মোনাসিফ ফরাজী সজীব, মাদারীপুর প্রতিনিধি :: মাদারীপুরের পল্লীতে শ্বশুরবাড়ি বেড়াতে গিয়ে রানা মৃধা (২৫) নামের এক যুবকের রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় শ্বশুরবাড়ির লোকজন রানার মৃত্যু আত্মহত্যা জনিত কারনে হয়েছে বলে প্রচার করলেও রানাকে পরিকল্পিত ভাবে নির্যাতন চালিয়ে হত্যা করা হয়েছে বলে পারিবারের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়েছে।
তবে রানার মৃত্যু হত্যা নাকি আত্মহত্যা এ নিয়ে এলাকায় তুমুল বিতর্কের সৃষ্টি হচ্ছে। ঘটনাটি ঘটেছে আজ শনিবার ভোরে জেলার রাজৈর উপজেলার বাজিতপুর ইউনিয়নের সাতারিয়া গ্রামে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রগুলো জানায়, রাজৈর উপজেলার বাজিতপুর ইউুনিয়নের কোদালিয়া গ্রামের আক্কাস মৃর্ধার ছেলে রানা মৃর্ধার সাথে পাশ্ববর্তী সাতারিয়া গ্রামের জাহাঙ্গীর খোন্দকারের কলেজ পড়-য়া মেয়ে মাফুজা খন্দকার পিপাসার প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে।
এক পর্যায় উভয় পরিবারের সম্মতিতে বছর দু”য়েক আগে তাদের বিয়ে হয়। পারিবারিক ভাবে তাদের বিয়ে হলেও বিষয়টি পিপসার মা মেনে নিতে পারেনি। এ নিয়ে উভয় পরিবারের মধ্যে ঝড়গাঝাটি লেগেই থাকত।
সূত্র জানায়, বর্তমানে রানা-পিপাসা দম্পতির একবছর বয়সী একটি সন্তান রয়েছে। পিপাসা বর্তমানে অর্নাসে পড়ছে আর রানার কোন পড়াশুনা এমনকি আয় রোজগারও তেমন নেই। এ নিয়ে শশুড়বাড়ী বেড়াতে গেলেই প্রায় পারিবারিক কলহ লেগেই থাকতো।
শুক্রবার রাতে রানা শশুরবাড়ি বেড়াতে গেলে আবারো তাদের মধ্যে কলহ হয়।
আজ শনিবার সকালে শশুরবাড়ীর লোকজন ফোন দিয়ে জানায় রানা খুব অসুস্থ। পরে পরিবারের লোকজন ঐ বাড়িতে গিয়ে গলায় গামছা পেঁচানো অবস্থায় রানাকে ঘরের মধ্যে দেখতে পায়। পরে তড়িঘরি করে রানাকে রাজৈর হাসপাতালে নিয়ে আসলে কর্তব্যরত ডাক্তার তাকে মৃত্যু বলে ঘোষনা করেন। এদিকে রাতে কোন এক সময়ে রানা গলায় গামছা পেচিয়ে আত্মহত্যা করেছেবলে মেয়ের পরিবারের পক্ষ থেকে জানানো হয়।,
রানার বাবা জাহাঙ্গীর খোন্দকার বলেন, পারিবারিক কলহের জের ধরে আমার ছেলেকে তার শ্বশুরবাড়ির লোকজন রাতে প্রচন্ড মারধোর করে অমানুষিক অত্যাচার চালায়। এবং নির্যাতন শেষে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে গলায় গামছা পেঁচিয়ে রাখে।
রানার মামি সুমা বেগম বলেন, শশুরবাড়ির লোকজন রানাকে মেরে গলায় গামছা পেঁচিয়ে ঘরের মেঝে রেখে দেয়। সেখান তেকে আমরা উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে আসি।
এ ব্যাপারে বাজিতপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সিরাজুল ইসলাম হাওলাদার বলেন, সাতারিয়া গ্রামে একটি ছেলে মারা গেছে খবর পেয়ে সেখানে যাই। এ সময় উত্তেজিত জনতা ঘরবাড়ি ভাংচুরের চেষ্ঠা চালালে আমি তাদের নিবৃত করি। তবে রানাকে হত্যা করা হয়েছে নাকি সে আত্মহত্যা করেছে তা পুলিশ তদন্ত করলে আসল ঘটনা বেরিয়ে আসবে।
এ ব্যাপারে রাজৈর থানার ওসি (অপারেশন) ইমতিয়াজ আহম্মেদ জানায়, হাসপাতাল থেকে গলায় গামছা পেচানো অবস্থায় রানা নামক এক যুবকের মৃতদেহ উদ্ধার করে মাদারীপুর মর্গে প্রের করেছি। ময়না তদন্ত রিপোর্ট না পাওয়া পর্যন্ত মৃত্যুর কারন বলা যাচ্ছে না।
রাজৈরে বজ্রপাতে কৃষকের মৃত্যু
মাদারীপুরের রাজৈর উপজেলা সদরের পাঠানকান্দি এলাকায় আজ শনিবার ভোরে বজ্রপাতে রহমান হাওলাদার (৬০) নামের এক কৃষকের মৃত্যু হয়েছে।
জানাযায়, ভোরে ঘুম থেকে উঠে রহমান হাওলাদার বাড়ির পাশের জমিতে কাজ করছিল। এ সময় আকস্মিক বজ্রপাতে সে মারাত্মক আহত হয়। এতে তার সারা শরীর ঝলসে যায়। পরে স্থানীয় লোকজন মুমূর্ষ অবস’ায় উদ্ধার করে রাজৈর হাসপাতালে আনার পথে সে মারা যায়।
এদিকে বজ্রপাতে কৃষক রহমান হাওলাদারের মৃত্যু খবরে এলাকায় শোকের ছায়া নেমে আসে। ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে রাজৈর থানার ওসি (অপারেশন) ইমতিয়াজ আহমেদ জানান এ ব্যাপারের থানায় একটি সাধারন ডায়রী করা হয়েছে।