পৌর কাউন্সিলর আবুল খায়ের স্বপন।জহিরুল ইসলাম শিবলু, লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি :: মাদক আমাদের সমাজের একটি ভয়াবহ মরনব্যাধি, যা দিন দিন এই দেশের যুব সমাজকে ধ্বংস করে দিচ্ছে। মাদকের ভয়াল থাবা থেকে রক্ষা পাচ্ছেনা কেউ। এতে শুধু যুব সমাজইনা, স্কুল-কলেজের ছাত্র-ছাত্রীরাও আসক্ত হয়ে পড়ছে।

সম্প্রতি মাদক দ্রব্যের ব্যবহার বেড়েছে আশঙ্কাজনক হারে। লক্ষ্মীপুর পৌর শহরের ব্যাপকহারে ছড়িয়ে পড়েছে ইয়াবা, ফেনসিডিল, প্যাথেডিনসহ নানা নেশাজাতীয় দ্রব্য। মাদকের ভয়াবহ আগ্রাসনের কারণে সমাজ ও পরিবারে বিপর্যয় নেমে আসছে, বেড়েছে খুন, ধর্ষণ, ছিনতাইসহ নানা ধরনের অপরাধ। মাদক নিয়ন্ত্রণে আশানুরূপ পারিবারিক ও সামাজিক উদ্যোগের অভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে সবাই।

এরই মধ্যে লক্ষ্মীপুর পৌর শহরের বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে পড়েছে মাদক। পৌরসভার ৬নং ওয়ার্ড মাদকের আখড়া হিসেবে পরিচিত। তাই কাউন্সিলর নির্বাচিত হওয়ার পরে এই ওয়ার্ডকে মাদক মুক্ত করতে ব্যতিক্রমী উদ্যোগ নিয়েছেন স্থানীয় পৌর কাউন্সিলর আবুল খায়ের স্বপন।

মাদকাশক্ত ব্যক্তি ও ক্রয় বিক্রয়ের সাথে জড়িত যুবকদেরকে একত্রিত করে সচেতনতা মুলক প্রচার-প্রচারণা ও তাদের পরিবারকে পূর্ণবাসনের উদ্যোগ নিয়েছেন তিনি।

মাদকাশক্ত ব্যক্তি ও মাদক বিক্রেতারা যদি মাদক ক্রয়-বিক্রয় ছেড়ে দেয় তাদের পরিবার ও তাদের নিজেদের দায়িত্বভার গ্রহন করবেন লক্ষ্মীপুর পৌরসভার এই কাউন্সিলর।

সূত্র মতে, গত এক বছর যাবত লক্ষ্মীপুর পৌরসভার ৬নং ওয়ার্ডেল প্রায় ৩৮টি পরিবারকে মাদক ছেড়ে দেয়ায় পূর্ণবাসনের ব্যবস্থা করেন কাউন্সিলর আবুল খায়ের স্বপন। এ ছাড়া তাদেরকে নগদ অর্থ সহায়তা দিয়ে ৬ মাস ও এক বছরের জন্য তাবলীগ জামাতের ছিল্লাতে পাঠাচ্ছেন।

এতে অনেকেই মাদক ছেড়ে দিয়ে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে এসেছেন। স্থানীয় জন-প্রতিনিধির এ ধরনের উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন লক্ষ্মীপুরের সুশীল সমাজের নেতৃবৃন্দ।

স্থানীয়রা জানান, মাদকের কারণে ৬নং ওয়ার্ডে প্রতিদিন নানা ধরণের অপকর্ম ঘটতো। এতে আমরা আমাদের ছেলে-মেয়েদের কে নিয়ে দুঃশ্চিন্তায় থাকতাম। বর্তমানে ওয়ার্ড কাউন্সিলর মাদকের সাথে জড়িতদের মাদক ছেড়ে দেওয়ার পরে তাদের পরিবারের দায়িত্ব নেওয়ায় এলাকায় স্বাভাবিক অবস্থা ফিরে এসেছে।

কাউন্সিলর আবুল খায়ের স্বপন মাদক নির্মূলে উদ্যোগ গ্রহন করায় তার পাশে থেকে সহযোগিতা করছেন লক্ষ্মীপুর পৌরসভার মেয়র আলহাজ্ব মো. আবু তাহের।

এ বিষয়ে কাউন্সিলর আবুল খায়ের স্বপন বলেন, আমি দীর্ঘদিন থেকে ভাবছি কি ভাবে আমার এলাকা থেকে মাদক মুক্ত করা যায়। সে ভাবনা থেকে আমি এ ধরনের উদ্যোগ গ্রহন করি। বলতে গেলে এ কার্যক্রমে ব্যাপক সফলতা পেয়েছি। আমি ইতিমধ্যে ঘোষনা দিয়েছি মাদকের সাথে জড়িত কেউ গোপনে আমার কাছে এলে আমি তাকে আর্থিক সহায়তা দিয়ে তাকে ৬ মাসের জন্য তাবলীগ জামায়াতের ছিল্লায় পাঠাবো। এ সময় তার পরিবারকে নিজ দায়িত্বে চাউলের বস্তাসহ প্রয়োজনীয় দ্রব্য সামগ্রী বাড়িতে পৌছে দিব। এ ছাড়া ছিল্লা শেষে বাড়ীতে ফিরে এলে প্রয়োজনীয় সহায়তা দিয়ে পূর্ণবাসনের ব্যবস্থা করবো।

Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here