বাংলা প্রেস, নিউ ইয়র্ক থেকে :: রাষ্ট্রীয়ভাবে মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মান প্রদর্শনের জন্য বছরের যে কোন দিনকে ‘মুক্তিযোদ্ধা দিবস’ ঘোষণার দাবি করেছেন নিউ ইয়র্কের নবগঠিত বাংলাদেশ লিবারেশন ওয়্যার ভেটেরান্স ১৯৭১।একই সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধাদের মাসিক সম্মানী ভাতা বাড়িয়ে ২৫ হাজার টাকা করার দাবি জানানো হয়। স্থানীয় সময় শনিবার সন্ধ্যায় জ্যাকসন হাইটসের একটি রেস্তোঁরায় অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে প্রবাসী মুক্তিযোদ্ধারা এসব কথা বলেন।

সংবাদ সম্মেলনে সাত দফা দাবি সম্বলিত একটি লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন বাংলাদেশ লিবারেশন ওয়্যার ভেটেরান্স ১৯৭১-এর নব নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট গোলাম মোস্তফা খান মিরাজ।

লিখিত বক্তব্যে মিরাজ বলেন, বারবার মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকা তৈরির নামে ছিনিমিনি না খেলে করে মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য মাসিক সম্মানী ভাতা বাড়িয়ে ২৫ হাজার টাকা করুন। দু:স্থ মুক্তিযোদ্ধাদের আবাসিকস্থান দিয়ে থেকে বসবাস করার সুযোগ দিন, প্রবাসে মৃত্যুবহনকারী মুক্তিযোদ্ধাদের ফিউনারেল থেকে দাফন পর্যন্ত সকল ব্যয় রাষ্ট্রীয়ভাবে বহন করার দাবি জানান তিনি। ১৯৭৫ সালা থেক ১৯৯৬ সাল পর্যন্ত মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকা বাতিল করা এবং একেবারেই আইন করে মুক্তিক্সোদ্ধাদের গেজেট নিশ্চিত করার দাবি জানান তিনি।

এছাড়াও একজন অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতির নেতৃত্বে তিন সদস্যের একটি জাতীয় কমিটির মাধ্যমে সামরিক গোয়েন্দা সংস্থা (ডিজিএফআই) কর্তৃক তদন্তপূর্বক সংবিধানে মুক্তিযোদ্ধাদের স্থান দিয়ে একটি তালিকা তৈরির আহবান জানানো হয়।

তিনি সাজাপ্রাপ্ত বঙ্গবন্ধুর খুনিদের বিদেশ থেকে দেশে ফিরেইয়ে নিয়ে তাদের বিরুদ্ধে দন্ডাদেশ কার্যকর করার জন্য সরকারের কাছে জোরালো দাবি জানান তিনি।

নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট আরো বলেন, প্রবাস প্রজন্মকে একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস জানানোর পাশাপাশি বাংলাদেশে একাত্তরের ২৫ মার্চ থেকে ১৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত দীর্ঘ ৯ মাসে পাক হায়েনাদের চালানো গণহত্যার ভয়ংকর ঘটনাবলি মার্কিন রাজনীতিকসহ আন্তর্জাতিক মহলকে অবহিত করা এবং জাতিসংঘে ঐ গণহত্যার স্বীকৃতি আদায়ের চেষ্টা চালাবে এই সংগঠন। শুধু তাই নয়, যুদ্ধ ফেরতদের যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল সরকার যে ধরনের সুযোগ-সুবিধা দিচ্ছে, তার সাথে বাংলাদেশেও মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য সমন্বয় ঘটানোর পদক্ষেপ নেবে সংস্থাটি। মুক্তিযোদ্ধারাও যাতে মার্কিন প্রশাসনের কাছে থেকে যোগ্য সম্মান লাভে সক্ষম হয় তা নিয়েও মূলধারায় দেন-দরবার চালাবে। দুর্বৃত্তদের কবল থেকে রাজনীতিকে মুক্ত করে বাংলাদেশকে দুর্নীতিমুক্ত করার দাবির পাশাপাশি বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে চলমান একটি প্রগতিশীল আর্থিকভাবে স্বয়ম্ভর গণতান্ত্রিক ধর্মনিরপেক্ষ বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে প্রবাসের মুক্তিযোদ্ধারাও নিয়োজিত থাকার সংকল্প ব্যক্ত করেন।

