জহুরুল ইসলাম জহির, রংপুর
রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ইর্ন্টানী ডাক্তার ও শিক্ষানবিশ নার্সদের অনিদির্ষ্টকালের কর্মবিরতি অব্যাহত রয়েছে। আর এই কর্মাবরতির কারনে হাসপাতালে চিকিৎসা সেবা ভেঙ্গে পড়েছে। হাসপাতালের চিকিৎসা সেবা  অচলাবস’ার কারনে রোগিরা চিকিৎসা সেবার জন্য অন্যত্র চলে যাচ্ছে। তবে অভিযোগ উঠেছে হাসপাতালের অচলাবস’ার সুযোগে দালালেরা রোগিদের ভাগিয়ে শহরের বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিকগুলোতে চিকিৎসার জন্য ভাগিয়ে নিচ্ছে।
রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে কর্মরত ইন্টার্নি ডাক্তার ও নার্সরা তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত ও হামলায় জড়িতদের গ্রেফতারের দাবিতে রোববার তারা ৪৮ ঘন্টার আল্টিমেটাম দিয়ে আরো কঠোর কর্মসূচি গ্রহণের হুমকি দিয়েছেন।

এদিকে ইন্টার্নী ডাক্তারদের পক্ষে আসাদুজ্জামান আসাদ জানান, হাসপাতালে মারাত্মক ঝুঁকির মধ্যে পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে হয়। গুরুতর রোগির মৃত্যু নিয়ে বারবার আমরা হামলার শিকার হলেও প্রশাসন আমাদের নিরাপত্তা দিতে পারছেনা। এতে করে হাসপাতালের সুষ্ঠু ও শানি-পূর্ন পরিবেশ বিঘ্নিত হচ্ছে। এজন্য হাসপাতালে সকলের নিরাপত্তা অত্যন- জরুরী। এরপরও হাসপাতালে স’ায়ী পুলিশ ক্যাম্প স’াপন করা হচ্ছেনা। তিনি হাসপাতালে কর্মরত সকলের নিরাপত্তা নিশ্চিত ও দোষিদের গ্রেফতারে ৪৮ ঘন্টা আল্টিমেটাম দিয়ে পরিচালকের কাছে স্মারক লিপি দেয়ার কথা জানান। এসময়ের মধ্যে ব্যবস’া নেয়া না হলে কঠোর আন্দোলনের কর্মসূচি দেয়া হবে বলে জানান তিনি। এর আগে ইন্টার্নী ডাক্তাররা হাসপাতালে বিক্ষোভ মিছিল বের করেন।
নার্সেস এ্যাসোসিয়েশন সংগ্রাম কমিটির আহবায়ক জাহানারা বেগম জানান, তারা তাদের ঘোষিত কর্মসূচি অব্যাহত রেখেছেন। সকালে তারা বিক্ষোভ মিছিল , কালো ব্যাজ ধারন কর্মসূচি পালন করছেন।
হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক ডা. গোলাম মোস-ফা জানান, ইন্টার্নি ডাক্তার ও নার্সদের ধর্মঘটের কারনে জরুরী ভিত্তিতে ২০টি ওয়ার্ডে রোগিদের চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। এজন্য ডাক্তার ও নার্সদের নিয়ে ১০ সদস্যের স্কোয়াড গঠন করা হয়েছে। তিনি আরো জানান, হাসপাতালে পুলিশের স’ায়ী ক্যাম্প স’াপনের জন্য পুলিশ সুপারের কাছে চিঠি পাঠানো হয়েছে। এদিকে বিএমএ’র সাধারণ সম্পাদক অনিমেষ মজুমদার হাসপাতালে আন্দোলনের প্রতি বিএমএ’র পক্ষ থেকে সমর্থন জানিয়েছেন।
রোববার সকালে হাসপাতালে সরেজমিন গেলে দেখা যায়, সেখানে চিকিৎসা সেবা ভেঙ্গে পড়েছে। রোগিরা চিকিৎসা না পেয়ে হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র নিয়ে নগরীর বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিক গুলোর দিকে ছুটছে। এসময় কথা হয় পীরগাছা থেকে আসা আজিরন, গঙ্গাচড়ার মহিতন সহ বেশ কয়েক জন রোগির সাথে। তারা জানায়, হাসপাতালে ডাক্তার ও নার্সের ধমৃঘটের ফলে চিকিৎসা নেই। তাই তারা ক্লিনিকে ভর্তির জন্য চলে যাচ্ছে।
কর্মচারী আব্দুর রউফ অভিযোগ করেন, হাসপাতালে চিকিৎসা সেবার অচলাবস’ার সুযোগ নিয়ে শতাধিক দালাল হাসপাতাল থেকে রোগি ভাগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। তারা হাসপাতালের জরুরী বিভাগে সকাল থেকে রাত ১০টা পর্যন- অবস’ান করে থাকে। দালালদের মধ্যে শহরের জব্বারটারী এলাকার মফিজ, সর্দারটারী এলাকার দুলাল জানায়, ক্লিনিকগুলোর সাথে তাদের মৌখিক চুক্তি থাকে। প্রকার ভেদে রোগি প্রতি তারা পায় ২’শ থেকে ১ হাজার টাকার উপরে পান। রোগি ভাগিয়ে নেয়ার ক্ষেত্রে তারা অটো রিক্সা , রিক্সা ও মাইক্রোবাস ব্যবহার করে থাকেন। গতকালও তারা রোিগ ভাগিয়ে নেয়া কাজে ব্যস- ছিল।
কোতয়ালী থানার ওসি আলতাফ হোসেন জানান, রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসক ও নার্সদের উপর হামলাকারীদের গ্রেফতারে তৎপরতা চলছে। তবে হাসপাতালে যাতে কোন অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে সে জন্য অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
হাসপাতাল ক্যাম্পাসে পুলিশের স’ায়ী ক্যাম্প স’াপন প্রসঙ্গে পুলিশ সুপার সালেহ মোহাম্মদ তানভীর বলেন, জনবল কাঠামো নতুন করে তৈরি না হওয়া পর্যন- হাসপাতালে স’ায়ী পুলিশ ক্যাম্প স’াপন করা সম্ভব হচ্ছেনা। তবে ইর্ন্টানী ডাক্তার, নার্সসহ হাসপাতালে কর্মরত সকলের নিরাপত্তার জন্য সেখানে পুলিশ দেয়া হয়েছে।

Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here