ভারত ও বার্মা থেকে আমদানীর কারনে ‘পৃথিবীর সেরা হলুদ’ উৎপাদন স্থান খ্যাত খাগড়াছড়ি হলুদ বাজারে ব্যাপক ধস নেমেছে। শেয়ার বাজারের দর পতনের মত খাগড়াছড়ি হলুদ বাজারে দাম ২/৩ গুন দাম কমে যাওয়ায় প্রায় ১০ হাজার কৃষক ও ব্যবসায়ী ব্যাপক লোকসানের সম্মূখীন হচ্ছেন। ফলে খাগড়াছড়ির সম্ভাবনাময় এ হলুদ শিল্প পড়েছে হুমকির মুখে।

কৃষি বিভাগ জানায়, চলতি বছরে খাগড়াছড়ি জেলায় প্রায় সাড়ে ৫ হাজার হেক্টর জমিতে হলুদ চাষ হয়েছে। যা গত বছরের চেয়ে প্রায় ১ হাজার হেক্টর বেশি। হলুদ চাষি প্রায় ১০ হাজার পরিবার। এ বছর হলুদও হয়েছে বাম্পর ফলন। কিন্তু বাধ সেধেছে এলসিতে আসা ভারত ও বার্মার নিম্নমানের হলুদ।

কৃষকেরা জানান, গত কয়েক বছর ধরে বাজারে প্রতি মন হলুদ ১০/১২ হাজার টাকা করে বিক্রি হাওয়ায় কৃষককেরা হলুদ চাষের দিকে ঝুঁকে পড়ে। অনেকে ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে এবার হলুদ চাষ করেছে। কিন্তু এ বছর  বাজারে হলুদের প্রতি মন হঠাৎ ৩ থেকে ৪ হাজারে নেমে যাওয়ায় কৃষক ও ব্যবসায়ীরা আর্থিকভাবে ক্ষতির সম্মূখীন হচ্ছে।

হলুদ চাষি আনোয়ার হোসেন জানায়, ভারত ও বার্মার হলুদ অবাধে দেশে আমদানি করায় দেশীয় হলুদের দাম কমে গেছে। যার ফলে এখানকার হলুদ বাজারে চাহিদা কমে যাচ্ছে। এতে হলুদ চাষে যারা নিজেদের পাশাপাশি ব্যাংক ঋণ নিয়ে হলুদ চাষ করেছে তাদের ব্যাংক লোন শোধ করাতো দুরের কথা পুজি ফেরত নিয়ে শংকিত আছেন।  তাই সরকার যদি এলসির মাধ্যমে হলুদ আমদানি বন্ধ করে দেয় তাহলে এ হলুদ দেশের চাহিদা মিটিয়ে বিদেশে রপ্তানি করা সম্ভব হবে বলে জানায় এখানকার চাষিরা।

হলুদ ব্যবসায়ী স্বপন চন্দ্র দেবনাথ জানান, ভারত থেকে অবাধে হলুদ আমদানীর কারনে খাগড়াছড়িতে হলুদ বাজারে ধস নেমেছে। এ প্রক্রিয়া বন্ধ না হলে হলুদ শিল্প ধবংস হয়ে যাবে।  তিনি নিজেও ৩৫ লাখ টাকার হলুদ কিনে ২১ লাখ টাকার আর্থিক লোকসান দিয়েছেন বলে জানান।

খাগড়াছড়ি কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো: হাছিবুর রহমান জানান, খাগড়াছড়ি হলুদ বাজারে ব্যাপক ধস সম্পকে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে তিনি কৃষকদের হলুদ সংরক্ষনের পরামর্শ দেন।

খাগড়াছড়ি জেলাবাসী অবিলম্বে এলসি’র মাধ্যমে ভারত ও বার্মা থেকে হলুদ আমদানী বন্ধ করে দেশের হলুদ শিল্প রক্ষার দাবী জানিয়েছেন।

ইউনাইটেড নিউজ ২৪ ডট কম/ শাহরিয়ার ইউনুস/খাগড়াছড়ি

Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here