উক্ত সংবাদ সম্মেলন নবগঠিত কমিটির নাম প্রকাশ করেন প্রেসিডেন্ট গোলাম মোস্তফা খান মিরাজ।

নবগঠিত এই সংগঠনের প্রেসিডেন্ট হয়েছেন গোলাম মোস্তফা খান মিরাজ এবং সাধারণ সম্পাদক হয়েছেন বরিশাল অঞ্চলের গেরিলা ফারুক হোসাইন।

সংগঠনের নির্বাহী কমিটির কর্মকর্তারা সবাই একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণকারী গেরিলা।

এই সংস্থার নির্বাহী কমিটির অন্যরা হলেন, ভাইস প্রেসিডেন্ট-শওকত আকবর রীচি, খোরশেদ আনোয়ার বাবলু, রুহুল আমিন ভুঁইয়া, মেজর (অব:) মঞ্জুর আহমেদ বীর প্রতিক, মেজর (অব:) এহসান, রেজাউল বারী, বিএম জাকির হোসেন হিরু, সরদার আলাউদ্দিন, সহ-সাধারণ সম্পাদক-সাইদুর রহমান, আবুল মনসুর খান, মকবুল হোসেন এবং মনির হোসেন, কোষাধ্যক্ষ-শহিদুল ইসলাম, সাংগঠনিক সম্পাদক-আবুল বাশার, দপ্তর সম্পাদক-কামরুল ইসলাম, প্রচার সম্পাদক-মঞ্জুর আহমেদ, সাংস্কৃতিক সম্পাদক-আব্দুস সাদিক, আপ্যায়ন সম্পাদক-মো. হাই মঞ্জু। নির্বাহী সদস্যরা হলেন- লাবলু আনসার, মোতাহার হোসেন, ইউসুফ চৌধুরী, আবু তাহের এবং আবুল বাশার চুন্নু।

উপদেষ্টা পরিষদে মনোনীতরা হলেন মুক্তিযোদ্ধা-বিজ্ঞানী নূরন্নবী, মুক্তিযোদ্ধা মনিরুল ইসলাম, মূলধারার রাজনীতিক মোর্শেদ আলম,সাংবাদিক নিনি ওয়াহেদ, সাপ্তাহিক বাঙালি সম্পাদক কৌশিক আহমেদ, বর্ণমালা সম্পাদক মাহফুজুর রহমান, কন্ঠযোদ্ধা রথীন্দ্রনাথ রায়, কন্ঠযোদ্ধা শহীদ হাসান, মুক্তিযোদ্ধা রাশেদ আহমেদ, মুক্তিযোদ্ধা মিজানুর রহমান চৌধুরী, মুক্তিযোদ্ধা মুন্সি বশির উদ্দিন, মুক্তিযোদ্ধা মফিজ আহমেদ,শহীদ পরিবারের সন্তান ডা. মাসুদুল হাসান এবং ফাহিম রেজা নূর, প্রকৌশলী আশরাফুল হক, ফার্মাসিস্ট জহিরুল ইসলাম, ফার্মাসিস্ট এম এ আওয়াল সিদ্দিকী, নূরে আজম বাবু, আলী আহসান কিবরিয়া অনু, মোল্লা মাসুদ, সুলতানউদ্দিন আহমেদ, প্রকৌশলী মোহাম্মদ হাসান, খসরুল আলম, অ্যাডভোকেট আবু হোসেন হেলেন, শাহীন শেখ ও ইলিয়ার রহমান প্রমুখ।

Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here