আরিফ হোসেন,জুমদ্দিন প্রতিনিধি :: ঢাকা টু বেতুয়া নৌরুটে চলাচলকারী লঞ্চে যৌন হয়রানির শিকার কিশোরীকে হাসপাতাল থেকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে পুলিশ। এঘটনায় কর্ণফুলি-১৩ লঞ্চে অভিযান চালিয়ে কিশোরী যৌন হয়রানির ঘটনায় জড়িত তিন ষ্টাফকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করে পুলিশ। এ সংবাদ লেখা পর্যন্ত আটককৃত ৩ ষ্টাফ তজুমদ্দিন থানা পুলিশ হেফাজতে রয়েছে বলে জানান থানার একটি সুত্র।

তজুমদ্দিন থানার সেকেন্ড অফিসার মোঃ জসিম উদ্দিন খাঁন জানান, গত শনিবার ঢাকা টু বেতুয়া নৌরুটে চলাচলকারী লঞ্চ ষ্টাফদের দ্বারা যৌন হয়রানির শিকার কিশোরের স্বীকারোক্তি মোতাবেক রবিবার দিবাগত রাত ৫টায় তজুমদ্দিন থানার ওসি (তদন্ত) এনায়েত হোসেনের নেতৃত্বে পুলিশের একটি টিম তজুমদ্দিন স্লুইজঘাটে কর্ণফুলি-১৩ লঞ্চে অভিযান চালিয়ে শাকিল, গিয়াস উদ্দিন ও শাকিল নামের ঘটনার সাথে জড়িত ৩ ষ্টাফকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করে। আটককৃতরা তজুমদ্দিন থানা হেফাজতে রয়েছে।

অপরদিকে যৌন হয়রানির শিকার কিশোরীর কোন অভিভাবক খুজে না পাওয়ায় এখন পর্যন্ত কোন আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি পুলিশ। যৌন হয়রানির শিকার কিশোরীও রবিবার দিবাগত রাত থেকে এ সংবাদ লেখা পর্যন্ত সোমবার সন্ধ্যা ৭ টা পর্যন্ত থানা হেফাজতে রয়েছে বলে জানান থানার একটি সুত্র।

তজুমদ্দিন থানার ওসি (তদন্ত) এনায়েত হোসেন বলেন, কয়েকদিন আগে মেয়েটিকে লঞ্চের ষ্টাফ গিয়াস উদ্দিন ঢাকায় একটি বাসায় কাজ করতে দিলে মেয়েটি সেথান থেকে মোবাইলসহ বিভিন্ন মালামাল চুরি করে পালিয়ে যায়। এরপর গত শনিবার ওই কিশোরী ঢাকার যাওয়ার জন্য লঞ্চে উঠলে গিয়াস তাকে দেখতে পেয়ে হাত ধরে লঞ্চের পিছনে নিয়ে যায় এবং চুরির অপরাধে পুলিশে ধরিয়ে দেয়ার ভয়ভীতি দেখায়। কিন্তু এক পর্যায়ে মেয়েটি লঞ্চের পিছন থেকে সামনে গিয়ে নদীতে ঝাঁপ দেয়।

উল্লেখ, রবিবার ৫ জুলাই দুপুর ১ টায় তজুমদ্দিন হাসপাতালে সিটে বসে ওই কিশোরী সাংবাদিকদের জানান, গত শনিবার কাজের সন্ধানে ঢাকায় যাওয়ার উদ্দেশ্যে তজুমদ্দিন স্লুইজঘাট থেকে কর্ণফুলি-১৩ লঞ্চে উঠেন। লঞ্চে উঠার পর লঞ্চের ষ্টার্ফরা ওই কিশোরীকে বিভিন্ন কু-প্রস্তাবের মাধ্যমে যৌন হয়রানি করতে থাকেন। এক পর্যায়ে কিশোরীকে তাদের সাথে কেবিনে রাত্রি যাপন করলে সকালে ২শত টাকা দেয়ার প্রস্তাব করেন। পরে ইজ্জত রক্ষার্থে কিশোরী নদীতে ঝাপ দেন। কিন্তু লঞ্চ কর্তৃপক্ষ তাকে উদ্ধার করতে একটি বয়া ফেললেও পানির স্রোতে বয়া ধরতে পারেনি কিশোরী। পরবর্তীতে তাকে উদ্ধারে অন্যকোন ব্যবস্থা গ্রহণ না করেই ঢাকার উদ্দেশ্যে চলে যান লঞ্চটি। নদীতে ঝাপ দেয়ার প্রায় ৩ ঘন্টা পর জেলেরা তাকে উদ্ধার করে তজুমদ্দিন হাসপাতালে ভর্তি করেন।

তজুমদ্দিন হাসাপাতালের স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. কবির সোহেল বলেন, রবিবার দিবাগত রাতে থানার লোকজন এসে নদী থেকে উদ্ধার হওয়ার কিশোরীকে রিলিজ নিয়ে থানায় নিয়ে যান।

Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here