আসাদুজ্জামান সাজু, লালমনিরহাট প্রতিনিধি :: যৌতুক না পাওয়ার অপরাধে রোখসানা আক্তার নামে এক গৃহবধুকে মধ্যযুগীয় কায়দায় রশি দিয়ে বেঁধে নির্যাতনের ঘটনায় লালমনিরহাটের আদিতমারী থানায় একটি মামলা দায়ের হয়েছে। বুধবার রাতে বিচার চেয়ে ওই গৃহবুধ তার স্বামী, শ্বশুর ও শ্বাশুড়িকে আসামী করে মামলা দায়ের করেন।
আহত গৃহবধু ওই উপজেলার বড় কমলাবাড়ি গ্রামের হযরত আলীর স্ত্রী ও একই উপজেলার ভাদাই ইউনিয়নের বড়াবাড়ি গ্রামের রাজমিস্ত্রী রুস্তম আলীর মেয়ে বলে জানা গেছে। এ ঘটনার পর থেকেই নির্যাতিত গৃহবধুর স্বামীসহ তার পরিবারের লোকজন গাঢাকা দিয়েছে।
মামলার এজাহার সুত্রে জানা যায়, ৫ বছর আগে ৫০ হাজার টাকা যৌতুকের বিনিময় রোখসানা আক্তারের বিয়ে হয় বড় কমলাবাড়ি গ্রামের জোবেদ আলীর ছেলে হযরত আলীর সাথে। বিয়ের ৩ বছর পর হযরত আলী আরও ৫০ হাজার টাকার যৌতুক দাবি করেন। কিন্তু রোখসানার গরীব বাবা রুস্তম আলী জামাইয়ের আবদার মিটাতে ব্যর্থ হলে নির্যাতন নেমে আসে রোখসানার উপর।
প্রায় সময় ঘরে আটকিয়ে রোখসানাকে অমানুষিক নির্যাতন করেন স্বামী, শ্বশুর ও শ্বাশুড়ি। যৌতুকের কারণে বুধবার সকালে রোখসানাকে নির্যাতন করেন স্বামী হযরত আলী। বিষয়টি রোখসানার বাবা স্থানীয় কমলাবাড়ী ইউনিয়ন চেয়ারম্যান আলাল উদ্দিন আলালকে জানালে আরও নির্যাতন শুরু হয় রোখসানার উপর।
বুধবার বিকালে রোখসানা আক্তারকে রশি দিয়ে বেঁধে মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্যাতন করেন হয়রত আলী ও তার বাবা-মা। পরে কমলাবাড়ী ইউনিয়ন চেয়ারম্যান আলাল উদ্দিন আলাল গ্রাম পুলিশের সহযোগিতায় নির্যাতিত গৃহবধু রোখসানা আক্তারকে উদ্ধার করে স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি করান।
আদিতমারী হাসপাতালের চিকিৎসক সালাম শেখ বলেন, রোখসানার গোপনাঙ্গ, গলাসহ গোটা শরীরে আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে। তার উন্নিত চিকিৎসার প্রয়োজন।
এ বিষয়ে নির্যাতিত গৃহবধু রোকসানা আক্তারের স্বামী হযরত আলীসহ তার পরিবারের সাথে মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও কোন বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
আদিতমারী থানার ওসি হরেশ্বর রায় বলেন, রোখসানা তার স্বামী, শ্বশুর ও শ্বাশুড়ির বিরুদ্ধে একটি অভিযোগ করেছেন। তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।