সরাইল : নানান চড়াই উৎড়ায় জল্পনা কল্পনার অবসান ঘটিয়ে অবশেষে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ (সরাইল- আশুগঞ্জ) আসনে আওয়ামীলীগের মনোনয়ন পেয়েছেন মিসেস শিউলী আজাদ। আওয়ামীলীগ নেতা ইকবাল আজাদ বিশ বছর চেষ্টা করেও যা করতে পারেননি।

তারঁ স্ত্রী শিউলী আজাদ মাত্র সাত মাসে তা করতে পেরেছেন। বাঘা বাঘা ও তুখোড় অনেক নেতাকে পেছনে ফেলে দলীয় মনোনয়ন পেয়ে তিনি সকলকে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন।

সরাইল আশুগঞ্জের সর্বত্রই এখন চলছে এ আলোচনা। কিছুটা চিনিত্মত হয়ে পড়েছে স্থানীয় জাতীয় পার্টি (এরশাদ)। গত বৃহস্পতিবার দলের এক সভায় এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।

দলীয় একাধিক সূত্র ও স্থানীয় আওয়ামীলীগ সমর্থিত লোকজন জানায়, সরাইল উপজেলা আওয়ামীলীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি এ কে এম ইকবাল আজাদের (প্রয়াত) সহ ধর্মিনী মিসেস শিউলী আজাদ।

ইকবাল আজাদ খুনের ছয় মাস পর তিনি দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশার ঘোষনা দিয়ে কাজ শুরু করেন। প্রয়াত স্বামীর ২২ বছরের রাজনৈতিক জীবনের নীতি ও আদর্শকে তিনি জনগনের সামনে তুলে ধরেন। দলীয় মনোনয়ন পাওয়ার প্রত্যাশায় ১৬ জন আবেদন করেছিলেন।

মনোনয়নের আবেদনকারীরা হলেন- ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩ আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য র আ ম উবায়দুল মোক্তাদির চৌধুরী, সরাইল থেকে শহীদ আওয়ামীলীগ নেতা এ কে এম ইকবাল আজাদের স্ত্রী মিসেস শিউলী আজাদ, উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি (কার্যক্রম স্থগিত কমিটির) আবদুল হালিম, সম্পাদক রফিক উদ্দিন ঠাকুর ও সাবেক অতিরিক্ত সচিব মোঃ ফরহাদ রহমান মাক্কি। আশুগঞ্জ থেকে মহিলা সংসদ সদস্য (সংরক্ষিত মহিলা আসন) জোবায়দা পারুল, বেসরকারি শিক্ষক কল্যাণ ট্রাষ্টের সদস্য সচিব অধ্যড়্গ মোঃ শাহজাহান আলম সাজু, কেনদ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক লীগের সহ সভাপতি মঈনউদ্দিন মঈন, ঢাকসুর সাবেক সম্পাদক কামরুজ্জামান আনছারী, ধানমন্ডি আওয়ামীলীগের সভাপতি কামাল আহাম্মেদ দুলাল, আশুগঞ্জ উপজেলা আ’লীগের সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা হাজী মোঃ সফি উলস্নাহ, উপজেলা চেয়ারম্যান মোঃ আনিছুর রহমান, মোঃ ফিরোজ মিয়া, এম ইছহাক ভ্থইয়া, আবদুল হান্নান রতন ও শাহ মফিজ মিয়া। জেলা সহ আশপাশের আসনের সকলের দৃষ্টি ছিল সরাইলের দিকে। কে পাচ্ছে এ আসনের মনোনয়ন ? জোটের অন্য প্রার্থীরাও কষছিলেন নানান হিসাব নিকাশ।

অবশেষে গত বৃহস্পতিবার দলের পার্লামেন্টারী বোর্ড ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসনের প্রার্থী হিসেবে মিসেস শিউলী আজাদের নাম ঘোষনা করেন। খবরটি সরাইলে পৌঁছা মাত্র ইকবাল আজাদ ভক্তদের মাঝে আনন্দের বন্যা বইতে থাকে। রাতেই লোকজন রাসত্মায় নেমে আসে। কোন রকমে রাতটি কাটায় আওয়ামীলীগের নেতা কর্মীরা।

গত শুক্রবার সকালে বাদ্যযন্ত্র নিয়ে রাজপথে নেমে পড়ে সরাইলের বিভিন্ন এলাকার নারী পুরুষ। তারা হেঁসে খেলে আনন্দ মিছিল নিয়ে সরাইলের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে। অলিগলি ও বাসা বাড়িতে চলে রং ছিটা ছিটির খেলা। সড়কে চলাচলকারী লোকজন ও দলীয় সমর্থকসহ সকলের মাঝে বিতরন করা হয় মিষ্টি।

প্রসঙ্গতঃ গত বছরের ২১ অক্টোবর নিজ দলের কিছু লোকের হামলায় খুন হন আওয়ামীলীগ নেতা ইকবাল আজাদ। ২২ অক্টোবর ইকবাল আজাদের ছোট ভাই প্রকৌশলী জাহাঙ্গীর আজাদ বাদী হয়ে উপজেলা আ’লীগের সভাপতি, সম্পাদক সহ ২২ জনের নাম উল্লেখ করে হত্যা মামলা দায়ের করেন। পুলিশ ২৯ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগ পত্র দাখিল করেন। স্বামীর নির্মম হত্যা কান্ডের ছয় মাস পর আওয়ামীলীগের মনোনয়ন প্রত্যাশার ঘোষনা দেন শিউলী আজাদ।

মোহাম্মদ মাসুদ/

Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here