রাজনৈতিক অচলাবস্থাষ্টাফ রিপোর্টার :: দুই মাসের অধিক সময় ধরে চলা বিশ দলের ডাকা দেশব্যাপী অবরোধে ঝরছে তাজা প্রাণ আর, দগ্ধ হয়ে হাসপাতালে কাতরাচ্ছেন শত শত মানুষ। বিএনপির নেতারা বলছেন, নির্দলীয় নির্বাচনের দাবিতে তাদের শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিকে দেশে-বিদেশে জঙ্গীরূপে পরিচিত করাতে সরকারই পেট্রোল বোমা, সহিংসতা চালিয়ে মানুষ হত্যা করছে।

আর ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ হত্যার সরাসরি নির্দেশদাতা হিসেবে দায়ী করছেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে। আর বাম দলের নেতাদের মতে, দেশের বিদ্যমান পরিস্থিতির জন্য বিএনপি-আওয়ামী লীগ উভয় দলই দায়ী।

জ্বলছে দেশ, পুড়ছে হতভাগ্য সাধারণ মানুষ। স্বাধীনতা প্রাপ্তির ৪৩ বছর পেরিয়ে গেলেও দেশে গড়ে ওঠেনি গ্রহণযোগ্য রাজনৈতিক সংস্কৃতি। তাই ক্ষমতার বলি যেন এসব সাধারণ মানুষের নিয়তি।

প্রশ্ন উঠেছে দুই মাসের অধিক কাল ধরে চলা এ সহিংসতার জন্য দায়ী কে?

এ ব্যাপারে বিএনপি চেয়াপারসনের উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট খন্দকার মাহবুব হোসেন বলেন, ‘শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিকে জঙ্গী চরিত্র দিতে সরকারের মদদপুষ্ট কিছু লোক পেট্রোল বোমা মারছে।’

স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম বলেন, ‘এটি একটি অবাস্তব ও অবান্তর বক্তব্য, একটি সরকার ক্ষমতায় থেকে কখনোই চাইবে না এ ধরনের ঘটনা ঘটুক।  খালেদা জিয়ার নির্দেশেই একের পর এক নাশকতা চালানো হচ্ছে, এগুলো গণহত্যার সামিল।’

পরস্পরের দোষারোপের এই রাজনীতিতে দায়ী দু’দলই, এমন অভিমত ব্যক্ত করলেন বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম।

তিনি বলেন, ‘সমস্ত পরিস্থিতির দায় কম-বেশি আওয়ামী লীগ ও বিএনপি দু’দলের ওপরই বর্তায়।  যে নৈরাজ্য চলছে, তার উৎস হলো- লুটপাটের রাজনীতি ও অর্থনীতি।  ভাগ-বাটোয়ারা নিয়েই দু’পক্ষের দ্বন্দ্ব।

বিদ্যমান রাজনৈতিক সমস্যা সমাধানে চলছে কূটনৈতিক তৎপরতা। তারপরও দু’পক্ষ অনড় অবস্থানে।

এ ব্যাপারে খন্দকার মাহবুব বলেন, ‘সরকার যদি মনে করেন- বিএনপির সঙ্গে আলোচনা করবেন না, তবে আমরা কূটনৈতিকদের মাধ্যমে আলোচনার প্রস্তাব দিয়েছিলাম। কিন্তু কিছুই হলো না।  এর মাধ্যমেও তো সমাধান হতে পারে।’

মোহাম্মদ নাসিম বলেন, ‘কোনো খুনির সঙ্গে, বোমাবাজের সঙ্গে এ সরকার আপোস করবে না। বিদেশি বন্ধুদের সঙ্গে আলোচনা চলছে, এদেশের পরিস্থিতি যেনো ভালো থাকে তাই তারা রুটিন বক্তব্য দিয়ে যাচ্ছেন। আমরা তাদের বলেছি- এ ধরনের কর্মকাণ্ড যারা করে, তাদের সঙ্গে আলোচনা হতে পারে না।’

৬ জানুয়ারি অবরোধ শুরুর পর থেকে এ পর্যন্ত সহিংসতায় প্রাণ গেছে শতাধিক, আহত হয়েছে হাজারের অধিক মানুষ। এছাড়া, অগ্নিসংযোগ ও আগুন দেয়া হয়েছে তেরো শ’ এর বেশি যানবাহনে।

Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here