ডেস্ক রিপোর্ট:: সুনামগঞ্জের তাহিরপুরে একটি মেছো বিড়ালকে পিটিয়ে হত্যা করেছে স্থানীয়রা। মঙ্গলবার (৮ জুন) বিকেলে উপজেলার শ্রীপুর উত্তর ইউনিয়ের গোলাবাড়ি গ্রাম সংলগ্ন ‘রামসার সাইট’ টাঙ্গুয়ার হাওরের সংরক্ষিত হিজল করচ বাগান থেকে প্রাণীটিকে হত্যা করা হয়।

টাঙ্গুয়ার হাওরে এ ধরনের প্রাণীর অভয়াশ্রম। একসময় হাওর এলাকায় প্রচুর মেছো বিড়াল দেখা গেলেও এখন অনেক কমে গেছে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক প্রত্যক্ষদর্শী জানান, টাঙ্গুয়ার হাওরের সংরক্ষিত বন হতে একটি মেছো বিড়ালকে ঘণ্টাব্যাপী ধাওয়ার পর সেটিকে কোচ (মাছ ধরার ধারালো অস্ত্র) কুপিয়ে ও পিটিয়ে হত্যা করা হয়। স্থানীয় গোলাবাড়ি গ্রামের সামরান মিয়ার নেতৃত্বে বন্যপ্রাণীটি হত্যার ঘটনা ঘটে।

অভিযোগের বিষয়ে সামরান মিয়া বলেন, গ্রামের শিশুদের ক্ষতি করতে পারে ভেবে সেটিকে হত্যা করা হয়েছে।

তাহিরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. রায়হান কবির বলেন, বিষয়টি অত্যন্ত দুঃখজনক, এ ব্যাপারে বন বিভাগকে অবগত করা হয়েছে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

মেছো বিড়াল সম্পর্কে বাংলাদেশ বন বিভাগের বন্যপ্রাণী ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ কর্মকর্তা জোহরা মিলা সময় নিউজকে বলেন, ‘প্রাণীটির প্রকৃত নাম মেছো বিড়াল (Fishing Cat)। কিন্তু অনেক এলাকায় এটিকে মেছোবাঘ নামেও ডাকে। বাঘ নামে ডাকার কারণে শুধু শুধু আতঙ্ক ছড়িয়েছে। প্রাণীটি মানুষকে আক্রমণ করে না, বরং মানুষ দেখলে পালিয়ে যায়। তাই এটি নিয়ে ভীত হওয়ার কিছু নেই। বাংলাদেশের প্রায় সর্বত্রই এই প্রাণীটি বিচরণ রয়েছে। জলাভূমি আছে এমন এলাকায় বেশি দেখা যায়। প্রাণীটি জলাভূমির মাছ, ব্যাঙ, কাঁকড়া ছাড়াও পোকামাকড় ও ইঁদুর খেয়ে কৃষকের উপকার করে। জনবসতি স্থাপন, বন ও জলাভূমি ধ্বংস, পিটিয়ে হত্যা ইত্যাদি কারণে বিগত কয়েক দশকে এই প্রাণীটির সংখ্যা আশঙ্কাজনকভাবে হ্রাস পেয়েছে।”

তিনি আরও বলেন, ‘২০০৮ সালে মেছো বিড়ালকে বিপন্ন প্রাণী প্রজাতির তালিকায় অর্ন্তভুক্ত করেছে আইইউসিএন। তাছাড়া বন্যপ্রাণী আইন-২০১২ অনুযায়ী এই প্রজাতি সংরক্ষিত। তাই এই প্রাণীটি হত্যা বা এর কোনো ক্ষতিকরা শাস্তিযোগ্য অপরাধ।’

Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here