স্টাফ রিপোর্টার :: করোনাকালে বাজার ও শপিংমলে অধিকাংশ ক্রেতা-বিক্রেতাদের মধ্যে মাস্ক পরায় অনীহা দেখা দিয়েছে। এই প্রেক্ষাপটে কারোর মুখে মাস্ক না থাকলে সংশ্নিষ্টদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে সরকার। যে কোনো সময় যে কোনো মার্কেটে পর্যবেক্ষণ চালিয়ে আকস্মিক অভিযান চালানো হবে।

সোমবার গণভবনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে ভার্চুয়াল মন্ত্রিসভার বৈঠক শেষে সচিবালয়ে প্রেস বিফিংয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম এ কথা জানান।

এছাড়াও বৈঠকে ‘চিকিৎসা ডিগ্রি (দ্য মেডিকেল ডিগ্রিস) (রহিতকরণ) আইন, ২০২০’ এর খসড়া নীতিগত, শেখ হাসিনা মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়, খুলনা, আইন, ২০২০’ এর খসড়া চূড়ান্ত অনুমোদন দেওয়া হয়। প্রধানমন্ত্রী গণভবন থেকে ও সংশ্লিষ্ট মন্ত্রীরা সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে বৈঠকে যুক্ত হন।

মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, মন্ত্রিসভায় করোনা পরিস্থিতি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে। অনেক দেশেই বিশেষত শীতপ্রধান দেশে দ্বিতীয় দফায় করোনা সংক্রমণ হচ্ছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, নভেম্বরের শেষ থেকে ‘দ্বিতীয় ঢেউ’ আসে কি-না সেই প্রস্তুতি রাখতে হবে। ম্যাসিভ যেন প্রস্তুতি থাকে। সেজন্য মঙ্গলবার আন্তঃমন্ত্রণালয়ের সভা ডাকা হয়েছে। ওই সভায় বিস্তারিত কর্মসূচি নেওয়া হবে।

তিনি জানান, প্রধানমন্ত্রী মন্ত্রিসভায় করোনা মোকাবিলায় সব ধরনের প্রস্তুতি নিতে বলেছেন। সেকেন্ড ওয়েভ যদি আসে, তাহলে অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে সচেতন হলে সকলের জন্য সুবিধা হবে। অক্টোবরের শেষ বা নভেম্বরের মাঝামাঝি থেকে ঠাণ্ডার প্রকোপটা বাড়তে পারে, সেক্ষেত্রে লোকজনের নিউমোনিয়া, সর্দি, জ্বর বা অ্যাজমাটিক সমস্যা থাকে। এ সময় প্রস্তুতি ও সচেতন থাকার জন্য সকলের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। মাঠ পর্যায়ে কোভিডকে কিভাবে মোকাবিলা করা, আক্রান্তদের চিকিৎসা করানোসহ অন্যান্য বিষয়ে এখনই আগাম প্রস্তুতি নিতে বলেছেন তিনি।

করোনা রোধে সকলের মাস্ক ব্যবহার করা আবশ্যক উল্লেখ করে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, সকলে ঠিকভাবে যদি মাস্ক ব্যবহার না করি তাহলে সেক্ষেত্রে মহামুশকিল। নিজেদের নিরাপদের স্বার্থে মাস্ক ব্যবহার করা দরকার। কারণ বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দুই তরফ থেকে যদি মাস্ক পরা থাকে তাহলে ৯৫ থেকে ৯৮ শতাংশ নিরাপদ। আর এক তরফ থেকে মাস্ক থাকলে ৬০ থেকে ৬৫ শতাংশ নিরাপদ। মাস্ক যদি না পরেন, তাহলে কোনো কিছুই সফল হবে না।

মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ‘সম্প্রতি তিনি একটি মার্কেটে গিয়েছিলেন। সেখানে তিনি বেশি লোককে মাস্ক পরতে দেখেননি। ওইসব মার্কেটে যে কোনো দিন পরিদর্শন করার জন্য সংশ্নিষ্টদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। সেখানে যদি সকলকে মাস্ক পরতে না দেখা যায়, তাহলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ইতিমধ্যে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে সব মসজিদে জোহর ও মাগরিবের নামাজের সময় মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক এমন রাষ্ট্রীয় কল্যাণকর ঘোষণা দেওয়ার জন্য ধর্ম মন্ত্রণালয়কে বলা হয়েছে।’

তিনি বলেন, করোনা মোকাবেলায় সকলকে সচেতন হতে হবে। ঠাণ্ডা থেকে সুরক্ষা পেতে হলে মাস্ক ব্যবহার বাধ্যতামূলক করতে হবে। উপসর্গ দেখা গেলে অবশ্যই চিকিৎসকের কাছে যেতে হবে। কেউ মাস্ক কিনতে না পারলেও বাড়িতে কাপড় দিয়ে সহজেই তা বানিয়ে নিতে পারেন।’

করোনার দ্বিতীয় পর্যায়ের ঢেউ শুরু হলে সরকার আগের মতো আবার লকডাউনে যাবে কিনা- জানতে চাইলে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ‘মাত্রাটা কেমন হবে সেটার ওপর নির্ভর করতে হবে। এজন্য প্রস্তুতি রাখতে হবে।’

Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here