মাল্টা চাষে সফল অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তামুহাম্মদ রফিকুল ইসলাম মাসুম, মোরেলগঞ্জ প্রতিনিধি :: মাল্টা বাগান করে চমক সৃষ্টি করেছেন বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জ উপজেলার আমবাড়ীয়া গ্রামের অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তা হেমায়েত শিকদার।

উপজেলার বলইবুনিয়া ইউনিয়নের আমবাড়িয়া গ্রাম। এ গ্রামেরই বাসিন্দা সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত অরেন্ট অফিসার হেমায়েত শিকদার ২০০৬ সালে অবসর গ্রহন করে উপজেলা কৃষি অধিদপ্তরের পরামর্শ নিয়ে বানিজ্যিক ভিত্তিতে ফলের বাগান করতে উদ্যোগী হয়ে উঠেন। প্রথমে তিনি বাউকুল চাষে ব্যাপক সফলতা পান। প্রতি বছর তিনি বাউকুল বিক্রি করে ৩/৪ লাখ টাকা আয় করেন।

বিগত ২০১৫ সালে তিনি ওই বাগানে মাল্টা চাষ শুরু করে গত বছর থেকে তিনি মাল্টার ফল পাওয়া শুরু করেছেন। বর্তমানে তার ফলের বাগানের ছোট ছোট গাছে এখন মাল্টা ঝুলছে। হেমায়েত শিকদারের দাবি তিনিই এ উপজেলায় প্রথম মাল্টা চাষ শুরু করেন। ২০১৫ সালে তিনি ১ একর জমির ওপর গড়ে তুলেন তার মাল্টা বাগান। তিনি তার এ ফলদ বাগানে বারী-১ জাতের ২শ টি মাল্টা গাছ রোপন করেন।

একই বাগানে তিনি সাথী ফল হিসেবে লিচু,আমলকী, কমলা, থাই সরুপা, জাম্বুরা, কাগজী লেবু, কলা পেপেসহ বিভিন্ন ফলের চাষ করেন। মাল্টা চাষের ১ বছরের ব্যবধানে তার মাল্টা গাছে ফল ধরা শুরু করে। তার বাগানের প্রতিটি মাল্টা গাছে এখন ৬০/৭০ টি করে মাল্টা ঝুলছে। এ মাল্টা খেতেও বেশ মিষ্টি। বছরের ৮ মাস গাছে মাল্টা থাকবে এবং এই ৮ মাসে প্রতিটি গাছ থেকে ১৩ থেকে ১৫ কেজি মাল্টা পাওয়া যাবে। মাল্টা পাকার সাথে সাথে দুর-দুরান্ত থেকে ফল ব্যবসায়ীরা এসে বাগান থেকেই মাল্টা কিনে নিয়ে যায়। মাল্টা চাষী হেমায়েত শিকদার জানান, গত বছরে তিনি তার মাল্টা বাগান থেকে ৭০ থেকে ৮০ হাজার টাকার মাল্টা বিক্রি করেছেন।

এ ছাড়াও তিনি তার এ বাগান থেকে অন্যান্য ফল বিক্রি করে বছরে ৩ থেকে সাড়ে ৩ লাখ টাকা আয় করেন।

চাষী হেমায়েত শিকদার আরও জানান, অবসর জীবনে তার এ বাগানের আয় তার পরিবারের স্বভাবিক খরচ মেটানোর পাশাপাশি সন্তানদের উচ্চ শিক্ষা গ্রহনেও বেশ সহায়ক হিসেবে কাজ করেছে। তার সন্তানেরা সবাই আজ উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত। বড় মেয়ে ডা. রুমানা আফরোজ এম.বি.বিএস করার পর এফসিপিএস সম্পন্ন করেছে, ছেলে রিশাদ হাসান ম্যারিন ইঞ্জিনিয়র হিসেবে ভিয়েতনামে কর্মরত, ছোট ছেলে সফটওয়ার ইঞ্জিনিয়র হওয়ার পথে।

বলইবুনিয়া ইউনিয়ন উপসহকারী কৃষি অফিসার মিজানুর রহমান বলেন, অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তা হেমায়েত শিকদারকে উপজেলা কৃষি অফিসের মাধ্যমে মাল্টা চাষে উদ্বুদ্ধ করার পাশাপাশি উন্নত জাতের মাল্টা চারা সংগ্রহ করে দেয়ার সাথে সাথে তার বাগানের যথাযথভাবে তদারকিও করা হচ্ছে। সরজমিনে তার বাগানে গিয়ে দেখা যায়, মাল্টা গাছের পাশাপাশি নানা জাতের ফল ফলাদির গাছ সবুজের বুকে সবুজের হাতছানি এক অপরুপ দৃশ্য।

এ ব্যাপারে উপজেলা কৃষি অফিসার অনুপম রায় জানান, হেমায়েত শিকদারের এ মাল্টা চাষের সফলতায় এলাকার বেকার যুবকসহ অনেকেই মাল্টা চাষে উৎসাহিত হচ্ছে এবং কয়েজনে আগ্রহী হয়ে ইতোমধ্যে মাল্টা চাষ শুরু করেছে। ওই ইউনিয়ন চেয়ারম্যান মো. শাহাজাহান আলী তিনি নিজেও একটি মাল্টা বাগান করেছেন।

Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here