জি এম কামরুল হাসান :: পরিবর্তিত বিশ্ব পরিক্রমায় বিপনন পেশা দিন দিন জনপ্রিয় থেকে জনপ্রিয়তম হয়ে উঠছে। উন্নত দেশ গুলোর এই ঢেউ আমাদের দেশেও আছড়ে পড়ছে।

সেলস বা বিক্রয়, এটি একটি শিল্প। এই শিল্পের সাথে যে যত নিখুত ভাবে নিজেকে মানিয়ে নিতে পারে তার জন্য তত ভালো। বিপননের বিভিন্ন ধাপে ভিন্ন ভিন্ন পদ বা পদবির লোকবল বা কর্ম কর্তা কাজ করে থাকেন। বিশেষকরে সরা সরি সেলস বা বিপননের সাথে যারা সম্পৃক্ত তাদের পদ পদবি যাই হোক তারা সবাই নিজেকে সেলস ম্যান বা বিক্রয় শিল্পী পরিচয়ে পরিচিত হতে পছন্দ করেন।

তবে আজ আমরা সরাসরি সেলসের সাথে জড়িত বা প্রতক্ষ্য বিক্রয়ের সাথে জড়িত এমন বিক্রয় শিল্পীর সফলতার বিভিন্ন উপায় নিয়ে আলোচনা করবো। একথায় একজন ভালো সেলসম্যান বা বিক্রয় প্রতিনিধি হতে হলে কি কি গুন থাকা দরকার এবং কি কি জানতে হয় আসুন সে সম্পর্কে কিছুটা জানার চেস্টা করি:

১. একজন ভালো সেলসম্যান হতে হলে অবশ্যই পন্য সম্পর্কে (ফিজিক্যাল পন্য বা আইডোলজিক্যাল পন্য) ভালো ভাবে জানতেম হবে অর্থাৎ প্রোডাক্ট নলেজ গ্যাদার করতে হবে।
২. পন্যের মডেল বা টাইপ বা ধরণ এবং স্টক সম্পর্কে ভালো ভাবে জানতে হবে।
৩. ডিসিপ্লিন হতে হবে, পোশাক পরিচ্ছদ রুচিশীল ও মার্জত হতে হবে, সেইভ, সু ইত্যাদি বিষয়ে সদা সর্বদা সর্তক থাকতে হবে।
৪. পন্য সম্পর্কে অতিরন্জিত বা বড়িয়ে তথ্য ক্রেতার নিকট উপস্থাপন করা যাবে না।
৫. ক্রেতা বা ক্লাইন্টের সাথে সদা হাসিখুশি ও প্রান্জল ভাবে নিজেকে উপস্থাপন করতে হবে।
৬. ক্রেতাকে আগে বলতে দিতে হবে এবং নিজে পরে বলতে হবে। তিনি যা জানতে চাই তা ভালোভাবে অনুধাবন করে সঠিক ও সন্তষজনক উত্তর দিতে হবে।
৭. ক্রেতার আগ্রহকে বাড়াতে তার মতা মতকে সাময়িক প্রাধান্য দিয়ে তার মনে নিজের একটা অবস্থান করে নিতে হবে।
৮. পন্যের উপর যে সব ট্রেড বা বানিজ্যিক অফার থাকে সে-সম্পর্কে ক্রেতাকে ভালো ভাবে অবহিত করতে হবে।
৯. এই পেশায় পজেটিভ মনোভাব ও চেলেন্জ গ্রহনের মানসিকতা থাকতে হবে।
১০. একজন ভালো সেলস পারসন হতে অবশ্যই উপস্থিত বুদ্ধি সম্পন্ন হতে হবে।
১১. পেশাগত উন্নতি ও ভালো ফলাফলের জন্য নিজ প্রতিষ্ঠান, ক্রেতা ও স্থানীয় পরিবেশ সম্পর্কে ভালো ভাবে জানতে হবে।
১২. বিক্রয় পদ্ধতি বা সেলিং প্রোসেস সম্পর্কে ঙ্গান অর্জন করতে হবে।
১৩. উদ্বভূত পরিস্থিতি বা ক্রাইসিস মেনেজমেন্ট সম্পর্কে ভালো ভাবে অবহিত থাকতে হবে।
১৪. নিজ টার্গেইট সম্পর্কে পর্যালোচনা করার এবং বোঝার সক্ষমতা অর্জন করতে হবে।
১৪. প্রতিযোগির কার্যক্রম ও মার্কেট ইনফরমেশন ভালো ভাবে খোজ খবর রাখতে হবে এবং সুপারভাইজারকে অবহিত করতে হবে।
১৫. নিজ কাজের তথ্যাবলী যথাযথ ভাবে সঠিক নিয়মে রিপোর্টং করার বিষয়ে অভ্যস্থ হতে হবে।
১৬. টাইম মেনেজমেন্ট সম্পর্কে যত্নশীল হতে হবে।
১৭. নিজ কর্মএলাকা, পন্যের মার্কেট সাইজ, শেয়ার এবং ফরকাস্ট সম্পর্কে যত্নবান হতে হবে।
১৮. ক্রেতার উপস্থিতিতে মোবাইল ফোন, হেড ফোন ইত্যাদি ব্যাবহার থেকে বিরত থাকা এবং উচ্চ স্বরে কথা না বলা।
১৯. সর্তকতার সাথে চেইন অব কমান্ড মেনে চলা, ফ্লোর ক্রস না করা এবং সুপারভাইজারকে সঠিক ভাবে আমলে রাখা।
২০. ব্যাবস্থাপনা কর্তৃ পক্ষের মনোভাব বুঝে কাজ করা।
২১. প্রযুক্তিগত ঙ্গান সম্পর্কে ধারনা রাখা এবং মোবাইল,ইন্টারনেট, কম্পিউটার ইত্যাদি ব্যাবহার জানা।
২২. প্রতিশ্রতি বা কমিটমেন্ট দেওয়ার সময় বিবেচনা ও বাস্তবতার সাথে সামঞ্জস্য রেখে দিতে হবে। মিথ্যা প্রতিশ্রুতি আত্নঘাতি হয়ে থাকে।
২৩. নিজের মধ্যে ঘাপটি মেরে থাকা নেতিবাচক মনোভাব পরিহার করা এবং পজেটিভ চিন্তার মধ্যে থাকা।

সবকিছু নিয়ম মেনে সবসময় হবে এমন নয় তবে গাইড লাইন হিসেব একজন ভালো বা আর্দশ সেলসম্যান বা বিক্রয় প্রতিনিধি নিজ যোগ্যতা প্রমানে এই উপাদান বা বিষয় গুলো নিশ্চই কাজে আসবে বলে আমার বিশ্বাস।

 

 

লেখকঃ বিপননবিদ ও গবেষক।

Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here