জানাজাষ্টাফ রিপোর্টার :: মা মারা গেছে, এ সংবাদ শোনার সঙ্গে সঙ্গে নিজের অজান্তেই সন্তান-স্বজনরা কেঁদে ওঠেন। এমন দৃশ্য খুবই সাধারণ। কিন্তু এর ব্যতিক্রম হয়ে যদি এমন হয়, মা মারা যাওয়ার পর তার লাশ দাফনে বাধা দিয়ে লাশ রাস্তায় ফেলে রাখে তারই সন্তানরা, তাহলে সে ঘটনা কতটা অমানবিক হয়?

এমনই এক ঘটনা ঘটেছে রাজশাহীর তানোর উপজেলায় বাধাইড় ইউনিয়নের বহরইল গ্রামে। যেখানে মায়ের মৃত্যুর পরে জমি ভাগাভাগি নিয়ে দুই ছেলে মায়ের লাশ দাফনে বাধা দিয়ে দীর্ঘ ৮ ঘন্টা রাস্তায় ফেলে রাখে।

অবশেষে পুলিশি হস্তক্ষেপে গ্রামবাসীর সহযোগিতায় সোমবার দুপুরে সাহাজাদি বেওয়া নামে ওই বৃদ্ধার লাশ দাফন সম্পন্ন করা হয়।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, তানোর উপজেলার বহরইল গ্রামের মৃত মানিক উদ্দীনের স্ত্রী সাহাজাদির নামে ১০ বিঘা জমি আছে। ওই জমি বড় ছেলে সামসুদ্দীন ও ছোট ছেলে কাউছার তাদের নিজ নামে নিতে মরিয়া হয়ে উঠে। ১৫ দিন আগে মাকে দুই ভাই মিলে মারপিট করে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেয়। বৃদ্ধা সাহাজাদি পাশের গ্রাম মুন্ডুমালায় এক আত্মীয়ের বাড়িতে আশ্রয় নেন। সেখানে স্থানীয় এক চিকিৎসকের কাছে চিকিৎসা নিচ্ছিলেন। এক পর্যায়ে রোববার রাতে তার মৃত্যু হয়।

মায়ের মৃত্যুর সংবাদ পেয়ে কান্নাকাটি তো দূরের কথা, বরং মনক্ষুন্ন হয় দুই ছেলের। শুধুমাত্র কাঁদতে কাঁদতে মাকে আনতে মুন্ডুমালা ছুটে যান বৃদ্ধার মেয়ে নূর বানু। সোমবার সকালে মেয়ে নুর বানুসহ গ্রামবাসী বৃদ্ধার লাশ মুন্ডুমালা থেকে গ্রামের বাড়ি বহরইলে দাফনের জন্য নিয়ে আসে।

এদিকে, জীবিত থাকতে শত চেষ্টা করেও জমি নিজেদের নামে লিখে নিতে না পাড়ার ক্ষোভে বড় ছেলে ও ছোট ছেলে এবং তাদের স্ত্রীরা বৃদ্ধার লাশ দাফনে বাধা দেয়। যতই সময় গড়ায় ততই জটিল হতে থাকে পরিস্থিতি। পরে গ্রামবাসী বিষয়টি পুলিশকে জানায়। খবর পেয়ে দুপুরে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে গ্রামবাসীর সহযোগিতায় লাশ দাফন করে। এর আগেই পুলিশ আসার খবর পেয়ে ওই দুই ভাই গ্রাম থেকে পালিয়ে যায়।

এ ব্যাপারে তানোর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আনোয়ার হোসেন  বলেন,‘মায়ের লাশ দাফনে দুই ছেলে বাধা দিয়েছে। পুলিশ গিয়ে গ্রামবাসীর সহযোগিতায় লাশ দাফন সম্পন্ন করে। এ ব্যাপারে থানায় কেউ লিখিত অভিযোগ দেয় নি।’

Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here