মহানন্দ অধিকারী মিন্টু, পাইকগাছা (খুলনা) প্রতিনিধি ::

শীতের তীব্রতা বাড়ছে আর বাড়ছে বাড়তি শীতের পোষাকের। অন্যান্য পোষাকের সাথে বেড়েছে লেপ-তোষকেরও কদর। দেশের উত্তরাঞ্চলের ন্যায় ধীরে ধীরে দক্ষীণাঞ্চলেও শীতের তীব্রতা বাড়ছে। তাই খুলনার পাইকগাছায় লেপ-তোষকের কারিগররা এখন ব্যস্ত সময় পার করছেন।

ব্যবসায়ীরাও দোকান সাজিয়ে বিক্রি শুরু করেছেন শীতের গরম কাপড়। শীত মোকাবিলায় গ্রামের মানুষ আগেই লেপ-তোষক জোগাড় শুরু করেছেন। তাই শীতকে সামনে রেখে কারিগরদের এখন যেন বিশ্রাম নেওয়ার সময় নেই। উপজেলার বিভিন্ন হাট-
বাজারে লেপ-তোষকের ১০-১২টি দোকান আছে। পাইকগাছা পৌর বাজার, নতুন বাজার, বাণিজ্যিক শহর কপিলমুনি, বাঁকা বাজার, আগড়ঘাটা বাজার সহ বিভিন্ন বাজারে লেপ-তোষকের দোকান রয়েছে। এসকল দোকানে অর্ডারী লেপ-তোষকের পাশাপাশি তৈরী লেপ-তোষক সারি সারি সাজিয়ে রেখেছে। এসব দোকানগুলো ঘুরে দেখা গেছে এমন দৃশ্য। মালিক-শ্রমিক সবাই লেপ-তোষক তৈরি, সেলাইয়ের কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন। আকার ও তুলা ভেদে বিভিন্ন দামে লেপ-তোষক বিক্রি করা হচ্ছে।

এ বছর বিভিন্ন পণের মূল্য পাওয়ায় উপজেলায় একেকটি লেপ বিক্রি হচ্ছে ১৪০০ থেকে ১৬০০ টাকায়। তোষক বিক্রি হচ্ছে ৮ থেকে ৯শত টাকা। বছরের এ সময় ক্রেতাদের ভিড় বাড়ে। বছরের ৮ মাস অলস সময় পার করলেও শীতের চার মাস লেপ-তোষক কারিগরদের ব্যস্ততা বেড়ে যায়। কাক ডাকা ভোর থেকে গভীর রাত পর্যন্ত চলে লেপ-তোষক তৈরির কাজ। বাণিজ্যিক শহর কপিলমুনি বাজারে কয়েকজন ক্রেতা জানান, এ বছর দামটা একটু বেশি মনে হচ্ছে। একজন বলেন, কয়েক বছর আগে একটা লেপ তৈরি করেছিলাম। সেটা পুরাতন হয়ে গেছে। সে জন্য নতুন করে লেপ তৈরি করতে এসেছি। তবে দাম অনেক বেশি বলছে কারিগরা।

পাইকগাছা বেডিং হাউজ এন্ড ফোম কর্ণার এর মালিক শফিকুল ইসলাম জানান, আধুনিক যন্ত্রে উৎপাদিত কম্বল, মেট্রেস সহজে পাওয়া যাওয়ায় বর্তমানে লেপ-তোষকের চাহিদা কমে গেছে। লেপ-তোষক তৈরিতে খরচ বেড়ে গেছে। একটি লেপ-তোষক বিক্রি করে তাদের ২০০ থেকে ৩০০ টাকা লাভ হয়। লাভ কম হলেও কাজে ব্যস্ত থাকায় তারা এখন খুশি।

লেপ তোষক তৈরির কারিগর সুকরআলী বলেন, প্রতি বছরই শীতের সময় আমরা লেপ তোষক তৈরির কারিগররা ব্যস্ত সময় পার করি। তবে আমাদের মুজুরি সে ভাবে বাড়েনি। চলতি মৌসুমে জিনিসপত্রের দাম বাড়ায় স্বাভাবিক ভাবেই লেপ-তোষক তৈরিতে খরচ বেড়ে গেছে। কাপড় ও তুলার মান বুঝেই লেপ-তোষকের দাম নির্ধারণ করা হয়। ৪-৫ হাত লেপের দাম পড়ছে ১৪০০ থেকে ১৬০০ টাকা। আর তোষক তৈরিতে দাম পড়ছে ৮০০ থেকে ৯০০ টাকা। তবে প্রতিগজ কাপড়ে ১০ থেকে পনের টাকা দাম বেড়েছে। তুলায় বেড়েছে ২০ থেকে ২৫ টাকা। গার্মেন্টের সাদা ঝুট, ফোমের কাটা অংশ কিনতে হচ্ছে বেশি দাম দিয়ে। শীত এখন খুব বেশী না। তবে শীতের তীব্রতা বাড়লে লেপ-তোষকের চাহিদা বাড়তে পারে।

Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here