নিউজ ডেস্ক :: যৌনতা বিষয়ে অনেকেরই ভুল ধারণা আছে। আর এতে যৌনতার অনেক বিষয় অজানাই থেকে যায়। যেমন অনেকেরই ধারণা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ যৌনাঙ্গ তাদের দুই উরুর মাঝে অবস্থিত। যদিও বাস্তবে বিজ্ঞানীরা জানাচ্ছেন এটি দুই কানের মাঝে অবস্থিত- মস্তিষ্ক। আর যৌনতা নানাভাবে আপনাকে স্মার্ট করতে ভূমিকা রাখে। এ বিষয়ে ছয়টি তথ্য থাকছে এ লেখায়। এক প্রতিবেদনে বিষয়টি জানিয়েছে বিজনেস ইনসাইডার।
১. যৌনতা স্মার্ট করে
এ বছরের শুরুতে ইউনিভার্সিটি অব মেরিল্যান্ডের করা এক গবেষণায় দেখা গেছে, নিয়মিত যৌনতা মস্তিষ্কের নতুন কোষ তৈরিতে ভূমিকা রাখা ছাড়াও মানসিক কার্যক্রম বৃদ্ধিতে সহায়তা করে। আর এতে পরিষ্কারভাবে চিন্তা করাও সহজ হয়।
২০১০ সালের এক গবেষণায় দেখা যায়, যৌনতার ফলে মস্তিষ্কের দীর্ঘস্থায়ী স্মৃতি সংরক্ষণের স্থানে ক্ষয়রোধ হয়। আর এতে স্মৃতিশক্তি হারানো বা ডিম্যানশিয়া প্রতিরোধ সহজ হয়।
২. নারীরা অগ্রগামী
দীর্ঘ ২৫ বছর ধরে নারী অর্গাজমের ওপর গবেষণা করছেন রুটগার্স ইউনিভার্সিটির ব্যারি কমিসারুক ও তার দল। তারা গবেষণার জন্য মস্তিষ্কের এফএমআরআই করেন। এতে দেখা যায় নারীর অর্গাজমের সময় মস্তিষ্কের ৩০টি এলাকা উজ্জ্বল হয়ে ওঠে। আর এটি মস্তিষ্কের সুস্থতা নিশ্চিত করতে ভূমিকা রাখে বলে জানিয়েছেন বিজ্ঞানীরা।
অন্যদিকে মস্তিষ্কের অনুশীলন হিসেবে ক্রসওয়ার্ড, সুডোকু ও মস্তিষ্কের বিভিন্ন খেলা মস্তিষ্কের নানা অংশ উদ্দীপ্ত করে। তবে যৌনতার প্রভাব এ ক্ষেত্রে অনেক ব্যাপক।
৩. তারুণ্য ধরে রাখে
ডিএইচইএ নামে হরমোন তারুণ্য ধরে রাখতে সহায়তা করে। আর দেহে এ হরমোনটির ঘাটতি মানে স্বাস্থ্যের জন্য হুমকি। আর এ হরমোনটির তারতম্য হলে হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হওয়া, হৃদরোগ ও নানা সমস্যা হতে পারে। তবে ভালো খবর হলো, এ সমস্যার সমাধান করতে পারে যৌনতা।
যৌনতার ফলে এ হরমোনের উৎপাদন বাড়ে এবং এতে মস্তিষ্কের কাজ উন্নত হয়। ইউনিভার্সিটি অব উইসকনসিনের এক গবেষণায় জানা গেছে, ডিএইচইএ মস্তিষ্কের নতুন কোষ বৃদ্ধিতে ভূমিকা রাখতে পারে। এ ছাড়াও হরমোনটি শরীরের রোগ প্রতিরোধক্ষমতা ও ত্বক উন্নত করতে ভূমিকা রাখে।
৪. মাথা ঠাণ্ডার প্রাকৃতিক দাওয়াই
যৌনতা মানুষের মানসিক চাপ কমানোর প্রাকৃতিক দাওয়াই হিসেবে কাজ করে। এর কারণ হিসেবে গবেষকরা জানান, যৌনতার সময় মস্তিষ্কে বহু ধরনের হরমোন ও নিউরোট্রান্সমিটার ছড়িয়ে পড়ে। এগুলোর মধ্যে রয়েছে অক্সিটোসিন, ডোপামাইন ও সেরোটোনিন। আর এগুলো পরে সারা দেহেও ছড়িয়ে যায়। ফলে মানুষের মুড উন্নত করতে এগুলো ভূমিকা রাখে। এতে ভালো থাকার অনুভূতি তৈরি হয় এবং শরীর শিথিল করে।
৫. যৌনতা বনাম মেডিটেশন
একসঙ্গে অনেক কাজের জন্য নারীর মস্তিষ্ক পুরুষের তুলনায় উপযোগী। আর এ ক্ষেত্রে অর্গাজমের সময়ও যৌনতার পাশাপাশি সচেতনতার একটি বিশেষ ভূমিকা রয়েছে বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। এ পর্যায়ে (অর্গাজমের সময়) অনুভূতিটাই বড় ভূমিকা রাখে, চিন্তা বা কথা নয়। ফলে এটি মস্তিষ্কের অন্যতম একটি চর্চা, যে সময় মস্তিষ্ক পরিষ্কার ও নির্দিষ্ট দিকে মনোযোগ নিবদ্ধ থাকে।
এটি সম্পর্ক জোরদার করার ক্ষেত্রেও ভূমিকা রাখে এবং মেডিটেশনের মতো কাজ করতে পারে বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।
৬. ডোপামাইন বৃদ্ধি
দীর্ঘস্থায়ী সম্পর্কে ডোপামাইনের মাত্রা কমে যেতে পারে, যার অর্থ আপনি যৌনতায় আগের তুলনায় কম সময় দিচ্ছেন। আর এ রাসায়নিকটি নানা আনন্দদায়ক কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে বাড়ানো সম্ভব, যার অন্যতম হলো যৌনতা।