্রন’মেলার উদ্বোধন করেন রাবি ভিসি প্রফেসর এম আব্দুস সোবহান। এসময় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপসি’ত ছিলেন রাবি প্রো- ভিসি প্রফেসর মুহাম্মদ নূরুল্লাহ।

১৪ থেকে ২১ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সাতদিন ব্যাপী এ গ্রন’মেলায় ব্রতচারী প্রকাশন, জনসংহিতা প্রকাশন, শিক্ষকদের নিজস্ব বই নিয়ে শিক্ষক প্রকাশনীসহ ১০ টি স্টলে কাজী জাফর ইকবাল, হাসান আজিজুল হক, শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, কাজী নজরুল ইসলামসহ বিভিন্ন খ্যাতনামা লেখকদের অন্তত ১৫০ শতাধিক উপন্যাস, কাব্য ও গল্পের বই স’ান পায়। এখানে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন শিক্ষকদের লিখিত ইতিহাস ঐতিহ্য, প্রত্নসম্পদ, জলবায়ু, উপজাতি ও বিজ্ঞান সম্পর্কিত বই স’ান পায়। মেলায় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের রক্তদাতা সংগঠন “স্বজন” এর স্টলে ছিল রক্তের গ্রুপ নির্ণয়ের হিড়িক। বিনা মুল্যে তারা শিক্ষার্থীদের রক্তের গ্রুপ পরীক্ষা করে।  এছাড়া গ্রন’মেলার যাবতীয় তথ্য প্রদানের জন্য বসানো হয় তথ্য কেন্দ্র আর মহিলাদের নির্যাতনের হাত থেকে রক্ষা পেতে বিভিন্ন পরামর্শ ও গবেষণাধর্মী বিভিন্ন জার্নাল নিয়ে বসেছিল বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ রাবি শাখার একটি স্টল। এ মেলার অন্যতম আকর্ষণ ছিল প্রতিদিন সন্ধ্যায় মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন মেলাকে ভিন্নমাত্র দান করে।
মেলায় ঘুরতে দর্শনার্থী বাঁধন, সাগর, আসাদ, কবির, তুরফান, ও মোহাম্মদ আলী জানান, রাবিতে গ্রন’মেলা এবারই প্রথম আয়োজন করা হয়েছে। রাজশাহী জেলা শহর ঢাকা থেকে অনেক দুরে হওয়ায় অনেক ক্ষেত্রে ঢাকার অমর একুশে বইমেলায় যাওয়া অনেক কষ্টসাধ্য হয়ে উঠে। আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে এ ধরণের মেলা প্রতিবছর আয়োজন করা হলে আমরা নতুন নতুন বইয়ের সাথে পরিচিত হওয়ার পাশাপাশি আমাদের জ্ঞানকে আরো প্রসারিত করতে পারব। এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের উর্ধ্বতন কর্তাব্যাক্তিদের নজর দেয়ার কথা উল্লেখ করেন তারা।
শিক্ষার্থীদের এই কার্যক্রমে উজ্জীবিত হয়ে মেলা উদ্বোধন করতে এসে উপাচার্য পরবর্তী প্রতি বছরের জন্য আয়োজিত মেলার খরচ বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে দেয়ার প্রতিশ্রুতি দেন। শিক্ষার্থীরা আরো বেশি বেশি এ ধরনের কর্মকান্ড চালাতে পারে সেদিকে নজর দেওয়ার আশ্বাস দেন উপাচার্য প্রফেসর এম আব্দুস সোবহান।

Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here