সকাল থেকেই চলছিল টানা বৃষ্টি। আর সেই বৃষ্টিতে নাকাল রাজধানীবাসী। তারা বিপাকে পড়েছেন পশু কোরবানির স্থান নিয়েও। বেশকিছু এলাকায় বৃষ্টির পানি উঠে যাওয়ার ফলে বাড়ি থেকে বের হতে পারেন নি অনেকে।
আবহাওয়া অধিদফতর থেকে ঈদের দিনে বৃষ্টির আশঙ্কার কথা জানানো হয়েছিল আগেই। সেই আশঙ্কাকে সত্যি করে মঙ্গলবার সকাল থেকেই শুরু হয় মুষলধারে বৃষ্টি। তবুও বৃষ্টি উপেক্ষা করেই ভিজে ভিজে ঈদের জামাতে অংশ নেন মুসল্লিরা। রাজধানীর রাজপথ থেকে শুরু করে অলিগলি এমনকি কোরবানির জন্য রাখা নির্দিষ্ট জায়গাগুলোও বৃষ্টির পানিতে সয়লাব হয়ে যায়।
সেই বৃষ্টিতে ভিজে ভিজেই পশু জবাই করতে হয়েছে। জায়গার অভাবে বাসার ভেতরেও কেউ কেউ পশু জবাই করেছেন। কেউ-বা আশেপাশের নির্মাণাধীন কোন ভবনকে বেছে নিতে পেরেছেন। প্রকৃতির বিরুদ্ধতার কারণে নির্ধারিত জায়গায় পশু জবাইয়ের ইচ্ছে থাকলেও উপায় ছিল না নগরবাসীর। তাদের কাছে ছিল না বর্জ্য ব্যবস্থাপনার যথাযথ কোন উপায়। আর পশুর রক্ত বৃষ্টির পানিতে মিশে রাজধানীর অনেক রাস্তা যেন ‘রক্তনদী’র রূপ ধারণ করেছে।
এ অবস্থায় বৃষ্টির পানি আর কোরবানির পশুর রক্ত মিশে রাজধানীতে যে জলাবদ্ধতা তৈরি হয়েছে, তার প্রভাব নগরবাসীর স্বাস্থ্যেও পড়বে বলে আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা। তবে এর নেতিবাচক প্রভাব সবচেয়ে বেশি পড়বে শিশুদের ওপর। জলাবদ্ধতা তৈরি হয়েছে,এমন এলাকাগুলো দ্রুত চিহ্নিত করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।
ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আনিসুল হক অবশ্য, কোরবানি সুষ্ঠুভাবেই হয়েছে বলে দাবী করেছেন।
তিনি সাংবাদিকদের বলেন, এবারের ঈদে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের নির্ধারিত ৬৪৮টি স্থানের মধ্যে ২০০টিরও বেশি স্থানে ইমাম ও কসাই উপস্থিত ছিলেন।
গতবারের তুলনায় এবার সিটি কর্পোরেশন নির্ধারিত স্থানে কোরবানির হার বেশি ছিল জানিয়ে মেয়র আনিসুল হকের দাবি,এসব স্থানে পর্যাপ্ত পরিমাণে পলিথিন ও ব্লিচিং পাউডারও সরবরাহ করা হয়েছে।
এ কারণে অনেকে আগের মতোই পশু জবাইসহ আনুষাঙ্গিক কাজকর্ম সেরেছেন সড়কে। বৃষ্টির কারণে কাদাপানিতে মাংস নষ্ট হওয়ার অভিযোগও করেছেন অনেকে।
বৃষ্টির কারণে পানি জমে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হওয়ার রাজধানীর নিচু এলাকাগুলোর বাসিন্দারা পড়েছেন সবচেয়ে বেশি ভোগান্তিতে।
ভোগান্তির পাশাপাশি সংক্রামক রোগের প্রাদুর্ভাব নিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন অনেক রাজধানীবাসী।